তারেক রহমান: দুর্নীতি ও আইনশৃঙ্খলার লাগাম একমাত্র বিএনপিই টেনে ধরতে পারে

দেশজুড়ে চলমান পরিস্থিতির লাগাম টানতে এবং দুর্নীতি রোধে বিএনপির সক্ষমতার কথা তুলে ধরেছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। রবিবার রাজধানীর খামারবাড়ি কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ বিষয়ে কথা বলেন। ‘বিএনপির দেশ গড়ার পরিকল্পনা’ শীর্ষক সাত দিনব্যাপী কর্মসূচির এটি ছিল সমাপনী অধিবেশন।

অতীত অভিজ্ঞতার আলোকে তারেক রহমান দাবি করেন, ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত জোট সরকারের সময় তারা দুর্নীতির বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘আমরা অতীতে প্রমাণ করেছি এবং ভবিষ্যতেও ইনশাআল্লাহ দুর্নীতি রোধ করতে পারব।’ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির প্রসঙ্গে তিনি জানান, বিএনপি সরকারের সময় বিশেষ বাহিনী গঠন করে দেশের পরিস্থিতি উন্নত করা হয়েছিল, কিন্তু পরবর্তী সময়ে স্বৈরাচারী সরকার নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থে সেই বাহিনীকে অপব্যবহার করেছে। তাই আইনশৃঙ্খলা ও দুর্নীতির লাগাম একমাত্র বিএনপিই টেনে ধরতে পারে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সভায় তারেক রহমান দেশের ক্রান্তিলগ্নে বিএনপির ইতিবাচক ভূমিকার কথা স্মরণ করেন। তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতা-পরবর্তী সময় কিংবা নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের পর—যখনই বিএনপির ওপর দেশ পরিচালনার ভার অর্পিত হয়েছে, তখনই অবস্থার ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটেছে।’ বিগত ১৬ বছরে স্বৈরাচারী শাসনব্যবস্থা দেশের প্রতিটি খাতকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে এবং তা জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে অনুভূত হচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

আগামী দুই মাসের মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন বিএনপির এই শীর্ষ নেতা। তিনি বলেন, ‘জনগণই আমাদের রাজনৈতিক শক্তির মূল উৎস। দেশ ও মানুষের কল্যাণে জনগণ যে রায় দেবে, আমরা তা মাথা পেতে নেব।’ বিগত সরকারের কঠোর দমন-পীড়ন ও বাকস্বাধীনতা হরণের মধ্যেও আড়াই-তিন বছর আগে বিএনপি ৩১ দফার সংস্কার প্রস্তাব জাতির সামনে তুলে ধরেছিল বলে তিনি স্মরণ করিয়ে দেন।

বর্তমান পরিস্থিতি ও ভবিষ্যৎ নিয়ে সতর্কবার্তা উচ্চারণ করে তারেক রহমান জানান, আগামী দিনগুলো বেশ কঠিন হতে পারে এবং নানামুখী ষড়যন্ত্র চলছে। এসব ষড়যন্ত্র রুখে দিতে জনগণের ঐক্যের ওপর জোর দেন তিনি। তাঁর মতে, ‘গণতন্ত্র, গণতন্ত্র এবং গণতন্ত্রই হলো ষড়যন্ত্র মোকাবিলার একমাত্র উপায়। জনগণের মতামতের প্রতিফলন ঘটাতে পারলেই সব চক্রান্ত নস্যাৎ করা সম্ভব।’

বক্তব্যে তিনি ১৯’৭১ সালের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘কারা তখন লাখ লাখ মানুষকে হত্যা করেছে এবং মা-বোনদের সম্মানহানি করেছে, তা জনগণ ’৭১ সালেই দেখেছে। তাদের নতুন করে চেনার কিছু নেই।’ সৃষ্টিকর্তার ওপর পূর্ণ আস্থা রেখে তিনি জানান, মানুষের জন্য সাধ্যের মধ্যে থাকা বিষয়গুলোই তারা প্রতিজ্ঞা করবেন, নিজেদের নিয়ন্ত্রণের বাইরের কোনো বিষয়ে তারা প্রতিশ্রুতি দেবেন না। কিছু মানুষ বর্তমানে বিভিন্ন জিনিসের ‘টিকিট বিক্রি’ করছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।