নির্ধারিত সময়েই নির্বাচন, প্রচারণায় থাকার ঘোষণা তারেক রহমানের

আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের প্রচারণায় তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে থাকার ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি স্পষ্ট জানিয়েছেন, দেশের গ্রাম-গঞ্জ থেকে শুরু করে অলিগলি ও রাজপথের মিছিলে তিনি সম্পৃক্ত থাকবেন। একই সঙ্গে সব ধরনের ভয়ভীতি উপেক্ষা করে নির্ধারিত সময়েই নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে নিজের দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে এক আলোচনা সভার আয়োজন করে বিএনপি। দলের এই শীর্ষ নেতা সেখানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। সভার শুরুতেই এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দ্রুত আরোগ্য কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।

নির্বাচনের সময়সীমা নিয়ে নেতাকর্মীদের শঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়ে তারেক রহমান বলেন, যারা দেশের গণতন্ত্রকামী ও স্বাধীনতাপ্রেমী মানুষকে ভয় দেখাতে চায়, তারা শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হবে। মানুষের জীবন-মৃত্যু কিংবা জয়-পরাজয় মহান আল্লাহর হাতে নির্ধারিত উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আল্লাহর ওপর ভরসা রেখে ঐক্যবদ্ধভাবে জনগণের অধিকার আদায়ের মিছিল এগিয়ে নিলে ষড়যন্ত্রকারীরা অবশ্যই পিছু হটতে বাধ্য হবে।’

সম্প্রতি রাজনৈতিক কর্মী ওসমান হাদির ওপর গুলিবর্ষণের ঘটনাকে গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে অভিহিত করেন বিএনপির এই নেতা। তিনি প্রশ্ন তোলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ব্যর্থ হলে কারা খুশি হবে, কিংবা নির্বাচন ছাড়া এই সরকার টিকে থাকলে কাদের লাভ? তার মতে, এসব প্রশ্নের উত্তরের মধ্যেই ওসমান হাদির ওপর হামলাকারী ও গণতন্ত্রের শত্রুদের পরিচয় লুকিয়ে আছে। তিনি সতর্ক করে বলেন, নির্বাচন কমিশন তারিখ ঘোষণা করলেও ষড়যন্ত্র এখনো থেমে নেই।

আগামী জাতীয় নির্বাচনকে কেবল ‘পরীক্ষা-নিরীক্ষা’ বা অভিজ্ঞতার বিষয় হিসেবে না দেখার আহ্বান জানান তারেক রহমান। তিনি উল্লেখ করেন, এবারের নির্বাচন অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে জটিল ও গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এর সঙ্গে দেশের সার্বভৌমত্ব এবং বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের আশা-আকাঙ্ক্ষা জড়িয়ে রয়েছে। আগামী দশককে ‘রূপান্তরের দশক’ হিসেবে অভিহিত করে নারী, তরুণ ও কৃষকদের কাজে লাগিয়ে দেশ গঠনের পরিকল্পনাও তুলে ধরেন তিনি।

স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ জিয়াউর রহমানের লেখা ‘একটি জাতির জন্ম’ প্রবন্ধের প্রসঙ্গ টেনে তারেক রহমান বলেন, এটি মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের অনন্য দলিল। তিনি অভিযোগ করেন, একটি বিশেষ মহল নিজেদের হীন স্বার্থে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করার চেষ্টা চালিয়েছিল। তবে ১৯৭১, ২০২৪ কিংবা নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন বারবার প্রমাণ করেছে যে, জনতা ঐক্যবদ্ধ থাকলে বিজয় কেউ আটকাতে পারে না।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে এবং প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর সঞ্চালনায় সভায় দলের জ্যেষ্ঠ নেতারা বক্তব্য রাখেন। এতে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সালাহ উদ্দিন আহমদ, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আনোয়ার উল্লাহ চৌধুরীসহ অঙ্গসংগঠনের নেতারা।