এক মন্দিরেই ৬৮ লক্ষ কেজি ভেজাল ঘি বিক্রি করেছে ভোলেবাবা ডেইরি

ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা (সিবিআই) সম্প্রতি ভয়াবহ ভেজাল কাণ্ড ফাঁস করেছে। তারা দাবি করছে, ভারতের একটি প্রসিদ্ধ মন্দিরে গত পাঁচ বছরে বিপুল পরিমাণ ঘি সরবরাহ করেছে ভোলেবাবা ডেইরি নামে একটি প্রতিষ্ঠান। অথচ এ ঘি তৈরির যে মূল উপাদান দুধ, সেটা ছাড়াই নাকি তারা এ ঘি বানিয়ে সরবরাহ করেছে। আর এর মাধ্যমে তারা হাতিয়ে নিয়েছে ২৫০ কোটি রুপি।

ভারতের গণমাধ্যমগুলোর খবরে বলা হয়, অন্ধ্রপ্রদেশের বিখ্যাত তিরুপতি মন্দিরে প্রসাদী লাড্ডু তৈরিতে দৈনিক দেড় হাজার কেজি ঘি দরকার হয়। ২০১৯ সাল থেকে তিরুপতি তিরুমালা দেবস্থানম ট্রাস্টকে এ বিপুল পরিমাণ ঘি সরবরাহ করে উত্তরাখণ্ডের ভোলেবাবা ডেইরি নামের একটি প্রতিষ্ঠান।

এ ঘি-তে গোমাংস, মাছ ও শূকরের চর্বির নমুনা পাওয়া গেছে, এমন বিতর্ক ওঠার পর বিষয়টি নিয়ে তদন্তে নামে সিবিআই। তদন্তে শেষে তারা জানায়, পাঁচ বছর ধরে দৈনিক দেড় হাজার কেজি ঘি সরবরাহ করলেও তারা কখনো এক ফোঁটা দুধও কেনেনি। তার বদলে পাম তেল, মনোডাইগ্লিসারাইড, অ্যাসিটিক অ্যাসিড এস্টারসহ নানা রাসায়নিক মিশিয়ে কৃত্রিম ঘি তৈরি করত। এ ঘি-ই তিরুপতি মন্দিরে পাঠানো হতো, যা দিয়ে প্রতিদিন প্রায় তিন লাখ লাড্ডু প্রস্তুত করা হয়।

স্থানীয় দুধ ব্যবসায়ীদের জিজ্ঞাসাবাদে নিশ্চিত হওয়া গেছে, ভোলেবাবা ডেইরি কখনোই দুধ কিনেনি। তারা কেবল ভুয়া রসিদ দেখিয়ে ব্যবসা চালাতো।

তদন্তে আরও জানা গেছে, গত পাঁচ বছরে ভোলেবাবা ডেইরি তিরুপতি ট্রাস্টকে প্রায় ৬৮ লক্ষ কেজি ঘি সরবরাহ করেছে, যার আনুমানিক বাজারমূল্য ২৫০ কোটি রুপি। সিবিআই এরই মধ্যে ডেইরি প্রতিষ্ঠানটি দুই প্রধান- বিপিন জৈন ও পোমিল জৈনকে গ্রেপ্তার করেছে। এছাড়া ওই ডেইরিকে বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ সরবরাহকারী দিল্লির ব্যবসায়ী অজয়কুমার সুগন্ধকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

সিবিআই জানিয়েছে, একই ধরনের কেলেঙ্কারি থাকায় তামিলনাড়ুর বৈষ্ণবী ডেইরির অপূর্ব বিনয় কান্ত ও তেলেঙ্গানার এআর ডেইরির রাজু রাজাশেখরনকেও গ্রেপ্তার করেছে তারা।

আনন্দবাজার পত্রিকা অবলম্বনে