মুসলিম যুবককে পিটিয়ে হত্যা, হৃদরোগে মৃত্যু বলল পুলিশ

ভারতের ঝাড়খণ্ডে চোর অপবাদে পিটিয়ে হত্যা করা এক মুসলিম যুবকের মৃত্যুকে হৃদরোগ আক্রান্ত মৃত্যু বলে চালিয়ে দিয়েছে সেখানকার পুলিশ। পাশাপাশি এ ঘটনায় গ্রেপ্তার করা ১১ জনের বিরুদ্ধে দায়ের করা অভিযোগও তুলে নেয়া হয়েছে।

জানা যায়, গত জুন মাসে ঝড়খণ্ডের খারসাওয়ানে তাবরেজ আনসারি নামের এক মুসলিম যুবককে চোর অপবাদে ১৮ ধরে নৃশংসভাবে পেটানো হয়। ‘জয় শ্রীরাম’ ও ‘জয় হনুমান’ বলতেও বাধ্য করা হয় ২৪ বছর বয়সী ওই যুবককে। পরে পুলিশের হেফাজতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় সে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ ঘটনার একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে পুরো ভারত জুড়ে নিন্দার ঝড় ওঠে।

এদিকে ঝাড়খণ্ডের পুলিশ জানায়, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী তাবরেজ হৃদরোগে আক্রন্ত হয়ে মারা গেছেন। মেডিকেল রিপোর্টে গণপিটুনির পক্ষে সমর্থনযোগ্য কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তাই হত্যাকাণ্ডের অভিযোগে আটককৃত ব্যক্তিদের দোষী সাব্যস্ত করা যায়নি।

ঝাড়খণ্ডের পুলিশ কর্মকর্তা কার্তিক এস বলেন, তাবরেজ আনসারির দুটি ময়না তদন্ত রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে। দুটিতে তাবরেজের মৃত্যুর কারণ হিসেবে হৃদরোগের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। প্রথমবার ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে দ্বিতীয়বার মতামত চাওয়া হয়। কিন্তু তারাও একিই মতামত দেন।

তাবরেজ আনসারির পরিবারের অভিযোগ, তাবরেজ পুনেতে দিনমজুরের কাজ করতেন। ঈদে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সময় কাটতে গ্রামে আসেন। তখন তার বিয়ের আয়োজনও করা হয়। কিন্তু গ্রামের কয়েকজন ব্যক্তি তাকে চোর অপবাদ দিয়ে নির্মমভাবে নির্যাতন করে। গণপিটুনিতে তার মাথা থেঁতলে দেওয়া হয়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশ সুপার জানান, পুলিশ শুধুমাত্র ময়নাতদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারবে।

প্রসঙ্গত, তাবরেজ আনসারির মৃত্যুর পর তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। সারাইকেলা-খারওয়ানের জেলা প্রশাসক অঞ্জনেউল দোডের নেতৃত্বে দলটি প্রথমিক তদন্ত শেষে জানায়, তাবরেজের মৃত্যুর জন্য তদন্তকারী চিকিৎসক এবং পুলিশ উভয়ই দায়ী।

জুলাই মাসে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, পুলিশ ঘটনাস্থলে দেরিতে পোঁছায়। আর চিকিৎসকরা তাবরেজের মাথার খুলির আঘাতের সঠিক পরিমাণ শনাক্ত করতে পারেনি।