কমিশনের সুপারিশে এনসিপির স্বস্তি, জুলাই সনদে আইনি ভিত্তির দাবি জোরালো

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসিরউদ্দিন পাটোয়ারী বলেছেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দেওয়া সুপারিশ সরকারের কাছে পৌঁছানো সম্ভব হয়েছে এনসিপির অবিচল অবস্থানের ফলেই।

বুধবার (২৯ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর বাংলামোটরে দলীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি নিশ্চিত করতে এনসিপির দৃঢ় অবস্থান ও আপসহীন অবস্থানই এই সুপারিশ সম্ভব করেছে। একই সঙ্গে আমরা কমিশনের আন্তরিক প্রচেষ্টাকেও স্বীকৃতি দিচ্ছি।

তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, সরকার যেন বিলম্ব না করে অবিলম্বে কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের পদক্ষেপ নেয়।
নাসিরউদ্দিন বলেন, এনসিপি মনে করে সরকারকে কমিশনের প্রস্তাবিত প্রথম খসড়া বা ‘প্রস্তাব ১’ এর ভিত্তিতে এগোতে হবে। কারণ, এই প্রস্তাবের ৮(ই) ধারায় স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, যদি সাংবিধানিক সংস্কার পরিষদ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তাদের কাজ শেষ করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে সংশোধন বিলটি গৃহীত বলে গণ্য হবে এবং আইনে পরিণত হবে।

তার মতে, এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ধারা, যা গণভোটে গৃহীত জুলাই সনদের আদেশকে আইনি বাধ্যবাধকতার মধ্যে আনার পথ তৈরি করবে, যেমনটি বহু দেশে প্রচলিত।

তিনি আরও বলেন, প্রস্তাব ২-এ এমন কোনো সুস্পষ্ট ধারা নেই, যা পুরো সংস্কার প্রক্রিয়াকে দুর্বল করে দিতে পারে।

তবে তিনি প্রস্তাব ১-এর ভাষাগত কিছু অস্পষ্টতার কথাও উল্লেখ করেন। যেমন ৮(ক) ধারায় বলা উচিত-‘পরবর্তী নির্বাচিত সংসদ সাংবিধানিক সংস্কারের ওপর কাঠামোগত কর্তৃত্ব প্রয়োগ করবে’, সেখানে ‘মে এক্সারসাইজ’ না লিখে ‘শ্যাল এক্সারসাইজ’ হওয়া প্রয়োজন। একইভাবে ৮(ঘ) ধারায় ‘উইল কনসিডার, শব্দগুচ্ছ অনিশ্চয়তা তৈরি করে, এটিও পরিষ্কার করা দরকার।

সংবাদ সম্মেলনে এনসিপি সরকারের কাছে তিনটি দাবি তুলে ধরে-

• জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি নিশ্চিত করতে কমিশনের প্রস্তাব ১ গ্রহণ করা;
• সাংবিধানিক সংস্কার বিল প্রণয়ন ও প্রকাশের উদ্যোগ নেওয়া;
• এবং সরকার যদি জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আইনি ভিত্তি সংবলিত খসড়া আদেশ গ্রহণ করে, তাহলে এটি সনদ স্বাক্ষরের দিকে বাস্তব অগ্রগতি আনবে।

নাসিরউদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, এনসিপি বিশ্বাস করে, জুলাই সনদ কেবল একটি রাজনৈতিক ঘোষণা নয়, এটি বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক রূপান্তরের আইনি নীলনকশা। সরকারকে এখন দায়িত্ব নিতে হবে এই নীলনকশাকে কার্যকর বাস্তবতায় রূপ দেওয়ার।