১৯ বছর পর বাবার সমাধিতে তারেক রহমান, জানালেন আবেগঘন শ্রদ্ধা

দীর্ঘ ১৯ বছরের ব্যবধান ঘুচিয়ে অবশেষে বাবার কবরে শ্রদ্ধা জানালেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে অবস্থিত বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাজার জিয়ারত করেন তিনি। সর্বশেষ ২০০৬ সালের ১ সেপ্টেম্বর দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে তিনি এখানে এসেছিলেন। এরপর রাজনৈতিক পটপরিবর্তন ও দীর্ঘ প্রবাসজীবনের কারণে আর আসার সুযোগ হয়ে ওঠেনি। এদিন বাবার কবরের পাশে দাঁড়িয়ে এক আবেগঘন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় এবং তাকে অশ্রুসিক্ত হতে দেখা যায়।

জনসাধারণের ভোগান্তির কথা বিবেচনা করে শুক্রবার জোহরের নামাজ বাসাতেই আদায় করেন বিএনপির এই শীর্ষ নেতা। এরপর দুপুর ২টা ৫০ মিনিটের দিকে গুলশানের বাসভবন থেকে ‘সবার আগে বাংলাদেশ’ লেখা সংবলিত একটি লাল রঙের বাসে চড়ে তিনি রওনা হন। তার গাড়িবহর গুলশান-২ গোলচত্বর, বনানী, মহাখালী ফ্লাইওভার, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় ও বিজয় সরণি হয়ে বিকেল ৪টা ২৭ মিনিটে চন্দ্রিমা উদ্যানে পৌঁছায়। যাত্রাপথে রাস্তার দুপাশে দাঁড়িয়ে থাকা হাজারো নেতাকর্মী তাকে হাত নেড়ে ও স্লোগান দিয়ে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান।

সমাধিস্থলে পৌঁছে বিকেল ৪টা ৪০ মিনিটের দিকে তিনি মূল বেদিতে প্রবেশ করেন। প্রথমে দলীয় নেতাদের সঙ্গে নিয়ে এবং পরে এককভাবে তিনি জিয়াউর রহমানের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি ফাতেহা পাঠ করেন এবং মোনাজাতে অংশ নেন। এরপর বেশ কিছুক্ষণ তিনি নীরবে কবরের পাশে দাঁড়িয়ে থাকেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমেদ, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা ড. এ কে এম শামসুল রহমান শামস ও উপদেষ্টা ড. মাহদী আমিন।

এছাড়া শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এ বি এম আব্দুস ছাত্তার, ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মীর মোহাম্মদ হেলাল ও দপ্তর সম্পাদক আব্দুস ছাত্তার পাটোয়ারী। এর আগে জাতীয় সংসদ ভবনের পেছনে বেইলি ব্রিজ ফটকে খায়রুল কবির খোকন, এমরান সালেহ প্রিন্স, অ্যাডভোকেট আহমেদ আযম খান ও ইশরাক হোসেনসহ শীর্ষ নেতারা তাকে স্বাগত জানানোর জন্য অপেক্ষায় ছিলেন।

তারেক রহমানের আগমনকে কেন্দ্র করে জিয়া উদ্যান ও এর আশপাশের এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সেনাবাহিনী, পুলিশ, র‍্যাব, এপিবিএন ও বিজিবি সদস্যরা দায়িত্ব পালন করেন। সাদা পোশাকেও বিপুল সংখ্যক সদস্য মোতায়েন ছিল।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) দুপুরে দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসন শেষে দেশে ফিরেই তিনি পূর্বাচলে সংবর্ধনায় যোগ দেন এবং পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মা বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।