রক্তাত্ত শ্রীলঙ্কা, নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩১১

শ্রীলঙ্কায় ইস্টার সানডেতে গির্জা, অভিজাত হোটেল ও রাজধানী কলম্বোর বাইরে দুটিসহ মোট আটটি সিরিজ বোমা হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩১১ জনে দাঁড়িয়েছে। এ হামলার ঘটনায় আহত হয়েছেন ৪০০ জনেরও বেশি মানুষ। রোববার সকালে দ্বীপরাষ্ট্রটিতে একের পর এক হামলায় হতাহতের এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শ্রীলঙ্কান প্রতিরক্ষামন্ত্রী রুয়ান উইজিওয়ার্দেনা।

ওয়াশিংটন পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইস্টার সানডেতে ভয়াবহ হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩১১ জনে দাঁড়িয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরো ৪০০ জনের বেশি। তাদের মধ্যে অনেকের অবস্থা এখনো আশঙ্কাজনক। ফলে মৃতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এদিকে বিপুল এ হতাহতের ঘটনায় আজ মঙ্গলবার দেশটিতে জাতীয় শোক দিবস পালন করা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক মদদে স্থানীয় চরমপন্থীরা এ হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করেছে দেশটির সরকার।

ভয়াবহ হামলার ঘটনায় স্থানীয় সংগঠন ন্যাশনাল জামাত আল-তাওহিদ আল-ওয়াতানিয়া দায় স্বীকার করেছে বলে খবর বেরিয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক গণমাধ্যম আল-আরাবিয়া টিভিকে উদ্ধৃত করে এমন খবর দিয়েছে রুশ গণমাধ্যম।

রুশ বার্তা সংস্থা তাস বলছে, জামাত আল-তাওহিদ আল-ওয়াতানিয়া নামের একটি গোষ্ঠী শ্রীলঙ্কায় রোববারের ভয়াবহ বোমা হামলার দায় স্বীকার করেছে। দুবাইভিত্তিক আল-আরাবিয়া টেলিভিশন চ্যানেলকে উদ্ধৃত করে এ খবর দিয়েছে।

তবে আল-আরাবিয়া টুইটারে সোমবার এই দায় স্বীকারের বিষয়টি জানালেও ওই সংগঠনটি সম্পর্কে বিশেষ কিছু জানায়নি।

এএফপির এক সংবাদে বলা হয়, খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের অন্যতম বড় উৎসব ইস্টার সানডেতে কলম্বো এবং শহরতলির তিনটি গির্জা ও দেশের বড় তিনটি হোটেলে একযোগে এ সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। এরপর আরো দুই স্থানে হামলা চালানো হয়।

লঙ্কান পর্যটনবিষয়ক মন্ত্রী জানিয়েছে, এ হামলার নিহতদের মধ্যে ৩৯ জন বিদেশি নাগরিক রয়েছেন। এ ঘটনায় আরো ২৮ জন বিদেশিকে গুরতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিমের মেয়ের ঘরে নাতি নিহত ও জামাতা আহত হয়েছেন।

প্রায় এক দশক আগের রক্তক্ষয়ী গৃহযুদ্ধের পর বড় ধরনের এ হামলার মুখোমুখি হলো দক্ষিণ এশিয়ার দেশ শ্রীলঙ্কা। ভয়াবহ এ হামলার পর ফেসবুক, টুইটারসহ সব ধরনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধ করে দেয়া হয়। দেশটিতে কারফিউ জারি এবং দুদিনের ছুটি ঘোষণা করা হয়। এ হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন বিশ্ব নেতারা।