গিনি-বিসাউয়ে নির্বাচন প্রক্রিয়া স্থগিত, সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে দেশ

পশ্চিম আফ্রিকার দেশ গিনি-বিসাউতে সেনাবাহিনী দেশটির নির্বাচন প্রক্রিয়া স্থগিত করে ‘পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত’ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। বুধবার সশস্ত্র বাহিনীর সদর দপ্তরে একদল সেনা কর্মকর্তা এই অসাংবিধানিক ক্ষমতা দখলের ঘোষণা দেন।

নিজেদের ‘শৃঙ্খলা পুনরুদ্ধারে উচ্চ সামরিক কমান্ড’ হিসেবে পরিচয় দিয়ে ওই সেনা কর্মকর্তারা জানান, তারা দেশের চলমান নির্বাচন প্রক্রিয়া স্থগিত করছেন। একই সঙ্গে রাষ্ট্রপতি ও আইনসভা নির্বাচনের ফলাফল বাতিল এবং গণমাধ্যমের কার্যক্রম স্থগিত করার ঘোষণাও দেওয়া হয়েছে। এ সময় দেশবাসীকে শান্ত থাকার আহ্বান জানানো হয়।

বুধবার গিনি-বিসাউয়ের রাষ্ট্রপতি ভবনের কাছে গোলাগুলির খবরের পরই সামরিক হস্তক্ষেপের এই ঘটনা ঘটল। এর আগে সপ্তাহান্তে অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর সোমবার স্বতন্ত্র প্রার্থী ফার্নান্দো দিয়াস এবং বর্তমান প্রেসিডেন্ট উমারো সিসোকো এমবালোর শিবির উভয়ই নিজেদের বিজয়ী বলে দাবি করেছিল।

ফরাসি সংবাদমাধ্যম আরএফআই জানিয়েছে, ফার্নান্দো দিয়াস এবং তাকে সমর্থনকারী সাবেক প্রধানমন্ত্রী ডোমিঙ্গোস সিমোস পেরেইরাকে গ্রেপ্তার করে বিমানবাহিনীর ঘাঁটিতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পেরেইরাকে এ বছর নির্বাচনে অংশগ্রহণের অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছিল, কারণ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল তিনি দেরিতে কাগজপত্র জমা দিয়েছিলেন।

ফরাসি সংবাদমাধ্যম জ্যুন আফ্রিককে প্রেসিডেন্ট এমবালো জানান, বুধবার দুপুরে রাষ্ট্রপতি ভবনের কার্যালয় থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। একই সময়ে সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান জেনারেল বিয়াগুয়ে না এনটান, তার সহকারী জেনারেল মামাদু তোরে এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বোচে কান্দেকেও আটক করা হয়। তিনি এই ঘটনাকে স্থল বাহিনীর কমান্ডার দ্বারা পরিচালিত একটি ‘অভ্যুত্থান’ বলে অভিহিত করেন এবং জানান, তার সঙ্গে কোনো সহিংস আচরণ করা হয়নি।

এর আগে বুধবার, দিয়াস সামরিক বাহিনীকে নিরপেক্ষ থাকার এবং নির্বাচনী প্রক্রিয়া থেকে দূরে থাকার আহ্বান জানিয়েছিলেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা কোনো কিছুর জন্য অনুরোধ করছি না।’ বৃহস্পতিবার নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক ফল ঘোষণার জন্য অপেক্ষা করবেন বলেও তিনি জানান।

নির্বাচনী কমিশন বৃহস্পতিবার নির্বাচনের চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল এবং কোনো প্রার্থী বা দলকে ফল ঘোষণা করা থেকে বিরত থাকতে সতর্ক করেছিল।