মিরপুরে বাসে আগুন: জনতার ধাওয়ায় নদীতে ডুবে কিশোরের মৃত্যু, আটক ১

বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানী ঢাকা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার একাধিক স্থানে অগ্নিসংযোগ ও বিস্ফোরণের মতো নাশকতামূলক ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় মিরপুরে এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে এবং আরেকজনকে আটক করা হয়েছে।

রাজধানীর মিরপুর বেড়িবাঁধ এলাকায় রাত সোয়া দশটার দিকে পার্ক করে রাখা ‘কিরণমালা পরিবহন’ এর একটি ফাঁকা বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। শাহ আলী থানাধীন উত্তর নবাবেরবাগ এলাকায় কয়েকজন যুবক প্লাস্টিকের বোতলে কেরোসিন ছিটিয়ে বাসটিতে আগুন দেয় এবং মোবাইলে তার ভিডিও ধারণ করতে থাকে। বিষয়টি স্থানীয়দের নজরে এলে তারা ধাওয়া করে।

জনতার তাড়া খেয়ে দুষ্কৃতকারীদের মধ্যে সাইয়াফ (১৮) নামে এক কিশোর পাশের তুরাগ নদীতে ঝাঁপ দেয়। সাঁতার না জানায় সে পানিতে ডুবে মারা যায়। পরে স্থানীয়রা তার মরদেহ উদ্ধার করে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এই ঘটনায় রুদ্র মোহাম্মদ নাহিয়ান আমির সানি (১৮) নামে আরেকজনকে জনতা হাতেনাতে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। তাদের আরেক সহযোগী পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান জানান, পলাতক আসামিকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে এবং এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। ফায়ার সার্ভিস জানায়, খবর পেয়ে তাদের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

অন্যদিকে, একই রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার ভাতশালা এলাকায় রেললাইনে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে। রাত সাড়ে ১০টার দিকে আখাউড়া-চিনাইর সড়কের পাশে দুর্বৃত্তরা রেললাইনে অগ্নিসংযোগ করে। এর আগের রাতেও একই স্থানের কাছাকাছি জায়গায় আগুন দেওয়া হয়েছিল। এই ঘটনার জেরে চট্টগ্রামগামী মহানগর এক্সপ্রেস ট্রেনটি প্রায় ১৫ মিনিট ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্টেশনে আটকা পড়ে। আখাউড়া রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম শফিকুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিভিয়ে ফেলে এবং পরে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।

এছাড়া রাত আনুমানিক সোয়া দশটার দিকে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সংলগ্ন দুটি স্থানে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। বিমানবন্দর গোলচত্বরের আউটগোয়িং গেটের সামনে একটি এবং এক নম্বর সেক্টরের জিনজিয়ান রেস্টুরেন্টের সামনে আরেকটি ককটেল বিস্ফোরিত হয়। বিমানবন্দর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শেখ রফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, এ ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। পুলিশের ধারণা, ফ্লাইওভার থেকে ককটেলগুলো নিক্ষেপ করা হতে পারে, ফলে কাউকে শনাক্ত করা কঠিন হচ্ছে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহ করে তদন্ত শুরু করেছে। এর আগে সন্ধ্যায় কল্যাণপুর বাস কাউন্টারের সামনেও দুটি ককটেল বিস্ফোরিত হয়েছিল বলে জানা যায়।