স্বাধীন ফিলিস্তিন দেখতে চায় ভারত, রামাল্লায় মোদি

স্বাধীন রাষ্ট্র হিসাবে মুসলিম অধ্যুষিত ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেয়ার ৩০ বছর পর ঐতিহাসিক সফরে গেলেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ফিলিস্তিনের রাজধানী রামাল্লায় ভারতের প্রথম কোন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পদধূলি দিলেন মোদি। সফরটি মাত্র তিন ঘণ্টার হলেও রয়েছে ঐতিহাসিক গুরুত্ব। ফিলিস্তিনের রাজধানী রামাল্লায় পৌঁছেই মোদি বলেন, ‘স্বাধীন ফিলিস্তিন দেখতে চায় ভারত।’

শনিবার জর্ডনের রাজধানী আম্মান থেকে একটি হেলিকপ্টারে রামাল্লায় যান নরেন্দ্র মোদি। ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীকে বিমানবন্দরে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। এর আগে গত বছরের ৪ জুলাই প্রথম ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ফিলিস্তিনের শত্রুরাষ্ট্র ইসরায়েলেও গিয়েছিলেন মোদি। সেই সময় মোদি বলেছিলেন, ‘ভারত ও ইসরায়েলের সম্পর্ক অত্যন্ত ‘গভীর’ ও ‘শতাব্দী প্রাচীন’।

ফিলিস্তিনে পৌঁছার পর ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী রামাল্লায় ফিলিস্তিন মুক্তি আন্দোলনের (পিএলও) নেতা ইয়াসির আরাফাতের স্মারক ভবনে, শ্রদ্ধার্ঘ অর্পণ করেন। এরপরই প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। বৈঠকে ভারত-ফিলিস্তিনের মধ্যে বেশ কয়েকটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়।

ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, ‘ইসরায়েলের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক জোরদার হলেও ফিলিস্তিনের সঙ্গে ভারতের দীর্ঘদিনের সম্পর্কে কোন প্রভাব পড়বে না। দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক অটুট রাখতে ভারত-ফিলিস্তিন কয়েকটি চুক্তিও স্বাক্ষরিত হয়।’ সফরে রামাল্লায় একটি বিশেষ সুবিধা সম্পন্ন হাসপাতালের উদ্বোধন করেন নরেন্দ্র ,মোদি।

এদিকে ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসও মোদির সফরকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে আখ্যায়িত করেছেন। ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীকে তিনি ‘মহান অতিথি’ হিসেবে সম্মান জানিয়েছেন। এর আগে গত বছর ভারত সফরে এসেছিলেন ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। আরব আমিরশাহি ও ওমান সফর শেষে ১২ ফেব্রুয়ারি দিল্লিতে ফেরার কথা রয়েছে মোদির।

ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন ইস্যুতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব বি বালা ভাস্কর বলেন, ‘ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন দুই রাষ্ট্রকেই আমরা স্বাধীন, নিরপেক্ষ এবং আমাদের বন্ধু মনে করি। এটাই ভারতীয় নীতি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি হয়তো সেটিই বোঝাতে চেয়েছেন।’

ভারতের আনন্দবাজার বলছে, ১৯৪৮ সালে ফিলিস্তিনের দাবিকে অস্ত্রের মুখে দমিয়ে ইসরায়েল নিজেদের স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণার পর থেকেই তাদের প্রতি সহানুভূতি দেখিয়ে আসছে ভারত। সম্প্রতি জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী বলে ঘোষণা করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। বিতর্কিত বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করে জাতিসংঘ। জেরুজালেম ইস্যুতে ভোটাভুটিতে হেরে যায় আমেরিকা। ভোটাভুটিতে আমেরিকার রক্তচক্ষু উপেক্ষা করেও ফিলিস্তিনের পক্ষেই ভোট দিয়েছিল নয়াদিল্লি।