কয়েক শ’ বছর পেছনের ইতিহাস। সাগরে জাহাজ ভাসিয়ে স্প্যানিশরা বেরিয়ে পড়তো নতুন নতুন উপনিবেশের সন্ধানে। পঞ্চদশ শতকের কোনো একদিন এভাবেই আমেরিকা আবিষ্কার করেছিলেন স্প্যানিশ নাবিক ক্রিস্টোফার কলম্বাস। পরের ইতিহাসটা কারোর অজানা থাকার কথা নয়।

spain football team 2018ছবি - সংগৃহীত

স্প্যনিশদের এখন বাণিজ্যের জন্য নতুন উপনিবেশ খুঁজতে হয় না। নিজেদের অর্থনীতি ও রক্ত সঞ্চালন ঠিক রাখার জন্য তাদের আছে ফুটবল। স্পেনে রয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সেলোনার মতো বিশ্বের সবচেয়ে সফল ও শ্রেষ্ঠ দুইটি ক্লাব। যেখানে যুগ যুগ ধরে খেলে আসছেন বিশ্বের কিংবদন্তি ফুটবলাররা। ফুটবলটা তাই বাণিজ্যের চেয়ে বেশি কিছু স্প্যানিশদের কাছে।

বিশ্বকাপে ব্রাজিল-জার্মানিদের কাতারে না হলেও, স্পেন ফুটবল বিশ্বের নব প্রতিষ্ঠিত পরাশক্তি। যাদের সামনে দাঁড়াতে হিমশিম খায় ইউরোপ ও ল্যাটিন ফুটবল শক্তি। ইংল্যান্ড, ফ্রান্সের মতো একবার বিশ্বকাপ জিতেছে দেশটি। দ্বিতীয় শিরোপা স্বপ্নে এাবর রাশিয়ায় ১৫তম বিশ্বকাপ খেলতে ইতোমধ্যে পৌঁছে গেছে লা রোজারা।

তবে রাশিয়ার টিকেট পাওয়ার আগে স্পেনকে পাড়ি দিতে হয়েছে ইউরোপ বাছাইপর্বের কঠিন পথ। ‘জি’ গ্রুপে তারা প্রতিপক্ষ হিসেবে পেয়েছিল চারবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইতালি, আলবেনিয়া, ইসরায়েল ও লিখটেনস্টাইনকে। তবে কেউ দেয়াল হয়ে দাঁড়াতে পারেনি স্প্যানিশদের সামনে।

স্পেন তাদের অভিষেক বিশ্বকাপ খেলে ১৯৩৪ সালে। প্রথমবার এসেই কোয়ার্টার ফাইনাল খেলে তারা। মাঝখানে ১৯৩৮ সালে যোগ্যতা থাকার পরও রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে নিজেদের গুটিয়ে নিয়েছিল তারা। তবে ১৯৫০ বিশ্বকাপে এসেই স্পেন তাক লাগিয়ে দেয়। সেবার চতুর্থ হয়ে ঘরে ফিরে লা রোজারা।

কিন্তু অতীত ইতিহাসটা টেনে আনতে না পারায় পরের দুই আসরে দর্শক হয়ে থাকতে হয় তাদের। ১৯৬২ বিশ্বকাপে ফিরলেও বাদ পড়ে গ্রুপ পর্ব থেকে। পরের টুর্নামেন্টেও একই ভাগ্য বরণ করতে হয় দেশটির। এরপর আবার আট বছর চূড়ান্তপর্বে খেলতে না পারার বেদনা নিয়ে দিন কাটাতে হয লা রোজাদের।

তবে হুঁশ ফিরে স্প্যানিশদের। ভুলের মাশুল গুণে ১৯৭৮ আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপ খেলতে আসে তারা। এরপর থেকে একবারও পা ফসকায়নি তাদের। স্পেন হয়ে উঠেছে টুর্নামেন্টের সবচেয়ে ধারাবাহিক দলগুলোর একটি। কিন্তু বারবার অধরা থেকে যাচ্ছিল শ্রেষ্ঠত্বের শিরোপাটা।

সেই অপূর্ণতা ঘুচে যায় ২০১০ দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপে। গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচে সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে ১-০ গোলে হার দিয়ে শুরুর পরও কি দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তনটাই না করেছিল স্প্যানিশরা। জোহেনাসবার্গের ফাইনালে নেদারল্যান্ডসকে হারিয়ে স্বপ্নপূরণ করে লা রোজারা। আন্দ্রেস ইনিয়েস্তার গোলে চ্যাম্পিয়ন হয় স্পেন। রাউল গঞ্জালেস, লুইস গার্সিয়া, আলফেডো ডি স্টেফানোরা যা পারেননি সেটাই করে দেখিয়েছেন পুয়োল, ক্যাসিয়াস, জাভি, ইনিয়েস্তার মতো সোনালি একটা প্রজন্ম।

