নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা আসিফের, পদত্যাগ নিয়ে অপেক্ষা

আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়টি দ্ব্যর্থহীন ভাষায় নিশ্চিত করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। তবে নিজের পদত্যাগের বিষয়ে এখনই সরাসরি কিছু জানাতে রাজি হননি তিনি। তার ভাষ্যমতে, পদত্যাগের বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত বা ঘোষণার এখতিয়ার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের।

বুধবার বিকেলে সচিবালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। নির্বাচনের মাঠে থাকার ঘোষণা দিলেও বর্তমানে কোনো নির্দিষ্ট দল বা আসন থেকে লড়বেন কি না, তা এখনো খোলাসা করেননি এই উপদেষ্টা।

পদত্যাগ প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে আসিফ মাহমুদ জানান, এ বিষয়ে কথা বলার অনুমতি তার নেই। বিষয়টি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় বা প্রেস উইং যথাসময়ে বিস্তারিত জানাবে। তিনি দাবি করেন, পদত্যাগের বিষয়টি নিয়ে তিনি কোনো ধোঁয়াশা তৈরি করছেন না, বরং এ নিয়ে এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।

নির্বাচনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে বেশ কিছু দাপ্তরিক কাজ গুছিয়ে এনেছেন বলেও জানান আসিফ। সংবাদ সম্মেলনে তিনি নিশ্চিত করেন যে, আজই তিনি তার সম্পদের হিসাব জমা দিয়েছেন। পাশাপাশি নিজের কূটনৈতিক পাসপোর্টও বাতিল করেছেন এই ছাত্রনেতা।

আসন্ন নির্বাচনে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করতে গিয়ে আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘আমি নির্বাচন করব। এটা স্পষ্টভাবেই বলা যায়। কিন্তু কোথা থেকে করব, কোন দল থেকে করব, সেটা পরবর্তী বিশ্লেষণ।’ এর আগে গত ৯ নভেম্বর তিনি ভোটার এলাকা পরিবর্তন করে ধানমন্ডিতে ভোটার হওয়ার আবেদন করেছিলেন, যা তার ঢাকা থেকে নির্বাচন করার ইঙ্গিত বহন করে।

রাজনৈতিক অঙ্গনে গুঞ্জন রয়েছে যে, তিনি ঢাকা-১০ আসন (ধানমন্ডি, কলাবাগান, নিউমার্কেট ও হাজারীবাগ) থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন। এমনকি বিএনপির সঙ্গে সমঝোতা বা দলটির হয়ে তার ভোটের লড়াইয়ে নামার খবরও চাউর হয়েছিল। তবে গত ৪ ডিসেম্বর বিএনপি দ্বিতীয় দফায় যে ৩৬টি আসনে দলীয় প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে, সেখানে ঢাকা-১০ আসনের প্রার্থীও রয়েছে। ফলে আসিফ মাহমুদ স্বতন্ত্র নাকি দলীয় প্রতীকে লড়বেন, তার রাজনৈতিক গন্তব্য কী হবে—তা এখনো অস্পষ্ট।

উল্লেখ্য, গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ছাত্র প্রতিনিধিদের মধ্যে নাহিদ ইসলাম ও মাহফুজ আলমের পাশাপাশি আসিফ মাহমুদও এই সরকারে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন। শুরুতে যুব ও ক্রীড়া এবং পরে শ্রম মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেলেও বর্তমানে তিনি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বেও রয়েছেন। অন্যদিকে নাহিদ ইসলাম সম্প্রতি উপদেষ্টা পরিষদ থেকে পদত্যাগ করে নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়কের দায়িত্ব নিয়েছেন।