ইনস্টাগ্রামে কিশোর-কিশোরীদের জন্য নতুন বিধিনিষেধ

কিশোর-কিশোরীদের জন্য নিজেদের প্ল্যাটফর্ম আরও নিরাপদ করতে নতুন ব্যবস্থা চালু করছে ইনস্টাগ্রাম। এখন থেকে ১৮ বছরের কম বয়সী ব্যবহারকারীদের অ্যাকাউন্টে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিশেষ সুরক্ষা ব্যবস্থা চালু থাকবে। এর মাধ্যমে প্রাপ্তবয়স্ক ও ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়বস্তু তাদের নাগালের বাইরে রাখা হবে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমটির মূল প্রতিষ্ঠান মেটা জানিয়েছে, এই নতুন নিয়মের আওতায় কিশোর-কিশোরীরা প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য তৈরি পোস্ট, ভিডিও বা অনুসন্ধান ফলাফল দেখতে পাবে না। তবে অভিভাবকদের জন্য এই সেটিংস পরিবর্তনের সুযোগ রাখা হয়েছে। এই ব্যবস্থাটি এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে, যা কিশোর-কিশোরীদের একটি ‘পিজি-১৩’ সিনেমার মতো নিরাপদ অভিজ্ঞতা দেবে।

নতুন এই ব্যবস্থার মাধ্যমে ১৩ বছরের বেশি বয়সী সব ব্যবহারকারীর জন্য যৌন উত্তেজক বিষয়, গ্রাফিক ছবি এবং অ্যালকোহল বা তামাকের মতো প্রাপ্তবয়স্কদের বিষয়বস্তু স্বয়ংক্রিয়ভাবে ব্লক করা হবে। এর মূল লক্ষ্য হলো ইনস্টাগ্রাম ব্যবহারের অভিজ্ঞতাকে আরও বেশি বয়স-উপযোগী এবং কম ঝুঁকিপূর্ণ করে তোলা।

যেসব পরিবার আরও কঠোর ব্যবস্থা চায়, তাদের জন্য ইনস্টাগ্রাম একটি ‘লিমিটেড কনটেন্ট’ বা সীমিত বিষয়বস্তু দেখার সুযোগ চালু করছে। এই ব্যবস্থায় মন্তব্য করার সুবিধা পুরোপুরি বন্ধ থাকবে এবং আরও বেশি প্রাপ্তবয়স্ক বিষয়বস্তু ফিল্টার করা হবে। মেটা আরও জানিয়েছে, আগামী বছর থেকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন চ্যাটবটের সঙ্গে কথোপকথনের সীমাও এই ‘পিজি-১৩’ ব্যবস্থার মধ্যে আনা হবে।

এই সুরক্ষাব্যবস্থার আওতায় কিশোর-কিশোরীরা প্রাপ্তবয়স্ক বা অনুপযুক্ত বিষয়বস্তু পোস্ট করে এমন অ্যাকাউন্ট অনুসরণ করতে বা তাদের বার্তা পাঠাতে পারবে না। এমনকি ভুল বানানেও অ্যালকোহল, সহিংসতা বা বিপজ্জনক কাজের মতো বিষয় অনুসন্ধান করলে তার ফলাফল ব্লক করা হবে।

মেটা জানিয়েছে, বিশ্বজুড়ে হাজার হাজার অভিভাবককে প্রকৃত ইনস্টাগ্রাম পোস্ট পর্যালোচনা করতে বলা হয়েছিল। তাদের দেওয়া ৩০ লাখের বেশি রেটিং এই নতুন নির্দেশিকা তৈরিতে সহায়তা করেছে।

ইনস্টাগ্রামের ‘ফ্যামিলি সেন্টার’ সুবিধার মাধ্যমে অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের অ্যাকাউন্টের ওপর সরাসরি নজরদারি করতে পারবেন। তারা দৈনিক ব্যবহারের সময়সীমা নির্ধারণ, কারা তাদের অনুসরণ করছে তা দেখাসহ বিভিন্ন গোপনীয়তা ও সুরক্ষা সেটিংস পর্যালোচনা করার সুযোগ পাবেন।

ইনস্টাগ্রামের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া ও কানাডায় ইতিমধ্যে এই নতুন ব্যবস্থা চালু করা শুরু হয়েছে। চলতি বছরের শেষ নাগাদ এই দেশগুলোতে প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হবে এবং এরপর বিশ্বব্যাপী এর সম্প্রসারণ করা হবে।