পাক-ভারত উত্তেজনাও থামাতে পারলো না তাদের বিয়ে

পাক-ভারত সম্পর্কে যখন উত্তেজনা চলছে তখন সাত পাকে বাঁধা পড়লেন পাকিস্তানি কনে আর ভারতীয় বর। তিন বছর ধরে প্রেম চললেও সম্প্রতি ভারতের কাশ্মিরে আত্মঘাতী হামলার পরিপ্রেক্ষিতে দুই দেশের মধ্যকার উত্তেজনার কারণে সেই প্রেম নিয়ে দেখা দিয়েছিল সংশয়। যদিও শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানের শিয়ালকোটের বধূ এলেন ভারতের পাঞ্জাবের পাতিয়ালায়। আর সৌজন্যে ছিল সেই সমঝোতা এক্সপ্রেস।

ভারতীয় গণমাধ্যমে বলা হয়েছে, ২৭ বছরের কিরণ চিমা আর ৩৩ বছরের পলবিন্দার সিংহের প্রথম দেখা ২০১৬ সালে। সমঝোতা এক্সপ্রেসে চেপে ভারতের অম্বালায় এক আত্মীয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানে এসেছিলেন পাকিস্তানের শিয়ালকোটের তরুণী কিরণ। একই বিয়ের অনুষ্ঠানে ছিলেন পলবিন্দারও। আর প্রথম দেখাতেই প্রেম।

তার পর থেকে ভিসা পেলেই সমঝোতা এক্সপ্রেসে চড়ে বসতেন তারা। কখনও পুলবিন্দার পাড়ি দিতেন পাকিস্তান, কখনও বা কিরণ নিজেই চলে আসতেন ভারতের আত্মীয়ের বাড়ি। এভাবেই সমঝোতা এক্সপ্রেস গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছিল তাদের জীবনে। প্রেমের জোয়ারে ভেসে গিয়েছিল সীমান্তের কাঁটাতার।

সম্প্রতি পুলওয়ামা হামলার পর হঠাৎ করেই বদলে যায় তাদের পৃথিবী। দুই দেশের সম্পর্কের টানাপড়েনে শুরু হয় ভিসার কড়াকড়ি, বাতিল করে দেওয়া হয় সমঝোতা এক্সপ্রেস। তাই পাকিস্তানে আটকা পড়ে গিয়েছিলেন কিরণ। তিনি বা তার আত্মীয়-স্বজন কেউই ভারতে আসতে পারছিলেন না। ভেস্তে যেতে বসেছিল তাদের বিয়েটাই।

আনন্দবাজার বলছে, শেষ পর্যন্ত মুশকিল আসান হয়ে তাদের জীবনে ফের হাজির হলো সমঝোতা এক্সপ্রেসই। দুই দেশের উদ্যোগে লাহোর থেকে দিল্লিগামী এই ট্রেন ফের চালু হয়। পরিবারের সবার জন্য ভিসা জোগাড় করতে না পারলেও দুই একজন নিকটাত্মীয়ের সঙ্গে সেই ট্রেনে চেপে বসেন কিরণ। বৃহস্পতিবারই পাকিস্তানের শিয়ালকোট থেকে এসে হাজির হন পাঞ্জাবের পাতিয়ালায়। প্রস্তুত ছিলেন পলবিন্দারও। গতকাল শনিবারই বিয়ে করে ফেলেন তারা।

আর এই বিয়েতে তাদের একটাই প্রার্থনা— পাক-ভারত সম্পর্ক যেন সব সময় ভাল থাকে। তা হলেই কিরণ আর পলবিন্দারের পরিবারের মধ্যে অটুট থাকবে যোগাযোগ।