উত্তর কোরিয়ার ওপর নজরদারি বাড়াতে পঞ্চম গোয়েন্দা কৃত্রিম উপগ্রহ পাঠাল দক্ষিণ কোরিয়া

স্পেসএক্স সফলভাবে দক্ষিণ কোরিয়ার পঞ্চম সামরিক গোয়েন্দা কৃত্রিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার একটি মহাকাশ ঘাঁটি থেকে রবিবার এই স্যাটেলাইটটি উৎক্ষেপণ করা হয়, যার মূল লক্ষ্য উত্তর কোরিয়ার ওপর নজরদারি বাড়ানো।

সিউলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ফ্যালকন ৯ রকেটটি কেপ ক্যানাভেরাল স্পেস ফোর্স স্টেশন থেকে রবিবার সকাল ১টা ৯ মিনিটে নির্ধারিত সময়ে উৎক্ষেপণ করা হয়। উৎক্ষেপণের প্রায় ১৪ মিনিট পর গোয়েন্দা কৃত্রিম উপগ্রহটিকে সফলভাবে কক্ষপথে স্থাপন করা হয়। মার্কিন ধনকুবের ইলন মাস্কের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্স সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে জানায়, এই মিশনে কোরিয়া এডিডি, এক্সোলাঞ্চ, ফেরগানি, টুমরো কোম্পানিজ, স্টারক্লাউড এবং ভাস্টের জন্য মোট ১৮টি পেলোড ছিল।

এই সিন্থেটিক অ্যাপারচার রাডার (এসএআর) প্রযুক্তিসম্পন্ন কৃত্রিম উপগ্রহটি চলতি বছরের শেষ নাগাদ পাঁচটি গোয়েন্দা কৃত্রিম উপগ্রহ স্থাপনের পরিকল্পনার পঞ্চম এবং চূড়ান্ত ধাপ। সিউলভিত্তিক ইয়োনহাপ নিউজের মতে, এই পদক্ষেপের লক্ষ্য উত্তর কোরিয়ার ওপর নজরদারি জোরদার করা এবং মার্কিন কৃত্রিম উপগ্রহের ছবির ওপর নির্ভরতা কমানো।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আগে জানিয়েছিল যে, মোট পাঁচটি গোয়েন্দা কৃত্রিম উপগ্রহ একসঙ্গে পরিচালিত হলে উত্তর কোরিয়ার উস্কানির লক্ষণগুলো আরও দ্রুত এবং নির্ভুলভাবে শনাক্ত করা সম্ভব হবে। মন্ত্রণালয় পরে নিশ্চিত করেছে, উৎক্ষেপণের প্রায় এক ঘণ্টা পর কৃত্রিম উপগ্রহটি সফলভাবে একটি গ্রাউন্ড স্টেশনের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করেছে, যা ইঙ্গিত দেয় এটি স্বাভাবিকভাবে কাজ করছে। প্রথম তিনটি কৃত্রিম উপগ্রহ পুরোপুরি চালু থাকলেও চতুর্থটি বর্তমানে পর্যবেক্ষণে রয়েছে।

পাঁচটি কৃত্রিম উপগ্রহ কক্ষপথে স্থাপিত হলে সিউল প্রতি দুই ঘণ্টায় উত্তর কোরিয়ার ওপর নজর রাখতে সক্ষম হবে বলে আশা করা হচ্ছে। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে দক্ষিণ কোরিয়া তার প্রথম গোয়েন্দা কৃত্রিম উপগ্রহটি উৎক্ষেপণ করে, যাতে উচ্চ-রেজোলিউশনের ছবির জন্য ইলেক্ট্রো-অপটিক্যাল এবং ইনফ্রারেড সেন্সর ছিল। এরপর থেকে দেশটি আরও তিনটি কৃত্রিম উপগ্রহ পাঠিয়েছে, যার প্রতিটিতে এসএআর সেন্সর রয়েছে, যা সব ধরনের আবহাওয়ায় তথ্য সংগ্রহ করতে সক্ষম।

অন্যদিকে, উত্তর কোরিয়াও মহাকাশভিত্তিক নজরদারি সক্ষমতা বাড়ানোর চেষ্টা করছে। দেশটি ২০২৩ সালের নভেম্বরে তাদের প্রথম সামরিক গোয়েন্দা কৃত্রিম উপগ্রহ ‘মালিয়ং-১’ সফলভাবে উৎক্ষেপণ করে এবং ২০২৪ সালে আরও তিনটি কৃত্রিম উপগ্রহ পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দেয়। তবে, ২০২৪ সালের মে মাসে একটি রকেট উৎক্ষেপণের পরপরই বিস্ফোরিত হওয়ায় তাদের সর্বশেষ প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়।