প্রতিরক্ষামন্ত্রী: সিরিয়া থেকে এক ইঞ্চিও সরবে না ইসরায়েল

গাজা উপত্যকা কিংবা দখলকৃত সিরীয় ভূখণ্ড থেকে কখনোই পুরোপুরি সেনা প্রত্যাহার করবে না ইসরায়েল। মঙ্গলবার ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ইয়েদিওথ আহরোনোথের বরাতে দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজের এই ঘোষণা সামনে এসেছে। তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন, তেল আবিব তার বর্তমান অবস্থান থেকে সরে আসবে না।

অধিকৃত পশ্চিম তীরের রামাল্লার অদূরে বেইত এল বসতিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে কাৎজ কথা বলেন। সেখানে তিনি মন্তব্য করেন, ‘আমরা গাজার অনেক গভীরে অবস্থান করছি এবং আমরা কখনোই পুরো গাজা ছেড়ে যাব না।’

২০০৫ সালে ইসরায়েল গাজা থেকে সরে যাওয়ার সময় যেসব বসতি উচ্ছেদ করেছিল, সেগুলোর জায়গায় উত্তর গাজায় নতুন সামরিক ঘাঁটি স্থাপনের পরিকল্পনাও জানিয়েছেন তিনি। কাৎজ বলেন, ‘সময় এলে উত্তর গাজায় আমরা উচ্ছেদ হওয়া ইসরায়েলি বসতিগুলোর পরিবর্তে নাহাল ইউনিট গড়ে তুলব।’ এ সময় তিনি বর্তমান ইসরায়েলি সরকারকে একটি ‘বসতি সরকার’ হিসেবে অভিহিত করে এর প্রশংসা করেন।

ইসরায়েলি দৈনিক হারেৎজের প্রতিবেদন অনুযায়ী, নাহাল প্রকল্প হলো একটি বিশেষ সামরিক কর্মসূচি। এর আওতায় তরুণ ইসরায়েলিরা স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করে এবং পরবর্তীতে তারা বেসামরিক বসতি গড়ে তোলে।

বর্তমানে পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে কয়েকশ অবৈধ ইসরায়েলি বসতিতে প্রায় সাড়ে সাত লাখ বসতি স্থাপনকারী বসবাস করছে। মানবাধিকার সংস্থাগুলোর অভিযোগ, ‘এই অবৈধ বসতি স্থাপনকারীরা নিয়মিত ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলা চালিয়ে তাদের জোরপূর্বক উচ্ছেদের চেষ্টা চালাচ্ছে।’

সিরিয়ার সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘনের বিষয়েও কঠোর বার্তা দিয়েছেন ইসরায়েল কাৎজ। তিনি বলেন, ‘আমরা সিরিয়া থেকে এক ইঞ্চিও সরে যাব না।’ তবে এ বিষয়ে তিনি বিস্তারিত কোনো ব্যাখ্যা দেননি।

সিরীয় সরকারের তথ্যমতে, ২০২৪ সালের ডিসেম্বর থেকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েল সিরিয়ায় এক হাজারের বেশি বিমান হামলা চালিয়েছে। এছাড়া দক্ষিণাঞ্চলে চার শতাধিক বার সীমান্ত অতিক্রম করে অভিযান চালানো হয়েছে। উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের শেষের দিকে বাশার আল-আসাদ সরকারের পতনের পর গোলান মালভূমির দখল আরও সম্প্রসারণ করেছে তেল আবিব। সে সময় তারা নিরস্ত্রীকৃত বাফার জোন দখল করে নেয়, যা ১৯৭৪ সালে সিরিয়ার সঙ্গে স্বাক্ষরিত একটি চুক্তির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন বলে আন্তর্জাতিকভাবে বিবেচিত হচ্ছে।