সামরিক সক্ষমতায় কে এগিয়ে, পাকিস্তান না ভারত?

কাশ্মির ইস্যুতে পাকিস্তান ও ভারতের যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করছে। সীমান্তে প্রতিনিয়ত চলছে গোলাগুলি। ক্ষয়ক্ষতিও হচ্ছে উভয়দেশের। গত ৫ আগস্ট জম্মু-কাশ্মির রাজ্যের মর্যাদা কেড়ে নেয় ভারত সরকার। এর পর মুসলিম অধ্যুষিত ওই রাজ্যে কারফিউ জারি করে রেখেছে ভারত। বন্ধ রয়েছে মোবাইল ও ইন্টারনেট। সব মিলিয়ে কাশ্মিরের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিভাবে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে।

কাশ্মিরিদের এই দুর্দশার পাশে দাঁড়িয়ে নিজেকে ‘কাশ্মিরের দূত’ হিসেবে অভিহিত করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। একাধিকার পারমাণবিক যুদ্ধের হুমকিও দিয়েছেন। সর্বশেষ রুশ গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, দুটি পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্রের মধ্যে যুদ্ধ মানেই পারমাণবিক যুদ্ধ। এ জন্য বিশ্ববাসীকে হুঁশিয়ারিও করেন তিনি।

দুই দিন আগে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কোরেশি বলেছেন, পাকিস্তান-ভারতের মধ্যে আকস্মিক যুদ্ধ লেগে যেতে পারে। অন্যদিকে, ভারতও বসে নেই। তারাও যুদ্ধের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছে।

ভারত ও পাকিস্তানের সামরিক সক্ষমতা নিয়ে স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট এবং ওয়াশিংটনের সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ যে রিপোর্ট তৈরি করেছে তার বরাত দিয়ে দুই দেশের সামরিক সক্ষমতার একটি তুলনা তুলে ধরেছে ভারতীয় গণমাধ্যম। বলা হয়েছে-

২০১৮ সালে ভারত প্রতিরক্ষা খাতে বরাদ্দ করে চার লক্ষ কোটি টাকা। যা দেশের মোট জিডিপির ২.১ শতাংশ। আর পাকিস্তান ৭৮,২১৬ কোটি টাকা বরাদ্দ করে, যা সে দেশের জিডিপির ৩.৬ শতাংশ।

১৯৯৩ থেকে ২০০৬ সালের মধ্যে ১০ বছরে পাক সরকারের বার্ষিক খরচের ২০ শতাংশ গেছে প্রতিরক্ষা খাতে। ওই একই সময়কালে ভারতের ক্ষেত্রে এই পরিমাণ ১২ শতাংশ।

ভারতে প্রায় নয় রকমের কার্যকর ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে। এর মধ্যে অগ্নি-৩-র পাল্লা প্রায় ৩ হাজার কি.মি. ও ৫ হাজার কি.মি.। পাকিস্তান চীনের সাহায্য নিয়ে ছোট ও মাঝারি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করেছে। সবচেয়ে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র শাহিন-২ প্রায় দুই হাজার কি.মি. যেতে পারে একটানা।

পাকিস্তানের কাছে ১৪০-১৫০টা পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে। আর ভারতের কাছে রয়েছে ১৩০-১৪০টি পারমাণবিক অস্ত্র।

ভারতে রয়েছে ১২ লক্ষ পদাতিক বাহিনী, ৩৫৬৫ যুদ্ধ ট্যাঙ্ক, ৩১০০ কামানবাহী গাড়ি, ৩৩৬টি অস্ত্রসজ্জিত গাড়ি, ৯৭১৯ কামান। পাকিস্তানের হাতে রয়েছে ৫ লক্ষ ৬০ হাজার পদাতিক বাহিনী, ২৪৯৬টি ট্যাঙ্ক, ১৬০৫টি অস্ত্রসজ্জিত গাড়ি, ৪৪৭২ কামান। এর মধ্যে রয়েছে ৩৭৫টি স্বয়ংক্রিয় হাউয়িৎজার কামান।

প্রায় দেড় লক্ষ সেনা, ৮১৪টি যুদ্ধবিমান রয়েছে ভারতীয় বিমানবাহিনীর কাছে। পাকিস্তানের কাছে রয়েছে ৪২৫টি সামরিক বিমান। যার মধ্যে রয়েছে চীনের এফ-৭ পিজি ও আমেরিকার এফ১৬-ফ্যালকন জেট।

ভারতীয় নৌবাহিনীর ক্ষেত্রে বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজ ছাড়াও রয়েছে ১৬টি ডুবোজাহাজ, ১৪টি ডেস্ট্রয়ার, ১৩টি ফ্রিগেট, ১০৬টি নজরদারি ও উপকূল এলাকায় যুদ্ধ করতে সক্ষম সশস্ত্র জাহাজ, ৭৫টি যুদ্ধ জাহাজ, রয়েছে ৬৭ হাজার সেনাও।

পাকিস্তানের রয়েছে ৯টি ফ্রিগেট, ৮টি সাবমেরিন, ১৭টি নজরদারি ও উপকূল এলাকায় যুদ্ধ করতে সক্ষম এমন জাহাজ এবং ৮টি যুদ্ধজাহাজ।

উল্লেখ্য, এসবে কোনো তথ্যই ভারত বা পাকিস্তান সরকারের দেওয়া নয়। সংস্থা দুটি তাদের বিভিন্ন সূত্র ব্যবহার করে ওই প্রতিবেদন তৈরি করেছে।