দুইমাসের শিশুকে কোলে নিয়েই পরীক্ষা দিলেন জাহান, অতঃপর....

দুইমাসের শিশু সন্তানকে কোলে নিয়েই একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছেন জাহান তাব নামের এক আফগান নারী। প্রথমে চেয়ারে বসেই পরীক্ষা দিচ্ছিলেন কিন্তু শিশুটি কান্না করতে শুরু করলে একপর্যায়ে মেঝেতে বসেই তাকে পরীক্ষা সম্পন্ন করতে হয়। আফগান এই নারীর এভাবে পরীক্ষা অংশগ্রহণের দৃশ্যের একটি ছবি ইতোমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

ঘটনাটি আফগানিস্তারেন দায়কুন্দি প্রদেশের। ভারতের এনডিটিভি’র খবরে বলা হয়, ২৫ বছর বয়সী জাহানের স্বামী একজন কৃষক। বিয়ের পরেও জাহান উচ্চশিক্ষা লাভের ইচ্ছা প্রকাশ করলে তার স্বামী সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন। এরই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি তিনি একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন।

দুই মাসের শিশুকে কোলে নিয়েই পরীক্ষার হলে প্রবেশ করেন জাহান তাব। কিন্তু পরীক্ষা শুরু হওয়ার কিছুসময় পরেই কেঁদে ওঠে শিশুটি। কান্নরত শিশুকে শান্ত করতে চেয়ার রেখে মেঝেতে বসেই তাকে পরীক্ষা দিতে হয়।

জাহান তাবের এভাবে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের দৃশ্যের একটি ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট দেন ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক ইয়াহিয়া এরফান। পরে পোস্টটি এরফান মুছে ফেললেও ছবিটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। 

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই আফগান নারী জাহানের সাহসিকতার প্রশংসা করেছেন। আবার কেউ কেউ সমালোচনাও করেছেন। একজন টুইটারে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে ছবির ক্যাপশন দিয়েছেন, ‘আফগান নারীরা অপ্রতিরোধ্য।’ অনেকে তাকে প্রেরণাদায়ী, কিংবদন্তি হিসেবেও উল্লেখ করেছেন।

জাহানের এই ছবি যিনি তুলেছিলেন সেই ইয়াহিয়া এরফান সিএনএনকে বলেন, ‘জাহানের পরীক্ষা দেয়ার ঘটনাটি ছিল একটি অভাবনীয় ঘটনা। তিনি শিশুকে নিয়ে পরীক্ষা দিচ্ছেন দেখে সহপাঠী ও শিক্ষকরা তার প্রশংসা করছিল।’

তিন সন্তানের জননী জাহান নিল্লি শহরের নাসিরখোসরো হায়ার এডুকেশন ইনস্টিটিউটে প্রায় ছয় ঘণ্টার পথ পেরিয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিতে এসেছিলেন। পরীক্ষায় উত্তীর্ণও হয়েছেন। তবে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য যে খরচ প্রয়োজন তা নিয়ে বেশ চিন্তিত আফগান এই নারী।

তবে সুখবর হলো, জাহানের পড়াশোনার খরচ সংগ্রহে এগিয়ে এসেছে আফগান ইয়ুথ অ্যাসোসিয়েশন নামের একটি ব্রিটিশ সংস্থা। সংস্থাটি জাহানকে আফগান নারীদের রোল মডেল হিসেবেই দেখছে।