প্রণব মুখার্জির জীবনের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা স্বাধীন বাংলাদেশের জন্ম

দায়িত্ব পালন করা ভারতের রাষ্ট্রপতিদের মধ্যে অন্যতম প্রণব মুখার্জি। ভারতের ইংরেজি দৈনিক টাইমস অব ইন্ডিয়াকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে ভারতের রাজনীতিতে প্রভাবশালী এই বাঙালি বলেছেন, '৭১ সালে বাংলাদেশ নামের স্বাধীন একটি রাষ্ট্রের জন্ম নেয়া আমার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা।'

ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি ও প্রবীণ রাঙালি রাজনীতিবীদ তার লেখা তৃতীয় বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে গণমাধ্যমকর্মীরা তার জীবনের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার কথা জানতে চাইলে তিনি এসব কথা বলেন। তার বইটির নাম 'দ্য কোয়ালিশন ইয়ারস'।

টাইমস অব ইন্ডিয়াকে প্রণব মুখার্জি বলেন, ‘স্মরণীয় কথা বলতে আমার চোখে ভেসে ওঠে বাংলাদেশের জন্মের কথা। ১৯৭১ সালে কীভাবে একটি জাতির জন্ম হলো। রচিত হলো নতুন ইতিহাস।'

প্রণব মুখার্জি বলেন, 'আমার স্পষ্ট মনে পড়ে তৎকালীন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী পার্লামেন্টের সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলেছিলেন, আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি ভারতীয় ও মুক্তি বাহিনীর যৌথ কমান্ডের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে পাকিস্তানি বাহিনী। বাংলাদেশ এখন স্বাধীন। এটাই আমার রাজনৈতিক জীবনের সবচেয়ে স্মরণীয় বড় ঘটনা।'

প্রণব মুখার্জি বলেন, 'ভারত-পাকিস্তান দ্বি-জাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে এটা বলা কখনোই উচিত হবে না। শুধুমাত্র ধর্মই কোনো রাষ্ট্রের ভিত্তি হতে পারে না। বাংলাদেশ স্বাধীনের পেছনে ভাষা, সংস্কৃতি, সামাজিক আচার-আচরণ অনেক বড় বিষয় ছিল।'

নতুন উন্মোচিত বইটিতে নিজে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হতে চাননি উল্লেখ করে প্রণব মুখার্জি লিখেছেন, 'কংগ্রেস সভাপতি সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে বৈঠকে আমার মনে হয়েছিল হয়তো প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিতে হবে। কিন্তু পরবর্তীতে মনমোহন সিং হন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। আমি বেঁচে যাই। তবে অনুষ্ঠানে উপস্থিত মনমোহন সিং বলেন, প্রধানমন্ত্রী পদে প্রণব আসিন হলে মন্দ হতো না। এটা তার প্রাপ্য ছিল।'

কংগ্রেসের আদর্শের অনুসারী প্রণব মুখার্জি ২০১২ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত ভারতের ১৩তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০১৭ সালের ২৪ জুলাই তিনি রাজনীতি থেকে অবসর নেন। তিনি ভারতের অন্যতম সন্মানিয় পুরষ্কার পদ্মবিভূষণ পদকপ্রাপ্ত রাজনীতিক।