ক্ষমা চাইলেন ডুমিনি

চোকার্স অপবাদ ঘোচাতে যুক্তরাজ্যে এসেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। কিন্তু এবার নক আউট পর্বের আগেই বিশ্বকাপ শেষ হয়ে গেছে প্রোটিয়াদের। দলের এমন ভরাডুবির জন্য দেশের মানুষ ও সমর্থকদের কাছে ক্ষমা চাইলেন দক্ষিণ আফ্রিকার প্রতিনিধি জেপি ডুমিনি। বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে নিজেদের ব্যর্থতার কথা স্বীকার করেন এই অলরাউন্ডার।

বড় দলগুলোর মধ্যে সবার আগে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে গেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। তিন ম্যাচ বাকি থাকতেই সেমিফাইনালের আশার প্রদীপ নিভে গেছে তাদের। এবারের আসর তাদের উপহার দিয়েছে ২০০৩ বিশ্বকাপের চেয়েও তিক্ত অভিজ্ঞতার। বিশ্বকাপে বাকি দুই ম্যাচ প্রোটিয়াদের জন্য শুধুই নিয়মরক্ষার।

বিশ্বকাপের মঞ্চে কখনো নক আউট পর্বের বাধা পার হতে পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকা। ১৯৯২ বিশ্বকাপ থেকে নিয়মিত অংশ নিলেও কখনো ফাইনালে ওঠা হয়নি তাদের। গতবার সহ চারবার বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নিয়েছে প্রোটিয়ারা। দুবার তারা ছিটকে গেছে শেষ আট থেকে। এবার তো রবিন লিগ রাউন্ডের গণ্ডিতেই আটকে গেছে তারা।

এবারের আসরে সাত ম্যাচে তিন পয়েন্ট নিয়ে তালিকার নয় নম্বরে আছে দক্ষিণ আফ্রিকা। তাদের একমাত্র জয়টি খর্বশক্তির দল আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে। চোটজর্জর প্রোটিয়ারা হেরেছে পাঁচটি ম্যাচে। একটি ম্যাচ বাতিল হয়েছে বৃষ্টির কারণে। বিশ্বকাপজুড়ে এমন ব্যর্থতা পোড়াচ্ছে ড্রেসিংরুমে থাকা সদস্যদের।

আমলা-ডু প্লেসিদের পারফরম্যান্স হতাশ করেছে ভক্ত-সমর্থকদেরও। তাদের কাছে ক্ষমা চাইলেন দক্ষিণ আফ্রিকার প্রতিনিধি হয়ে সাংবাদিক বৈঠকে আসা ডুমিনি। কাল তিনি বলেছেন, 'এই বিশ্বকাপে আমাদের পারফরম্যান্স ছিল খুব হতাশাজনক। আমরা সমর্থকদের বাজেভাবে হতাশ করেছি। এই ব্যর্থতার জন্য ভক্তদের কাছে আমরা ক্ষমা চাচ্ছি।'

দক্ষিণ আফ্রিকার এমন ভরাডুবির একটা কারণ হতে পারে দলে চোটের গ্রাস। তাই বলে প্রোটিয়াদের মতো শক্তিশালী দলের এমন পতন মেনে নেওয়া কঠিন সমর্থকদের কাছে। কেন এমনটা হলো? উত্তরটা ডুমিনি নিজেও জানেন না, 'পুরো আসরে আমরা ছন্নছাড়া পারফর্ম করেছি। এর কারণ খুঁজে বের করা আমার পক্ষে অসম্ভব। আমরা পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নিয়ে এসেছিলাম, মানসিকভাবেও প্রস্তুত ছিলাম।'

কোনো ম্যাচ না খেলেই বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে গেছেন দলের সেরা পেসার ডেল স্টেইন। চোট ভুগিয়েছে লুঙ্গি এনগিডি, অ্যান্ডিলে ফেলুখায়ো, ফ্যাফ ডু প্লেসি, ডেভিড মিলারসহ কয়েকজনকে। ইনজুরির কারণে এই পর্যন্ত একটি ম্যাচেও পূর্ণশক্তির দল নিয়ে মাঠে নামতে পারেনি প্রোটিয়ারা। আজ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষের ম্যাচেও তাই হচ্ছে। বাংলাদেশ সময় বিকেল সাড়ে তিনটায় মিলারকে ছাড়াই লঙ্কানদের মুখোমুখি হবে দক্ষিণ আফ্রিকা।

এই ম্যাচ দিয়ে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের শেষের শুরু হবে ডুমিনির। দেশের জার্সিতে এই বিশ্বকাপ দিয়েই শেষ ওয়ানডে ম্যাচটি খেলবেন তিনি। তবে টি-টোয়েন্টি ফরমেটে খেলে যাবেন প্রোটিয়া অলরাউন্ডার। ডুমিনির বিশ্বাস বিশ্বকাপের পর ভালোভাবেই ফিরে আসবে তার দল দক্ষিণ আফ্রিকা। ওয়ানডে ক্যারিয়ারের সম্ভবত শেষ সংবাদ সম্মেলনে এমনই আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তিনি।

দেশকে শুভকামনা জানিয়ে ডুমিনি বলেছেন, 'দেশের হয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রতিনিধিত্ব করা অনেক সম্মানের। জাতীয় দলের সঙ্গে অনেক মানুষের আবেগ মিশে থাকে। কিন্তু এমন বাজে পারফর্ম করে বিদায় নেওয়ায় আমি নিজেও লজ্জিত। তবে এই দলটার ওপর আমার বিশ্বাস আছে। আশা করছি আরো শক্তিশালী হয়ে ফিরে আসবে তারা।'