দানবীয় ঘূর্ণিঝড়ে প্রায় মুছে গেছে মার্কিন উপকূল!

আমেরিকার ফ্লোরিডা উপকূল দিয়ে বয়ে গেছে দেশটির ইতিহাসের অন্যতম ভয়ঙ্কক ঘূর্ণিঝড় মাইকেল। 'দানবীয়' এই ঘূর্ণিঝড় উপকূলটি দিয়ে যাওয়ার পথে অভাবনীয় ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে। দেশটির বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ে সমুদ্র তীরবর্তী একটি এলাকা ‘মানচিত্র থেকে প্রায় মুছে গেছে।

ভয়ঙ্কর এই ঘূর্ণিঝড় হ্যারিকেন মাইকেল ফ্লোরিডার উত্তর পশ্চিম উপকূলের মেক্সিকো বিচ শহরের কাছেই ঘণ্টায় প্রায় আড়াইশ কিলোমিটার গতিতে আছড়ে পড়ে। যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখণ্ডে আঘাত হানা এই হ্যারিকেনে দেশটির বিভিন্ন এলাকায় এখন পর্যন্ত ১৬ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে এখনো পুরোদমে উদ্ধার তৎপরতা শুরু হয়নি। ফলে আশঙ্কা করা হচ্ছে হতাহতের সংখ্যা আরো বাড়বে।

ঘূর্ণিঝড় মাইকেলের তাণ্ডবলীলাকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় বোমা ‘মাদার অব অল বম্বস’-এর ধ্বংসযজ্ঞের সঙ্গে তুলনা করছেন আবহাওয়া বিশ্লেষকরা। এদিকে মেক্সিকো বিচেও ঘূর্ণিঝড়টি আঘাত হানে। তবে সেখানো কোন হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

বলা হচ্ছে, মার্কিন ইতিহাসে মাইকেল তৃতীয় শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়। এর আগে ১৯৬৯ সালে মিসিসিপিতে ও ১৯৩৫ সালে কানাডায় এ ধরনের শক্তিশালী ঝড় আঘাত হেনেছিল।

মেক্সিকো উপকূলের শহরটিতে হাজারখানেক মানুষের বাস। আবহাওয়াবিদরা ঝড়ের আগেই সবাইকে নিরাপদ আশ্রয় নিতে বললেও প্রায় ২৮৫ জন নির্দেশটি অমান্য করেছে। ফলে রয়ে যাওয়া অধিবাসীদের নিয়ে চিন্তা করছে দেশটির প্রশাসন।

জানা গেছে, ঝড়ের কারণে ফ্লোরিডা, আলাবামা, জর্জিয়া, ভার্জিনিয়া ও ক্যারোলাইনার প্রায় ১০ লাখেরও বেশি বাড়িঘর বিদ্যুৎবিহীন হয়ে আছেন। ঝড়ের প্রভাব পুরোপুরি শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোন আশার আলোও দেখা যাচ্ছে না।

দেশটির আবহাওয়া অফিস বলছে, উপকূলে আঘাত হানার সময় মাইকেলের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ২৫০ কিলোমিটার। এ সময় তীব্র বাতাসের কারণে উপকূলীয় শহরগুলোর অসংখ্য বাড়িঘর ও গাছপালা উপড়ে গেছে। ৩০ টন ওজনের মালবাহী রেলের বগিও উড়ে গেছে। যুক্তরাষ্ট্র বলছে তাদের প্রায় ৮০০ কোটি ডলার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।