আপনি পড়ছেন

ভারতের চলচ্চিত্র জগতের বিখ্যাত প্রতিষ্ঠান সত্যজিৎ রায় ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইন্সটিটিউটের (এসআরএফটিআই) ছাত্রীরা রাতে ছাত্রদের সঙ্গে একই হলে থাকার দাবিতে আন্দোলন শুরু করেছেন। তাদের দাবি, ছাত্র ও ছাত্রীদের আলাদা আলাদা হলে থাকার বিষয়টি এক ধরণের লিঙ্গ বৈষম্য। এ ঘটনায় কলকাতার ওই প্রতিষ্ঠানের ১৪ ছাত্রীকে বহিষ্কার করেছে কর্তৃপক্ষ। ভারতের প্রভাবশালী গণমাধ্যম জিনিউজ ও টাইমস অব বেঙ্গল এ খবর জানিয়েছে।

SRFTI

বহিষ্কারের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ক্লাস বয়কট করে বুধবার দ্বিতীয় দিনের মত বিক্ষোভ করছে ছাত্রীরা। ছাত্রদের অনেকেই তাদের সঙ্গে আন্দোলনে যোগ দিয়েছে। প্রতিবাদে গোটা ক্যাম্পাস জুড়ে ছেয়ে গিয়েছে বিভিন্ন স্লোগান সম্বলিত পোস্টার। কিন্তু বহিষ্কারের সিদ্ধান্তে অনড় এসআরএফটিআই কর্তৃপক্ষ। এতে প্রতিষ্ঠানে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

কর্তৃপক্ষ জানায়, এর আগে শ্লীলতাহানি এমনকি ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে এসআরএফটিআইতে। তাই নিরাপত্তার জন্যই ছাত্র-ছাত্রীদের আলাদা হোস্টেল তৈরি করা হয়েছে।  নিরাপত্তার বিষয়টিকে সামনে রেখেই কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে রিপোর্ট দেবে এসআরএফটিআই।

ভারতের প্রভাবশালী গণমাধ্যম বর্তমান জানায়, সম্প্রতি কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে জারি করা একটি নির্দেশনায় বলা হয়, রাত ১০টা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা উভয় হলে ঢুকতে পারবেন। এর পরে (রাত ১০টার পরে) ছাত্রীরা ছাত্রদের হলে অথবা ছাত্ররা ছাত্রীদের হলে প্রবেশ করতে গেলে খাতায় সই করতে হবে। আর এতেই ফুঁসে উঠেছেন ছাত্রীরা। কর্তৃপক্ষের এ সিদ্ধান্তে লিঙ্গবৈষম্য হচ্ছে বলে অভিযোগ করে ছাত্রীদের দাবি, একই হলে থাকতে দিতে হবে তাদের।

প্রতিষ্ঠান সূত্র জানায়, বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তী পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের নামে নামকরণ হওয়া ১৯৯৫ সালে প্রতিষ্ঠিত এই ইনস্টিটিউিটের শিক্ষার্থীদের জন্য দীর্ঘদিন ধরে একটি মাত্র আবাসিক হল ছিল। সেখানে ছেলে ও মেয়েদের জন্য আলাদা ব্লক ছিল। ২০১৩ সালে এসআরএফটিআই কর্তৃপক্ষ ছেলে ও মেয়েদের জন্য পৃথক আবাসিক হল নির্মাণের উদ্যোগ নেন। ২০১৫ সালে পৃথক হলের কাজ শেষ হয়। এ বছরের আগস্ট মাসে এই নতুন হলে উঠার জন্য ছাত্রীদের নির্দেশ দেয় হল কর্তৃপক্ষ।

অধিকর্তা দেবমিত্রা মিত্র বলেন, আমরা এই ছাত্রীদের একবার নয়, বহুবার চিঠি দিয়ে সেখানে সরে যেতে বলেছি। তাদের অভিভাবকদেরও জানিয়েছি। কিন্তু ছাত্রীরা নিজেদের অবস্থানে অনড়। শেষমেশ কয়েকদিন আগে চিঠি দিয়ে তাঁদের চূড়ান্ত সময় দেওয়া হয়। তাতেও কাজ হয়নি। তাই এই ১৪ জনকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এসআরএফটিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, বহিষ্কারের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

এসআরএফটিআই কর্তৃপক্ষ জানায়, সোমবার রাতে ওই অভিযুক্ত ১৪ ছাত্রীকে বহিষ্কার করে কর্তৃপক্ষ। এর প্রতিবাদে আন্দোলনে নামে ছাত্রীদের একাংশ। মঙ্গলবার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে অধিকর্তাসহ শিক্ষকদের বচসা হয়। দফায় দফায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসে এসআরএফটিআই কর্তৃপক্ষ। কিন্তু কোনো সুরাহা হয়নি।

এদিকে ছাত্রীদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত থেকে পিছু হঠছে না কর্তৃপক্ষও। এদিন অধিকর্তার সাংবাদিক সম্মেলনেও বিক্ষোভ দেখান শিক্ষার্থীরা। গভর্নিং কাউন্সিলের সঙ্গে আলোচনার ব্যবস্থা করা না হলে আন্দোলন চালিয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন ছাত্রীরা।

আনন্দবাজার পত্রিকা জানায়, গত আগস্টে ক্যাম্পাস গেটে লাগানো সিসিটিভি ভাঙার অভিযোগ ওঠে কয়েকজন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের রেজিস্ট্রারের অভিযোগ, ঘটনার রাতে এক দল ছাত্র লাঠিসোটা নিয়ে এসে ক্যাম্পাসের গেটে লাগানো সিসিটিভি ভাঙতে শুরু করে। দায়িত্বরত নিরাপত্তারক্ষী বাধা দিতে গেলে তাকেও মারধর করা হয়। এই ঘটনায় থানায় মামলা করা হয়।

পরে পুলিশি তদন্তে বেরিয়ে আসে, ছাত্রদের একাংশ ক্যাম্পাসে সিসিটিভি বসানোর বিরোধী। সেই ক্ষোভ থেকেই তারা এ ভাংচুর চালায়।

উল্লেখ্য, এসআরএফটিআই-এর হলে বিভিন্ন সময় ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনা প্রমাণিত হওয়ার পর অনেক শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারও করা হয়েছে। এছাড়াও ধর্ষণের ঘটনায় বিখ্যাত এ চলচ্চিত্র প্রতিষ্ঠানের একাধিক শিক্ষককেও বহিষ্কার করা হয়েছে।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.