আপনি পড়ছেন

রাতের পাখি পেঁচা...এ নিয়ে যেমন রয়েছে রূপকথার নানান গল্প তেমনি কুসংষ্কারও রয়েছে নিশাচর পাখিটি নিয়ে। পেঁচা প্রকৃতিতে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কিন্তু গেলো কয়েক দশকে দেশে বিলুপ্তপ্রায় হয়েছে হরেক রকমের পেঁচা। যার অন্যতম কারণ শিকার ও মানুষের নৃশংসতা। সেইসঙ্গে তো রয়েছে উন্নয়নের জোয়াড়ে বনাঞ্চল ও ঝোপঝাড় বিলীন হওয়া মতো কারণও।

Owl bd

কেন পেঁচা নিয়ে আলোচনা-- সারসংক্ষেপে বললে, প্রকৃতিতে অন্য পাখির মতো পেঁচা থাকার কথা থাকলেও লোকসংখ্যা বৃদ্ধি ও অপরিকল্পিত অবকাঠামোগত উন্নয়নে পশু-পাখিসহ জীব-বৈচিত্র সমন্বয়ের বিষয়টি অনুপস্থিত বাংলাদেশে। সময়ের পালাবদলে প্রাণী, পাখি ও কীট-পতঙ্গ ধীরে ধীরে চলে যাচ্ছে বিলুপ্তির পথে। কয়েক দশক আগেও রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন শহরে কাক, পেঁচা, চড়ুঁই, বাবুইসহ নানান পাখি ঘরবাড়ির আঙ্গিনায় বাসা বাঁধতো। কিন্তু বনাঞ্চল কমাতে শহর থেকে প্রায়বিলুপ্ত নানান রকমের প্রাণী ও পক্ষীকুল।

তবে আশার কথা কিছু সেচ্ছাসেবী ব্যক্তি, সংস্থা ও বর্তমান সরকারের উদ্যোগে শুরু হয়েছে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ। মানুষকে সচেতন করা ও আইন প্রয়োগের মাধ্যমে বন বিভাগ বেশ সাফল্যও অর্জন করছে। বর্তমান সংরক্ষণ ও আইনপ্রয়োগে গঠন হয়েছে ওয়াইল্ড লাইফ ক্রাইম কন্ট্রোল ইউনিট-ডব্লিউসিসিইউ। বনবিভাগের কর্মকর্তাদের দাবি, কয়েক দশ ধরে পেঁচা প্রকাশ্যে দেখা যেত না। কিন্তু গত কয়েক বছরে রাজধানী ঢাকায় আবারো দেখা মিলছে পেঁচার। কারণ হিসেবে কিছু পরিসংখ্যানও দিচ্ছে রাষ্ট্রীয় বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটটির সদস্যরা। 

বনবিভাগের কর্মকর্তা অসীম মল্লিক জানান, ২০১৬ সালের পর থেকে রাজধানী থেকে উল্লেখযোগ্য হারে পেঁচা উদ্ধার করেছেন তারা। মূলত আহত ও আটকে পড়া পেঁচাগুলোকে উদ্ধারের পর আবারো বন্য এলাকায় ছেড়ে দেয়ার কাজ করে তার নেতৃত্বে একটি টিম। প্রজাতি বৈচিত্রে উদ্ধার হওয়া পেঁচাগুলো লক্ষীপেঁচা। ২০১৬ সালের শীত মৌসুমে ৫০টির মতো, ২০১৭ সালে ৭০টি ও চলতি বছর এখন পর্যন্ত ২০টি পেঁচা আহত ও বন্দি অবস্থা থেকে উদ্ধার করেছে ডব্লিউসিসিইউ। মূলত ২০১৫ সালের পর থেকে শহরে নিশাচর পাখিটি বেশি দেখা মিলছে বলে জানান এই বন কর্মকর্তা।

