বাংলাদেশ-ভারত: বিতর্কের সাতকাহন

আজ বার্মিংহামে বিশ্বকাপে বাঁচা-মরার ম্যাচে ভারতের মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ। ম্যাচটা মাশরাফিদের কাছে যেমন টিকে থাকার উপলক্ষ্য, তেমনি কোহলিদের জন্য সেমিফাইনাল নিশ্চিত করার সুযোগ। বাংলাদেশ-ভারত লড়াই মানেই সরব সোশ্যাল মিডিয়া। যেখানে উঠে এসেছে পুরনো সাত বিতর্ক। এক নজরে দেখে নেওয়া ইস্যুগুলো:

রুবেলের 'নো' বল: গত বিশ্বকাপে রোহতি শর্মাকে আউট করেছিলেন রুবেল। কিন্তু অবিশ্বাস্যভাবে 'নো' বল ডেকে বসেন আম্পয়ার আলিম দার। ৯০ রানে থাকা রোহিত বেঁচে যান। এনিয়ে তুমুল বিতর্কের সৃষ্টি হয়। রোহিত ওই সময়ে আউট হলে ম্যাচের ফলটা অন্যরকম হতে পারতো। টিভি রিপ্লেতে দেখা যায় রুবেলের ফুলটস বল কোমরের নিচেই ছিল। আম্পায়ারের ওই বাজে সিদ্ধান্তটা ম্যাচটাকে করেছিল কলঙ্কিত।

ধোনিদের মাথার চুল ছাঁটানো বিজ্ঞাপন: ২০১৫ সালে বিশ্বকাপের বছরই ভারতকে ডেকে এনে ২-১ ব্যবধানে ওয়ানডে সিরিজে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। পরে দেশের এক বিজ্ঞাপনে দেখা যায় কোহালি-ধোনিসহ ভারতীয় ক্রিকেটারদের মাথার চুল অর্ধেক ছেঁটে দেওয়া হয়েছে। ওই বিজ্ঞাপন নিয়ে ভালোই বিতর্ক হয়েছিল।

মুস্তাফিজকে ধোনির ধাক্কা: ভারতের বিপক্ষে হোম সিরিজে পিচে মুস্তাফিজকে ধাক্কা দিয়েছিলেন রান নেওয়ার জন্য ছুটতে থাকা ধোনি। রিপ্লেতে দেখা যায় ফিজকে ইচ্ছে করেই ধাক্কা দিয়েছিলেন ভারতের উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান। জবাবটা বল হাতেই দিয়েছিলেন কাটার মাস্টার। বিষাক্ত স্পেলে তুলে নেন বেশ কয়েকটা উইকেট। যদিও ম্যাচ শেষে ধোনি-ফিজ দুজনই শাস্তি পেয়েছেন। কর্তন করা হয় তাদের ম্যাচ ফি।

তাসকিনের হাতে ধোনির কাটা মুণ্ডু: এশিয়া কাপ ফাইনালের আগে বাংলাদেশি এক ভক্ত কাণ্ডটা ঘটিয়েছিলেন। তাসকিন আহমেদের হাতে ধোনির কাটা মুণ্ডুর ছবি বানিয়ে পোস্ট করেন ফেসবুকে। যা ভাইরাল হতে সময় লাগেনি। সোশ্যাল মিডিয়ায় এনিয়ে আবার তীব্র প্রতিবাদ জানায় ভারতীয়রা।

নিদাহাস ট্রফির 'নাগিন নৃত্য': গত বছর নিদাহাস ট্রফিতে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে ফাইনালে ওঠার পর নাগিন নৃত্যে মেতে ওঠে বাংলাদেশ দল। পরে ফাইনালে শেষ বলে ভারতের কাছে হেরে যায় টাইগাররা। ওই সময় ক্ষুব্ধ শ্রীলঙ্কার সমর্থক ও ভারতীয়রা পাল্টা নাগিন নৃত্য পরিবেশন করেন। এনিয়ে ভালোই বিতর্ক দেখা দিয়েছিল।

মুশফিকের কাণ্ড: ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সেমিফাইনালে ভারতকে বিদায় করে দেয় চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ভারতীয়দের কাছে হেরে আবার বিদায় নিয়েছিল টাইগাররা। কোহলি-ধোনিদের বিদায়ে তাই ভীষণ উচ্ছ্বসিত হয়েছিলেন মুশফিকুর রহিম। টুইটারে তিনি লিখেছেন, 'ভারত হেরেছে, কী আনন্দই না হচ্ছে। এটাই তো চেয়েছিলাম।' বিতর্কিত এই মন্তব্যের পর দ্রুতই মুশফিকের পোস্ট ভাইরাল হয়। মুশফিক ক্ষমা চাইলেও বিতর্ক থামেনি।

আইসিসি প্রেসিডেন্ট মুস্তফা কামালের পদত্যাগ: আইসিসির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী চ্যাম্পিয়ন দলকে বিশ্বকাপের ট্রফি প্রদান করবেন প্রেসিডেন্ট। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে ২০১৫ ফাইনাল শেষে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট মুস্তফা কামালকে পুরষ্কার বিতরণী মঞ্চে ডাকাই হয়নি। কামালসহ সব বাংলাদেশি ক্ষোভে ফেটে পড়েন। আইসিসি প্রেসিডেন্ট শেষ পর্যন্ত পদত্যাগ করেন। যার নেপথ্যে ছিল তৎকালীন আইসিসি চেয়ারম্যান ভারতের ক্রিকেট প্রশাসক এন শ্রী নিবাসন। শ্রীনির কারণেই সেদিন ট্রফি দেওয়া থেকে বঞ্চিত হয়েছিলেন মুস্তফা কামাল।