চট্টগ্রামে ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনে হামলার চেষ্টা, আটক ১২

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে চট্টগ্রাম। এই মৃত্যুর প্রতিবাদে বিক্ষুব্ধ জনতা সেখানকার ভারতীয় সহকারী হাইকমিশন কার্যালয়ে হামলার চেষ্টা চালালে পুলিশ লাঠিচার্জ ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ ঘটনায় ঘটনাস্থল থেকে অন্তত ১২ জনকে আটক করা হয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সহকারী হাইকমিশন কার্যালয়ের নিরাপত্তা জোরদারে পুলিশের পাশাপাশি বিপুল সংখ্যক সেনাসদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাত পৌনে ১০টার দিকে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান গুলিবিদ্ধ শরিফ ওসমান হাদি। তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে নগরের ষোলশহর দুই নম্বর গেট এলাকায় জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করে ছাত্র-জনতার ব্যানারে একদল তরুণ। এরপর রাত পৌনে ১১টার দিকে তারা মিছিল নিয়ে খুলশী এলাকায় অবস্থিত ভারতীয় সহকারী হাইকমিশন কার্যালয়ের সামনের সড়কে অবস্থান নেয়। খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং প্রথমে জড়ো হওয়া ১৫-২০ জনকে সরিয়ে দেয়।

এর প্রায় আধা ঘণ্টা পর আরেকটি মিছিল নিয়ে এসে বিক্ষোভকারীরা হাইকমিশন কার্যালয়ের সামনে স্লোগান দিতে থাকে। একপর্যায়ে তারা কার্যালয় লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করলে পুলিশ অ্যাকশনে যায়। টিয়ারশেল ও লাঠিচার্জের মাধ্যমে ভিড় ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয়। বিক্ষোভে অংশ নেওয়া নুরুল আমিন নামের এক তরুণের অভিযোগ, ভারতবিরোধী ও আওয়ামী লীগ বিরোধী অবস্থানের কারণেই হাদিকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল।

এদিকে সহকারী হাইকমিশনে যাওয়ার আগে বিক্ষুব্ধদের একটি অংশ সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের চশমা হিলের বাসভবনেও হামলা চালায়। সেখানে তারা প্রথমে বাসার সামনে থাকা একটি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং পরে ভবনের ভেতরে প্রবেশ করে ব্যাপক ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে।

সহকারী হাইকমিশনের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসার পর রাত ২টার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার হাসিব আজিজ। তিনি জানান, সেখানে হাজারখানেক মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান নিলেও হঠাৎ ২০ থেকে ৫০ জনের একটি দল হাইকমিশন লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়ে ও বাজে আচরণ করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে এবং ১২ জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে তিনি নিশ্চিত করেন।

খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিন আলম জানান, কিছু তরুণ ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনের সামনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পাঁয়তারা করলে তাদের সরিয়ে দেওয়া হয়। বর্তমানে ওই এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। উল্লেখ্য, গত ১২ ডিসেম্বর ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণার পরদিন ঢাকার পুরানা পল্টনে গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন শরিফ ওসমান হাদি।