সম্পর্কের সমীকরণ: পাকিস্তানকে আর ‘অর্থ সাহায্য’ দিতে চান না ট্রাম্প

দিন দিনই পাকিস্তানের ওপর থেকে মুখ ফিরেয়ে নিচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। অন্যদিকে পাকিস্তানের চিরশত্রু দেশ হিসেবে পরিচিত ভারতের সঙ্গে মার্কিন সম্পর্ক ক্রমেই ভাল হচ্ছে। এরই মধ্যে ‘সন্ত্রাসবাদ’ ইস্যুতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সরাসরি ভারতের ‘প্রশংসা’ করে পাকিস্তানের ‘নিন্দা’ করেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের মত করে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে একই অভিযোগ তুলে আসছে ভারতও। তবে পাকিস্তান বরাবরের মতই এসব অভিযোগ অস্বীকার করে এই অঞ্চলে সন্ত্রাসবাদের জন্য ভারতকে দোষারোপ করে আসছে।

অন্যদিকে আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, জিও-পলিটিক্স (ভৌগলিক রাজনীতি) অনুযায়ী প্রতিবেশি দেশ চীন ভারতের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠেছে। আর শক্তির মহড়ায় চীন-মার্কিন সম্পর্কের মধ্যে একটা বোঝাপড়া চলছে বেশ আগে থেকেই। ফলে ‘শত্রুর শত্রু বন্ধু’ এই নীতি অনুযায়ী চীন-পাকিস্তান সম্পর্ক যেমন বাড়ছে, তেমন বাড়ছে ভারত-মার্কিন সম্পর্ক।

আন্তর্জাতিক সম্পর্কের এই সমীকরণ অনুযায়ী, এবার ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়া’র অভিযোগ তুলে পাকিস্তানকে প্রস্তাবিত ২৫ কোটি ৫০ লাখ ডলারের অর্থ সাহায্য বন্ধ করে দিতে চাচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসন। শনিবার নিউইয়র্ক টাইমসের বরাত দিয়ে এমন খবর জানিয়েছে পাকিস্তানের জনপ্রিয় ইংরেজি দৈনিক ডন।

নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০০২ সাল থেকে চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র মোট ৩৩ হাজার কোটি ডলার অর্থ সাহায্য দিয়েছে পাকিস্তানকে। দেশটিকে মার্কিন প্রশাসনের পক্ষ থেকে আরো ২৫ কোটি ৫০ লাখ ডলার দেয়ার কথা অনেক দিন ধরেই ঝুলে আছে।

এমন পরিস্থিতিতে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দেশটিকে আর্থিক সাহায্য দেয়া নিয়ে নতুন করে ভাবছে যুক্তরাষ্ট্র। এর আগে ট্রাম্প নিজেই ঘোষণা করেছিলেন, ‘পাকিস্তান এমন শক্তির নিরাপদ স্বর্গ যারা হিংসা, সন্ত্রাস এবং বিশৃঙ্খলা তৈরি করে।’ আর গত বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স বলেছেন, ‘পাকিস্তানের প্রতি নজর রাখছে আমেরিকা।’

নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সন্ত্রাসবাদের অভিযোগ ওঠায় সৃষ্ট জোড় বিতর্কের মুখে ইসলামাবাদকে নতুন করে আর কোন অর্থ সাহায্য করতে ইচ্ছুক নয় ওয়াশিংটন। প্রসঙ্গত, বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সময় পর্যন্ত পাক-মার্কিন সম্পর্ক ভাল থাকলেও ডোনাল্ড ট্রাম্প আসার পর থেকে এ দুই দেশের সম্পর্ক দিন দিনই তলানীর দিকে যাচ্ছে।