জেনে নিন টুরেটস সিনড্রোম সম্পর্কে -১

বাচ্চা বেশি চোখ পিটপিট করে? অকারণ কাঁধ ঝাঁকায় বা গলা দিয়ে অদ্ভূত আওয়াজ করে? তাহলে বাচ্চার টুরেট সিনড্রোম হয়েছে বলে ধরে নিতে পারেন। টুরেট সিনড্রোম এক ধরণের নিউরোলজিকাল ডিজঅর্ডার। ব্রেনে কোনও নিউরোট্রান্সমিটার পরিমাণের তুলনায় বেশি বা কম থাকলে টুরেট সিনড্রোম হতে পারে। এর পিছনে জেনেটিক কারণ আছে। টুরেট সিনড্রোমের প্রধান উপসর্গ 'টিকস'। টিকস এক ধরণের মুভমেন্ট, হঠাৎ হেঁচকা বা আওয়াজ, যা পুরোপুরিই অনিচ্ছাকৃত। টিকস অনেকটা হেঁচকির মতো, যার উপর কারও নিয়ন্ত্রণ থাকে না। পানি খেয়ে যেমন হেঁচকি বন্ধ করা যেতে পারে, তেমন স্ট্র্যাটেজি ব্যবহার করে টিকসকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। কিন্তু ইচ্ছে মতো থামানো যায় না।

কাদের হয় টুরেট সিনড্রোম

যতটা ভাবা হয় তার থেকে টুরেট সিনড্রোম বেশ কমন। অনেকের মধ্যে এই সিনড্রোম এত মাইল্ড থাকে যে দেখলে বোঝাই যায় না। ৫-৭ বছরের মধ্যে এই অসুখ ডেভেলপ করে। এর সঙ্গে কখনও কখনও অবসেসিভ কম্পালসিভ ডিজঅর্ডার (ওসিডি), অ্যাটেনশন ডেফিসিট হাইপার অ্যাক্টিভিটি ডিজঅর্ডার (এডিএইচডি) বা লার্নিং ডিফিকাল্টির মতো সমস্যা দেখা যায়। তবে এই অসুখে বাচ্চার বুদ্ধির উপর প্রভাব পড়ে না। বিরূপ পরিস্থিতির কারণে হীনমন্যতায় ভুগতে শুরু করে। পড়াশোনার উপরও প্রভাব পড়ে। ক্লাসে পড়া বুঝতে অসুবিধে হয়। পরীক্ষার মতো সীমিত সময়ের অ্যাক্টিভিটির চাপ নিতে পারে না। পারফরমেন্স খারাপ হতে শুরু করে।

টিকস কত ধরণের হয়

টুরেট সিনড্রোম মূলত ২ ধরণের টিকস হতে পারে- ভোকাল এবং মোটর। চোখ পিটপিট করা, মাথা, হাত, কাঁধ ঝাঁকানোর মত অবাঞ্ছিত মাসল মুভমেন্ট মোটর টিকসের মধ্যে পড়ে। অকারণ কারও গলা দিয়ে অদ্ভূৎ আওয়াজ যেমন, গলা পরিষ্কার করা, গুনগুন করা, ঘোঁতঘোঁত করা ইত্যাদি বেরোলে তাকে ভোকাল টিকস বলা হয়। টুরেট সিনড্রোম থাকলে অনেক সময় একাধিক টিকস একসঙ্গে হতে পারে। সাধারণত দেখা গেছে, যখন স্ট্রেস খুব বেশি থাকে, তখন টিকসের ফ্রিকোয়েন্সি আরও বেড়ে যায়।

টুরেট সিনড্রোমের আর এক উপসর্গ কপ্রোলেলিয়া। বাচ্চা কথা বলার সময় গালাগালি দেয়। বাজে শব্দ ব্যবহার করে। কিন্তু এর কিছুই ইচ্ছে করে নয়। মাত্র ৮-৯ শতাংশ বাচ্চার মধ্যে কপ্রোলেলিয়া দেখা যায়। এছাড়া অনেক বাচ্চাই আপনি যা বলবেন  তা টিয়াপাখির মত রিপিট করে। একে বলা হয় ইকোলেলিয়া।

আপনি আরোও পড়তে পারেন

ব্রঙ্কাইটিস নিয়ে কিছু কথা -১

ব্রঙ্কাইটিস নিয়ে কিছু কথা -২

বাচ্চার যখন সাইনোসাইটিস