কিন্তু পরের আসরে ব্রাজিলে এসেই পঁচা শামুকে পা কাটায় ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা। চ্যাম্পিয়নদের যে প্রথম রাউন্ড থেকে বিদায় নেওয়ার ইতিহাস আছে, সেই দলের তালিকায় ঢুকে যায় স্প্যানিয়ার্ডরা। অথচ অনেকটা অপরিবর্তিত দল নিয়ে ব্রাজিল ভ্রমণ করেছিল স্পেন। এবার ব্রাজিল বিশ্বকাপের ব্যর্থতার ভুলতে মরিয়া হয়ে উঠেছে লা রোজারা।

স্প্যানিশদের আজকের অবস্থানে আসার পেছনের অন্যতম কারিগর হচ্ছেন ভিসেন্তে দেল বস্ক। সাবে এইক কোচের অধীনেই ইতিহাসের একমাত্র দেশ হিসেবে বড় তিনটি শিরোপা জেতে স্পেন। ইউরো-বিশ্বকাপ-ইউরো জিতে (২০০৮, ২০১০ ও ২০১২ সাল) রীতিমতো অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছিল স্পেন। দাপুটে পারফরম্যান্সে ইতিহাসে প্রথমবারের মতো র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে উঠে এসছিল তারা।

স্পেনের আজকে পরাশক্তি হওয়ার পেছনে অবদান আছে তাদের ঘরোয়া ক্লাবগুলোরও। রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সেলোনার কথা তো সবারই জানা আছে। এ ছাড়া অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ, সেভিয়া, ভ্যালেন্সিয়ার মতো ক্লাবগুলো ফুটবলার তৈরির কারখানা হয়ে উঠেছে।

রাশিয়া বিশ্বকাপে কেবল স্পেনের নয়, বিশ্বকাপেরও অন্যতম বড় তারকা হচ্ছেন ইনিয়েস্তা। গত মৌসুমে বার্সেলোনাকে বিদায় জানানো দ্যা ইল্যুসনিস্টের এটাই শেষ বিশ্বকাপ। দলটি এমনিতেই তারকাঠাসা। বিশ্বকাপের অন্যান্য দলের থেকে তারকা খ্যাতিতে অনেক গুণ এগিয়ে আছে স্প্যানিশরা।

বিশ্বকাপজয়ী ইনিয়েস্তা, পিকে, রামোসদের সঙ্গে রসায়নটা জমে উঠেছে তরুণ তুর্কি অ্যাসেনসিও, ইস্কো, ভাসকুয়েজদের। তবে এবার ক্যাসিয়াস নয়, স্পেনের গোলপোস্টের নিচে থাকবেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের শেষ প্রহরী ডেভিড ডি গিয়া। আর মাঠে দলকে নেতৃত্ব দিবেন রিয়ালের হয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতা অধিনায়ক সার্জিও রামোস।

রাশিয়া বিশ্বকাপে স্পেন খেলবে স্বদেশী কোচ হুলেন লোপেতেগির অধীনে। স্পেনের জার্সিতে এক ম্যাচের জন্য গোলবারের নিচে দাঁড়ানো এই খেলোয়াড়ের জন্য এটাই প্রথম বিশ্বকাপ। টানা বিশ ম্যাচ অপরাজিত থেকে দলে নিয়ে রাশিয়ায় এসেছেন তিনি। এই স্পেন কতটা ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে সেটা কয়েকমাস আগেও প্রীতি ম্যাচে আর্জেন্টিনাকে ৬-১ গোলে উড়িয়ে বুঝিয়ে দিয়েছিল।

‘বি’ গ্রুপ থেকে স্পেনকে এখন থেকেই নক আউট পর্বে দেখেছেন ফুটবল বিশ্লেষকরা। প্রথম রাউন্ডে তারা খেলবে মরক্কো ও ইরানের সঙ্গে। তবে নিজেদের শুরুর ম্যাচেই অগ্নিপরীক্ষার মুখোমুখি হচ্ছেন রামোসবাহিনী। ১৫ জুন প্রথম ম্যাচেই যে তাদের প্রতিপক্ষ ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর ইউরোজয়ী দল পর্তুগাল।

Stay on top of the latest sports news, including cricket and football, from around the world. Get comprehensive coverage of matches, tournaments, and leagues— along with expert analysis and commentary from our team of sports journalists. Whether you're a die-hard fan or a casual observer, you'll find everything you need to know about your favorite sports here.

Sports, cricket, and football are popular topics in the world of sports. Cricket is a bat-and-ball game played between two teams of eleven players and is particularly popular in South Asian countries. Football, also known as soccer, is a team sport played with a spherical ball between two teams of eleven players and is widely popular worldwide. Sports enthusiasts follow the latest news, matches, tournaments, and leagues in these sports and analyze and comment on the performances of players and teams.