অনন্ত বর্ষার ঘরে নতুন অতিথি

বর্ষার কোলজুড়ে এসেছে পুত্রসন্তান। ঢালিউডের আলোচিত তারকা দম্পতি অনন্ত জলিল ও বর্ষার ঘরে নতুন অতিথির খবর ২০দিন ধরে আড়ালে ছিল। সোমবার দুপুরে অনন্ত জলিল তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে নতুন অতিথির খবর দেন। অনন্ত, বর্ষা ও তার ছেলে নবজাতককে কোলে নেয়ার ৩টি ছবি পোস্ট করেন।

ফেসবুকে বাবা হওয়ার অনুভূতি সম্পর্কে স্ট্যাটাসে জনপ্রিয় এ অভিনেতা লেখেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহর দয়ায় সবাই ভালো আছি। আমি অনেক আনন্দিত। তাদের সঙ্গে আমার বেশ ভালো সময় কাটছে। বন্ধুগন আমার দুই ছেলের জন্য দোয়া করবেন।’

গত ২৩ অক্টোবর থাইল্যান্ডের ব্যাংককের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে এ সন্তানের জন্ম দেন বর্ষা।

বাবা হওয়ার প্রতিক্রিয়ায় তিনি মোবাইলে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার ইচ্ছে ছিল পুত্রসন্তান হোক। আল্লাহ আমার সে ইচ্ছে পূরণ করেছেন। এ জন্য মহান আল্লাহতায়ালার কাছে শুকরিয়া আদায় করছি। ছেলের নাম রেখেছি আবরার ইবনে জলিল। বর্তমানে মা ও সন্তান দুজনেরই শরীর সুস্থ রয়েছে। ডাক্তার ক্লিয়ারেন্স দিলে শিগগিরই সন্তানকে নিয়ে দেশে ফিরব।’

অনন্ত জলিলের স্ত্রী অভিনেত্রী বর্ষা বলেন, ‘আবারও মা হতে পেরে বেশ ভালো লাগছে। আরিজের (প্রথম ছেলের) খেলার সঙ্গী হল এবার। আল্লাহ যেন আমার দুই সন্তানকে হেফাজত করে এ কামনাই করি। সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন।’

উল্লেখ্য, অনন্ত-বর্ষা দম্পতির ঘরে আরিজও একই হাসপাতালে জন্মগ্রহণ করেছিল।

প্রসঙ্গত, বাংলা চলচ্চিত্রে বলিউডের স্বাদ আনার চেষ্টা করেছেন রূপালি পর্দার নায়ক অনন্ত জলিল। উন্নত গ্রাফিক্স আর ভালো মানের ক্যামেরা ব্যবহার করায় আলোচনায় রয়েছে তার বেশকিছু সিনেমা। ঢাকাই সিনেমার এই রকস্টার ধর্মকর্মে মনোনিবেশ করেছেন। বদলে গেছে তার লাইফস্টাইল। এ নিয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম এএফপিও বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এ এ তিনি বলেছেন, ‘আগামী এক বছর তিনি ইসলামের দাওয়াত দেবেন।’

এছাড়াও পোশাক-পরিচ্ছেদেও এসেছে পরিবর্তন। তার এ বদলে যাওয়া নিয়ে অনেকেই বিস্মিত, আর বিষয়টি নিয়ে অনন্ত জলিল নিজেও অবগত। এ প্রসঙ্গে অনন্ত জলিল তার ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে লেখেন, ‘ব্যবসায়িক কাজে আমাকে বিদেশি বায়ারদের সাথে অধিকাংশ সময়ই মিটিং করতে হয়। তারই ধারাবাহিকতায় ফ্যাক্টরিতে বিদেশি বায়ারদের সাথে একটি মিটিং ছিলো। যথারীতি আমি মিটিং এ উপস্থিত হই। কিন্তু যেই বায়ারদের সাথে আমি দীর্ঘ পনের বছর ধরে ব্যবসা করে আসছি, তারা এই প্রথম আমাকে দেখো হতভম্ব হয়ে গেল। কারণ একটাই, আমার পোশাক।’

‘তারা আমার পোশাকের বেশ প্রশংসা করে বলেন, এই পোশাকেই তোমাকে বেশ ভালো লাগছে। সাথে জানতেও চেয়েছেন এই ড্রেসটা কেন পরেছি। তখন আমি তাদেরকে বুঝিয়ে বলি, যেহেতু আমি মুসলমান আর এটা আমাদের সুন্নতি ড্রেস। এ কথা শুনে বিদেশি বায়ারগন আমাকে আবারও এপ্রিশিয়েট করেন।’-বলেন অনন্ত জলিল।

২০১৭ সালের শুরুতে পবিত্র মক্কা শরীফে ওমরাহ করতে গিয়েছিলেন অনন্ত জলিল। এরপর ফিরে এসেই যুক্ত হন তাবলিগ জামায়াতে। তিনি তরুণদের ধর্মের পথে, ইসলামের পথে আসার জন্য দাওয়াত দেয়া শুরু করেছেন। অনন্ত জলিলের ধর্মের প্রতি অনুরাগের বিষয়টি নিয়ে একটি প্রতিবেদন করেছে বার্তা সংস্থা এএফপি। যেখানে অনন্ত জলিল ইসলামের প্রতি তার ভালবাসার কথা জানান। নিজেকে ইসলামের দাওয়াতে উৎসর্গ করারও প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

অনন্ত জলিল বলেন, ‘বাংলাদেশ মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ। আমার জনপ্রিয়তা ও খ্যাতিকে কাজে লাগিয়ে দেশের যুব সমাজকে ধর্মীয় বিশ্বাসের দিকে আহ্বান করবো। আমি তাবলিগ জামায়াতে যোগ দিয়েছি। আমাদেরকে জীবন দিয়ে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন আল্লাহ। পৃথিবীতে পাঠানোর অন্যতম কারণ তার ইবাদত বন্দেগী করা। আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য কাজ করছি। যুব সমাজকে ধর্মের পথে ডাকছি।’

সম্প্রতি অনন্ত জলিলের ইসলামিক পাগড়ি ও লম্বা পাঞ্জাবি পরা ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। তাকে ঘিরে মানুষের আগ্রহ বেড়ে যায়। তিনি এএফপিকে বলেছেন, ‘আগামী এক বছর ইসলাম প্রচারে নিজেকে নিয়োজিত করবো।’ ধর্মকর্মের পাশাপাশি সিনেমাতে অভিনয়ও অব্যাহত রাখবেন বলে জানা গেছে।

সাহাবীদের জীবনী নিয়ে শিগগিরই একটি সিনেমা তৈরির পরিকল্পনার কথাও জানিয়েছেন চিত্রনায়ক অনন্ত জলিল। শনিবার অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের আয়োজনে ‘বাংলাদেশ নাইট’ অনুষ্ঠানে এ কথা জানান জনপ্রিয় এ অভিনেতা।

ধর্মকর্মে মনোনিবেশ করা সম্প্রতি আলোচিত চিত্রনায়ক অনন্ত জলিল জানান, সহসাই তিনি চলচ্চিত্র ছেড়ে দিচ্ছেন না। বরং একই সাথে ধর্ম চর্চা এবং চলচ্চিত্র নিয়ে কাজ চালিয়ে যেতে চান।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত দর্শকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমি আপনাদের কাছ থেকে দূরে যেতে চাই না। তবে ইসলামি ভাবধারায়ও চলতে চাই। তাই আমার পরিকল্পনা হলো সাহাবীদের নিয়ে একটি ফিল্ম আপনাদেরকে উপহার দেব। এটা ইতিহাস হয়ে থাকবে।’