‘দলিত, খ্রিস্টান, সংখ্যালঘু সবাই আমাদের ঘরের ভাইবোন’

বিজিপি সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন রাজ্যে সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতনের অভিযোগ তুলেছেন পশ্চিমবঙ্গের মূখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন, ‘রাজস্থানে ওরা সংখ্যালঘু, দলিতদের ওপরে অত্যাচার করে। গুজরাটে দলিতদের ওপরে অত্যাচার করে। অন্য কোনো স্থানে খ্রিস্টানদের ওপরে অত্যাচার করে। কেন করবেন এসব?’

১২ ডিসেম্বর, মঙ্গলবার পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়ায় এক জনসমাবেশে ভাষণ দেয়ার সময় তিনি নরেন্দ্র মোদির নিয়ন্ত্রণাধীন বিভিন্ন রাজ্যের বিজিপি সরকারের বিরুদ্ধে এসব প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের পাশেই বিজেপি শাসিত ঝাড়খণ্ড রাজ্য। কী হচ্ছে সেখানে? যারা ঝাড়খণ্ডে করতে পারেন না তারা বাংলায় কী করবেন? ঝাড়খণ্ড রাজ্য যদি তৃণমূলের শাসন থাকত তাহলে আমরা সেখানে সোনা ফলিয়ে দিতাম।’

মমতা বলেন, ‘দলিত, খ্রিস্টান, সংখ্যালঘু, সাধারণ মানুষ যাই হোক না কেন তারা আমাদের ঘরের ভাইবোন। আমরা এসবে কোনো পার্থক্য করি না। আমরা সকলেই এক। আমরা সবাই মানবিক পরিবারের সদস্য। বাংলার মাটি সবাইকে ভালোবাসে। বাংলার মানুষের ওপরে কোনো অত্যাচার করা যাবে না। বাংলাও কারো ওপরে অত্যাচার করবে না। এটা আমাদের গর্ব।’

কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের সমালোচনা করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'কেন্দ্রীয় সরকার আমাদের এখান থেকে টাকা কেটে নিয়ে যায়। সেই টাকা থেকে কিছু টাকা আমাদের দেয়। সবটা দেয় না। ওরা যদি আমাদের টাকা না কাটতো, তাহলে ওদের কাছ থেকে আমাদের এক পয়সাও চাওয়ার প্রয়োজন ছিল না। ওরা আমাদের দয়া করে না। আমাদের ভাতে মারার চেষ্টা করে।’

মমতা বলেন, ‘রাজ্যের আড়াই লাখ বিধবা, প্রতিবন্ধী ও বয়স্ক ভাতা কেন্দ্রীয় সরকার বন্ধ করে দিয়েছিল। কিন্তু আমরা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পক্ষ থেকে ২৫৮ কোটি টাকা দিয়ে সেই ভাতা পুনরায় চালু করে দিয়েছি। সুতরাং কেউ যেন বঞ্চিত না হয়। আমি জেলা প্রশাসকদের এ ব্যাপারে নজর দেয়ার নির্দেশ দিয়ে যাচ্ছি।’

রাজ্যে সংখ্যালঘুদের তিন হাজার কবরস্থানের প্রাচীর করে দেয়া হয়েছে এবং চলতি বছরের মধ্যেই কমপক্ষে ২০০০ শ্মশানঘাট বাঁধিয়ে দেয়া হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘অন্য রাজ্যে কাজ করতে গিয়ে কেউ অসুবিধার মুখে পড়ে ফিরে আসলে (পশ্চিমবঙ্গে) তাকে ১০০ দিনের কাজ, প্রয়োজনে ২০০ দিনের কাজ দেয়া হবে।’