প্রথম ইনিংস কেবলই ব্যাটিং ব্যর্থতার

শুরুটা করেছিলেন সৌম্য সরকার। পরপর দুই বলে পরাস্ত হওয়ার পর তৃতীয় বলেও একই রকমভাবে খেলতে গিয়ে প্যাট কামিন্সকে উইকেট দিয়ে ফেরেন তিনি। এরপর কোনো রান না করে একই বোলারকে উইকেট দিয়ে ড্রেসিংরুমে পথ ধরেন ইমরুল কায়েস ও সাব্বির রহমানও। ১১ বছর পর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট খেলতে নামা বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস হয়ে থাকলো কেবলই ব্যাটিং ব্যর্থতার গল্প।

মিরপুর টেস্টে বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস শেষ হয়েছে ২৬০ রানে। সর্বোচ্চ ৮৪ রান এসেছে সাকিব আল হাসানের ব্যাট থেকে। এ ছাড়া তামিম ইকবাল করেছেন ৭১ রান। দুজনই তাদের ৫০তম টেস্ট খেলছেন। এ দুজন ছাড়া বলার মতো স্কোর পাননি আর কোনো ব্যাটসম্যান। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে তিনটি করে উইকেট নেন নাথান লায়ন, প্যাট কামিন্স ও অ্যাশটন অ্যাগার।

এমন ব্যর্থতার বড় একটা দায় যদি চান্দিকা হাথুরুসিংহের উপর চাপিয়ে দেয়া হয়, তাহলে হয়তো অনেকেই তাতে একমত হবেন। কারণটা অননুমেয় নয় নিশ্চয়।

চান্দিকা হাথুরুসিংহের তীব্র ইচ্ছার কারণেই বাংলাদেশের টেস্ট দলের টপ অর্ডারে সুযোগ পেয়ে গেছেন সৌম্য সরকার ও সাব্বির রহমান। অথচ তাদের ব্যাটিংয়ের ধরণ টেস্টের সঙ্গে যায় না কোনোভাবেই। আক্রমণাত্মক মেজাজের এই দুই ব্যাটসম্যান আজ করতে পারেননি কিছুই। তাদেরকে টপ অর্ডারে সেট করার পিছনে হাথুরুসিংহের ইচ্ছেটা যে মোটেই যথাযথ হচ্ছে না, সেটাই যেনো প্রমাণ করে দিয়েছেন তারা।

ইমরুল কায়েস তার ক্যারিয়ারের প্রায় পুরোটা সময় ব্যাটিং করেছেন ওপেনিংয়ে। কিন্তু গত নিউজিল্যান্ড সফরের ওয়েলিংটন টেস্টে ইমরুলের হঠাৎ ইনজুরির কারণে ওপেনিংয়ে আনা হয় সৌম্যকে। তিনি অবশ্য কয়েকটি ম্যাচে দারুণ পারফর্মও করেন। কিন্তু আত্মবিশ্বাস হারিয়ে বসেন ইমরুল। যার প্রভাব দেখা গেলো আজ। তিন নম্বরে নেমে মাত্র ছয় বল টেকেন তিনি। করতে পারেননি কোনো রান। কোনো রান করতে পারেননি সাব্বির রহমানও। প্যাট কামিন্সের লেট সুইংয়ে বিভ্রান্ত হয়ে উইকেটরক্ষককে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি।

টপ অর্ডারের তিন ব্যাটসম্যানের আউটের পর জুটি গড়েন তামিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসান। তারা যোগ করেন ১৫৫ রান। নিজেদের ৫০তম টেস্টে হাফ সেঞ্চুরি করেন দুজনই। এটা যদি আনন্দের ব্যাপার হয়ে থাকে, তবে বেদনা জাগিয়ে গেছে তাদের সেঞ্চুরি করতে না পারা। কারণ যে ছন্দে তারা ব্যাটিং করছিলেন, তাতে তাদের আরো বড় ইনিংস না পাওয়াটা আফসোসেরই এক ব্যাপার।

দলীয় ১৬৫ ও ১৮৮ রানে গিয়ে তামিম ও সাকিবকে হারায় বাংলাদেশ। ম্যাক্সওয়েল পান তামিমের উইকেট। অফস্ট্যাম্পের বাইরের বল ড্রাইভ করতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দেন তিনি। সাকিব আউট হন নাথান লায়নের বলে। স্লিপে ক্যাচ তুলে দেন সাকিব।

এই দুজনের বিদায়ের পর আর কোনো বড় জুটি গড়ে ওঠেনি। সপ্তম উইকেটে চেষ্টা করেছিলেন নাসির ও মেহেদি হাসান মিরাজ। কিন্তু ৪২ রানে বেশি তুলতে পারেননি তারা। শেষ দিকের ব্যাটসম্যানরাও দারুণ কিছু করে চমকে দিতে ব্যর্থ। সব মিলিয়ে প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসটা কেবলই ব্যাটিং ব্যর্থতার কারণেই হয়তো মনে থাকবে দর্শকদের।