ইংল্যান্ড নাকি নিউজিল্যান্ড?

প্রস্তুত লড়াইয়ের মঞ্চ। প্রস্তুত শিরোপা প্রত্যাশি দুই দল। অপেক্ষা কেবল বল মাঠে গড়ানোর। অপেক্ষাটা মাত্র কয়েক ঘণ্টার। আজ বিকেলেই যে রোমাঞ্চকর ফাইনালে মুখোমুখি হচ্ছে স্বাগতিক ইংল্যান্ড ও সফরকারী নিউজিল্যান্ড। এই ম্যাচের ফল থেকে ক্রিকেট বিশ্বকাপ পাবে নতুন কোনো চ্যাম্পিয়ন দলকে।

ইংল্যান্ড বনাম নিউজিল্যান্ড

কার হাতে উঠবে ক্রিকেটের আগামী দিনের রাজদণ্ড? এই শ্রেষ্ঠত্বের জন্য মরণকামড় দেবে দুই দলই। ইতোমধ্যে তিনটি ফাইনাল হেরেও এই শ্রেষ্ঠত্বের স্বাদ পায়নি ইংল্যান্ড। নিউজিল্যান্ড ছয়বার হেরে সেমিফাইনালের চোকার্স অপবাদ ঘুচিয়েছে গত আসরে। কিন্তু প্রথমবার ফাইনালে উঠেও অস্ট্রেলিয়ার কাছে স্বপ্ন জমা দিয়ে এসেছে কিউইরা।

ইতিহাসে প্রথমবারের মতো টানা দুই বিশ্বকাপের ফাইনালে নেই এশিয়ার কোনো প্রতিনিধি। টুর্নামেন্টে এশিয়ার শেষ দল ভারতকে ১৮ রানে নাটকীয়ভাবে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছে নিউজিল্যান্ড। অস্ট্রেলিয়াকে গুঁড়িয়ে ইংলিশরা নিয়েছে বদলা; চতুর্থবারের মতো কেটেছে ফাইনালের টিকিট।

বাংলাদেশ সময় আজ বিকেল সাড়ে তিনটায় অনুষ্ঠিত হবে বহুল প্রতীক্ষার ফাইনাল। বিশ্বকাপের শেষ মহারণটি সরাসরি সম্প্রচার করবে বিটিভি, গাজী টিভি, মাছরাঙা ও স্টার স্পোর্টস। লর্ডসের এই মহারণে ফেভারিট নির্ধারণ করা কঠিন। শিরোপা জয়ের স্বপ্ন দেখছে দুই দলই।

ইংলিশদের আশা দেখাচ্ছে ব্যাটসম্যানদের দারুণ ফর্ম। সঙ্গে বোলারদের আগুনঝরা পারফরম্যান্স। সেই তুলনায় নিউজিল্যান্ডের ব্যাটিং বিভাগ পুরো আসরেই নিজেদের হারিয়ে খুঁজেছে। আসরজুড়ে কিউইদের টেনেছে কেন উইলিয়ামসনের ব্যাটিং দৃঢ়তা ও দুর্দান্ত নেতৃত্ব এবং রস টেলরের অভিজ্ঞার প্রতিফলন।

সবশেষ ১৯৯৬ সালে নতুন কোনো চ্যাম্পিয়ন দল হিসেবে শ্রীলঙ্কাকে পেয়েছিল ক্রিকেট বিশ্ব। ওই আসরে অনেক ঘাত-প্রতিঘাতের পর বাজিমাত করেছিল লঙ্কনরা। জল্পনা চলছে এবার নিউজিল্যান্ড কি ৯৬ এর শ্রীলঙ্কা? আন্ডারডগ তকমা নিয়েই যে বিশ্বকাপের এতটা পথ পাড়ি দিয়েছে রাগবির দেশটি। তা ছাড়া যথেষ্ঠ ভাগ্যের সহায়তা পেয়েছে তারা।

রবিন লিগ রাউন্ডেই সুতোয় ঝুলে গিয়েছিল ইংল্যান্ডের ভাগ্য। পরের দুই ম্যাচ জিতে ইংলিশরা বাঁচিয়ে রেখেছে স্বপ্ন; উঠেছে শেষ চারে। জয় দুটি এমন দুটি দলের বিপক্ষেই পেয়েছেন মরগানরা যাদের বিরুদ্ধে গত প্রায় দুই দশকে বিশ্বকাপে জেতেনি ইংল্যান্ড। সেই অসাধ্য সাধন করেছে তারা। এবার ইতিহাসের দেয়াল ভাঙার চ্যালেঞ্জ স্বাগতিকদের।

সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সে দুই দলের অবস্থান প্রায় একই জায়গায়। দুই দলই শেষ পাঁচ ম্যাচের তিনটিতে জিতেছে। জয় দুটিতে। উভয় দলেরই স্বপ্ন এখন আর একটি জয়। যা তাদের বহু দিনের স্বপ্নপূরণ করবে। স্বপ্নপূরণের এই ম্যাচে দুই দলই সম্ভাব্য সেরা দল নিয়ে মাঠে নামতে পারছে।

নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে ইতিহাসও আজ ইংল্যান্ডের আরেক প্রতিপক্ষ। সঙ্গে স্বাগতিক দল হিসেবে প্রত্যাশার বাড়তি চাপ। চাপগুলো মরগানরা সামলে নিতে পারবেন তো? এ যাত্রায় তাদের আশা দেখাচ্ছে কিউইদের সঙ্গে মুখোমুখি লড়াইয়ের ফলাফল। ওয়ানডেতে সবশেষ নয়বারের দেখায় সাতবারই নিউজিল্যান্ডকে হারিয়েছে তারা।

আশা দেখতে পারে নিউজিল্যান্ডও। লর্ডসের এই মাঠে শেষ দুইবারের লড়াইয়ে দুবারই ইংলিশদের বিরুদ্ধে জয় তুলে নিয়েছে কিউইরা। আরেকটা তথ্য হচ্ছে- লর্ডসে যে চারটি ফাইনাল হয়েছে তার সবকটিই জিতেছে অতিথি দল। নিউজিল্যান্ডের সামনে এবার সেই ধারায় হাঁটার সুযোগ।

সম্ভাব্য একাদশ: ইংল্যান্ড: জেসন রয়, জনি বেয়ারস্টো, জো রুট, ইয়ন মরগান (অধিনায়ক), বেন স্টোকস, জস বাটলার (উইকেটরক্ষক), ক্রিস ওকস, লিয়াম প্লাঙ্কেট, আদিল রশিদ,জোফরা আর্চার, মার্ক উড।

নিউজিল্যান্ড: মার্টিন গাপটিল, হেনরি নিকোলস, কেন উইলিয়ামসন (অধিনায়ক), রস টেলর, টম লাথাম (উইকেটরক্ষক), জিমি নিশাম, কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম, মিচেল স্যান্টনার, ম্যাট হেনরি, ট্রেন্ট বোল্ট, লোকি ফার্গুসন।