তিনি জানান, উদ্ধার হওয়া বেশিরভাগই পেঁচার ছানা। নভেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত পেঁচার প্রজনন মৌসুম। এ সময় নানান কারণে ছানা বাসা থেকে পড়ে যায়, আবার কাকও বাচ্চাগুলোকে ঠুকরে আহত করে। নীচে পড়ে গেলে ছোট থাকার কারণে এবং শীতে ছানাগুলো উড়তে না পারায় অন্য বড় পাখি বা প্রাণীর খাবার হয় ছানাগুলো, অনেক ক্ষেত্রে মানুষের শিকারেও পরিণত হয়।

owl24live

গবেষকরা জানান, পেঁচার মতো পাখি বা প্রাণী ছোট ছোট সরীসৃপ বা প্রাণী খেয়ে থাকে প্রকৃতিতে খাদ্য শৃঙ্খলের নিশ্চিত করে। এ জাতীয় পাখি ইঁদুর ও অন্যান্য ছোট সরীসৃপ খেয়ে থাকে। যদি কোন অঞ্চলে এমন পাখি বা প্রাণী দেখা মেলে তবে তা সামগ্রিক ইকো-সিস্টেমের জন্য শুভ লক্ষণ। কারণ খাদ্য শৃঙ্খলের মাধ্যমে প্রকৃতিতে প্রাণের ভারসাম্য বজায় থাকে।

বন বিভাগ থেকে জানা যায়, এখন পর্যন্ত যতগুলো পেঁচা উদ্ধার করা হয়েছে সেগুলোর বেশিরভাগ মিরপুর, আগারগাঁও, বনশ্রী, ধানমণ্ডি ও পুরনো এয়ারপোর্ট এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। যার অধিকাংশ আহত অবস্থায় ছিল অথবা শিকারীদের খাঁচায় বন্দি অবস্থায় ছিলো। আর উদ্ধার হওয়া আহত পেঁচাগুলো সুস্থ করে বোটানিকাল গার্ডেনের মতো উন্মুক্ত বন্যঞ্চলে ছেড়ে দেয়া হয়।

প্রকৃতিতে পেঁচা কমে যাওয়ার পেছনে কুসংস্কার ও অলৌকিক ধারণাও দায়ী। কারণ অনেকের কাছে পেঁচা 'অশুভ' প্রতীক। কথিত আছে, কেউ যদি পেঁচা দেখে বা শব্দ শোনে তবে সে ব্যক্তি মৃত্যুমুখে পতিত হবেন। পেঁচাকে মন্দ ভাগ্য, শারীরিক অসুস্থতা বা মৃত্যুর প্রতিচ্ছবি হিসেবে গণ্য করে আঘাত ও হত্যা করে মানুষ। উল্টো চিত্রও আছে, অনেকের ধারণা পেঁচার শব্দ শুনলে অকল্যাণ থেকে মুক্তি দেয়। সনাতন ধর্মাবলম্বীরা লক্ষ্মীর বাহন হিসেবে পেঁচাকে শুভ শক্তির প্রতীক মনে করেন। আবার পেঁচার মাংস খেলে রোগ-ব্যাধি থেকে আরোগ্য লাভ, রক্ত, মাংস ও হাঁড় ওষুধ তৈরিতে ব্যবহার করার ফলে চড়া দামে বিক্রি হয় প্রকৃতির উপকারি পেঁচা।

প্রসঙ্গত, বিশ্বে ১৭০ প্রজাতির পেঁচা দেখা গেলেও বাংলাদেশে এর সংখ্যা মাত্র ১৬। রাতের আঁধারে চলাচল করে পেঁচা। দিনের আলোতে গাছের কোটরে, বন-জঙ্গল, দালানের ফাঁকফোকরের আড়ালে দিনে লুকিয়ে থাকে। ছোট ইঁদুর, শুঁয়াপোকা, ছোট পাখি, টিকটিকি, ঢোঁড়া সাপ, ব্যাঙ ইত্যাদি খেয়ে থাকে পেঁচা।

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.