রাশিয়ার ওপর চাপ বাড়াতে ভারতের প্রতি এস্তোনিয়ার আহ্বান

ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধ অবসানে রাশিয়ার ওপর চাপ সৃষ্টি করতে ভারতের আরও সক্রিয় ভূমিকা নেওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন এস্তোনিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্গুস সাখনা। তিনি মনে করেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের জন্য রাশিয়া একটি ‘অস্তিত্বগত হুমকি’ এবং এই বাস্তবতায় ভারতের অবস্থান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সম্প্রতি কয়েকজন ভারতীয় সাংবাদিকের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

ভারতকে একটি বৈশ্বিক শক্তি হিসেবে উল্লেখ করে সাখনা বলেন, ‘প্রায় চার বছর ধরে চলা এই যুদ্ধ বন্ধে ভারতের বড় ধরনের দায়িত্ব রয়েছে। ভারত যদি স্পষ্ট অবস্থান নেয়, তবে তা ইউরোপের জন্য যেমন সহায়ক হবে, তেমনি ইউক্রেনের জন্যও উপকার বয়ে আনবে।’

মস্কোর সঙ্গে ঐতিহাসিক সম্পর্কের কারণে রাশিয়ার সঙ্গে কথা বলার সুযোগ ভারতের আছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন। এস্তোনিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট পুতিনের সাম্প্রতিক দিল্লি সফরে বেশ কিছু চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। কিন্তু একই সঙ্গে ইউক্রেনে ন্যায়সঙ্গত ও টেকসই শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য রাশিয়ার ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে ভারত।’

ভারতের সরকারি অবস্থান হলো, রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে সংঘাত বন্ধ করে সংলাপ ও কূটনীতির মাধ্যমে সমাধানের পথে ফিরতে হবে। এই অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে গত ৫ ডিসেম্বর ভারত-রাশিয়া শীর্ষ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জানান, ইউক্রেন পরিস্থিতি নিয়ে ভারত শুরু থেকেই শান্তির পক্ষে কথা বলে আসছে এবং আলোচনার মাধ্যমে স্থায়ী সমাধানের সব উদ্যোগকে সমর্থন করে।

মার্গুস সাখনা বলেন, ‘রাশিয়া আমাদের জন্য একটি অস্তিত্বগত সমস্যা। এই বিষয়টি নিয়ে আমাদের খোলাখুলি আলোচনা করতে হবে। যদি আপনার বড় কোনো প্রতিবেশী অন্য প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ও আগ্রাসন চালায় এবং নিয়মিত হাইব্রিড হামলা করে, তাহলে তা আপনারও অস্তিত্বের প্রশ্ন হয়ে দাঁড়ায়।’ তিনি উল্লেখ করেন, ভারত যদি ইউরোপের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক চায়, তাহলে এই বিষয়গুলো নিয়ে যৌথভাবে ভাবতে হবে।

এস্তোনিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ এবং জাতিসংঘ সনদের সার্বভৌমত্ব ও ভৌগোলিক অখণ্ডতার নীতির প্রতি শ্রদ্ধার কারণে ইউক্রেনে শান্তি প্রতিষ্ঠায় ভারত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। তবে ইউরোপের পক্ষ থেকে ভারতের সঙ্গে রাশিয়ার রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক, বিশেষ করে প্রতিরক্ষা শিল্পে সহযোগিতা নিয়ে কিছু প্রশ্ন রয়েছে। এটি মূলত আস্থার বিষয়।’

উল্লেখ্য, সাবেক সোভিয়েত প্রজাতন্ত্র এস্তোনিয়া আয়তনে একটি ছোট শহরের মতো। দেশটির জনসংখ্যা প্রায় ১৩ লাখ এবং এর পূর্ব সীমান্ত রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত। অন্যদিকে, ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তাবিত শান্তি পরিকল্পনার আওতায় আলোচনা হলেও এখন পর্যন্ত কোনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি।