জয়বন্ধ্যাত্ব ঘুচিয়ে স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখল ইংল্যান্ড

আশা জাগিয়েও পারল না ভারত। ইংল্যান্ডের রান পাহাড়ে চাপা পড়ল বিরাট কোহলির দল। আজ বার্মিংহামে ইংলিশদের ছুড়ে দেওয়া ৩৩৭ রানের চ্যালেঞ্জের জবাব নেমে নির্ধারিত ওভারে পাঁচ উইকেটে ৩০৬ রান তুলতে সক্ষম হয় ভারত। ইংলিশরা জিতেছে ৩১ রানে। তাতেই ভারতের বিরুদ্ধে বিশ্বকাপে দুই দশকের জয়বন্ধ্যাত্ব ঘুচিয়েছে তারা।

দারুণ এই জয়ে সেমিফাইনালের আশাটা ভালোভাবেই বেঁচে থাকলো ইংল্যান্ডের। আট ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে পাকিস্তানকে টপকে টেবিলের চার নম্বরেও উঠে এসেছে তারা। শেষ ম্যাচে নিউজিল্যান্ডকে হারাতে পারলে সরাসরি সেমিফাইনালে উঠে যাবে স্বাগতিক শিবির। যাদের গত বিশ বছরে হারাতে পারেনি ইংলিশরা।

তাতে কী! এই ম্যাচের আগে ভারতকেও তো গত দুই দশকে হারায়নি তারা। ইংলিশদের জন্য শেষ চারে যাওয়া যতটা সহজ ততটাই কঠিন হয়ে গেল বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের জন্য। দুই দলই চাপে থাকল ভারত হেরে যাওয়ায়। তাই পরের দুই ম্যাচে দল দুটোকে শুধু জিতলেই চলবে না, অমঙ্গল কামনা করতে হবে ইংল্যান্ডের জন্য।

টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে উড়ন্ত সূচনা করে ইংল্যান্ড। উদ্বোধনী জুটিতে ২২ ওভারে ১৬০ রান তুলে ফেলেন দুই ওপেনার জেসন রয় ও জনি বেয়ারস্টো। পরের ওভারের প্রথম বলেই জুটি ভাঙে রয় ৬৬ রানে বিদায় নিলে। ৫৭ বলের ইনিংসে সাতটি চার ও দুটি ছক্কা মেরেছেন তিনি।

সঙ্গী হারালেও সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন বেয়ারস্টো। দলীয় সংগ্রহ দুশো ছাড়াতেই সাজঘরে ফিরেছেন তিনি। ফেরার আগে ভারতীয় বোলারদের বেধড়ক পিটিয়েছেন তিনি। ১০৯ বলে ১১১ রানে আউট হয়েছেন ইংলিশ ওপেনার। বিধ্বংসী ইনিংসটা তিনি সাজিয়েছেন ১০টি চার ও ছয়টি ছক্কার সুবাদে।

পরে দুই ওপেনারের দেখানো পথে হেঁটেছেন জো রুট ও বেন স্টোকস। ৫৪ বলে ৪৪ রানে আউট হয়েছেন রুট। সমান বলে ৭৯ রানের বিস্ফোরক ইনিংস খেলেছেন স্টোকস। তার ইনিংসে ছিল ছয়টি চার ও তিনটি ছক্কার মার। শেষ দিকে আট বলে ২০ রান করেন জস বাটলার। ইনিংসে দুটি ছক্কা ও একটি চার মেরেছেন তিনি।

অথচ ৩১তম ওভারে দুশো ছোঁয়া ইংল্যান্ড সাড়ে তিন শ ছাড়াবে বলে ধারণা করা হচ্ছিল। কিন্তু শুরুর মতো শেষ দিকে তাদের রানের চাকার গতি মন্থর হয়ে আসে। ভারতের বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে সফল মোহাম্মদ সামি ৬৯ রানে পাঁচ উইকেট নিয়েছেন। একটি করে শিকার কুলদীপ যাদব ও জাস্প্রিত বুমরাহর।

ইংল্যান্ডের ছুড়ে দেওয়া পাহাড়সম লক্ষ্যমাত্রায় ব্যাট করতে নেমে স্রোতের বিপরীতে ব্যাটিং শুরু করে ভারত। এমনিতেই মন্থর গতির শুরু, তারওপর শুরুতেই তারা ধাক্কা খায় ওপেনার লোকেশ রাহুলের উইকেট হারিয়ে। নয় বল খেললেও রানের খাতা খুলতে পারেননি লোকেশ।

ধাক্কাটা দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে কাটিয়ে ওঠেন রোহিত শর্মা ও বিরাট কোহলি। দুজন মিলে গড়ে তোলেন ১৩৮ রানের জুটি। দলীয় ১৪৬ রানে দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হন কোহলি। ৭৬ বলে ৬৬ রান করেছেন ভারতের অধিনায়ক ফিরে গেলেও আশা দেখাতে থাকেন রোহিত।

ধীরে সুস্থ শুরু করা রোহিত সময় যতোই গড়িয়েছে ততোই হাত খুলে মেরেছেন। কিন্তু দল দুশো না করতেই আউট হয়ে যান তিনি। ফেরার আগে ১০৯ বলে ১৫টি চারে ১০২ রান করেছেন ভারতীয় ওপনোর।

উইকেট জমিয়ে রাখলেও ভারতের আস্কিং রেটের চাপ ক্রমেই বাড়ছিল। পরিস্থিতির দাবি মেটাতে গিয়ে ৩২ রানে ক্যাচ তুলে বিদায় নিয়েছেন ঋষভ প্যান্ট। ৩৩ বলে ৪৫ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলে গেছেন হার্দিক পান্ডিয়া। বিফলে গেছে ধোনির ৩১ বলে ৪২ রানের অপরাজিত ইনিংসও।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ইংল্যান্ড: ৩৩৭/৭, ৫০ ওভার 
ভারত: ৩০৬/৫, ৫০ ওভার

ফল: ইংল্যান্ড ৩১ রানে জয়ী
ম্যাচ সেরা: জনি বেয়ারস্টো