প্রধানমন্ত্রীকে ছাড়াই বাজওয়ার বৈঠক, পাকিস্তানে কি ফের অভ্যুত্থান!

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে বাদ দিয়ে রাওয়ালপিন্ডিতে একটি বৈঠক করেছেন দেশটির সেনাপ্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়া। অন্যদিকে, দেশটির কয়েকটি ইসলামিক দল সরকার পতনের ডাক দিয়েছে। ফলে আশঙ্কা করা হচ্ছে- ফের কি সামরিক অভ্যুত্থানের পথে এগুচ্ছে পাকিস্তান?

পাক সামরিক বাহিনীর কোর কমান্ডারদের সঙ্গে বাজওয়ার বৈঠক

তবে ভারতের কয়েকটি গণমাধ্যম এ ধরনের প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। কাশ্মির ইস্যুতে পাক-ভারত উত্তেজনার মধ্যে ইমরান খান যখন কূটনৈতিক সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করছেন এবং সম্প্রতি জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে বিষয়টি সফলভাবে উপস্থাপনের কারণে দেশে প্রশংসিত হয়েছেন তখন এ ধরনের প্রতিবেদন প্রকাশ করলো ভারতীয় গণমাধ্যম।

প্রতিবেদনগুলোতে বলা হয়েছে, পাকিস্তান সেনাপ্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়া একটি গোপন বৈঠক সেরেছেন। সেই বৈঠকে ছিলেন দেশটির শীর্ষস্থানীয় শিল্পপতিরা। কিন্তু অদ্ভুতভাবে সেখানে উপস্থিত ছিলেন না পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।

এতে বলা হয়েছে, বুধবারের ওই বৈঠকের পরই পাক সেনাবাহিনীর সমস্ত বিভাগের কর্মী ও জওয়ানদের ছুটি বাতিল ঘোষণা করা হয়। তাদের প্রত্যেককে কাজে যোগ দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়। ১১১ ইনফ্যান্ট্রি ব্রিগেডের সব অফিসারদেরও এই একই নির্দেশ পাঠানো হয়।

পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ইন্টার সার্ভিস পাবলিক রিলেশন বা আইএসপিআরের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার স্বার্থেই ওই বৈঠক করা হয়েছে।

কিন্তু প্রশ্ন উঠছে যদি তাই হয়, তবে এই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে কেন উপস্থিত ছিলেন না দেশের প্রধানমন্ত্রী? অবশ্য পাক প্রধানমন্ত্রী একটি একটি সেমিনারে যোগ দিতে গেছেন বলে যদিও জানানো হয়।

তবে ইরানি গণমাধ্যম পার্সটুডে জানায়, রাওয়ালপিন্ডিতে সেনা সদর দপ্তরে পাক সামরিক বাহিনীর কমান্ডারদের সম্মেলনে বাজওয়া বলেন, কাশ্মিরের জনগণের আত্ম-নিয়ন্ত্রণাধিকারের প্রশ্নে পাকিস্তান কারো সঙ্গে কোনো আপস করবে না। তিনি কাশ্মিরকে পাকিস্তানের কণ্ঠনালী বলেও উল্লেখ করেন।

আইএসপিআরের বরাত দিয়ে গণমাধ্যমটি জানায়, কাশ্মির ইস্যু এবং সেখানকার জনগণের মানবাধিকার লঙ্ঘনের ব্যাপারে ভারতের ভূমিকা সম্পর্কে পাকিস্তান সরকার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের বার্ষিক অধিবেশনে যথাযথভাবে তুলে ধরেছে বলে সম্মেলনে অংশ নেয়া কমান্ডাররা স্বীকার করেন।

এ ছাড়া পাকিস্তানকে কীভাবে বৈদেশিক মদদে অস্থিতিশীল করে তোলা হচ্ছে তাও তুলে ধরা হয়। সেইসঙ্গে পাক সেনা কমান্ডাররা ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে কঠোর জবাব দেয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

ভারতীয় গণমাধ্যম আরো বলছে, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে ২৭ অক্টোবর থেকে বিক্ষোভে নামার ঘোষণা দিয়েছে দেশটির ইসলামপন্থী সংগঠনগুলো। পাকিস্তানের অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় সংগঠন জামিয়েতে উলেমার প্রধান মাওলানা ফজলুর রহমান এর নেতৃত্ব দিচ্ছেন। আর এতে সমর্থন রয়েছে দুই বিরোধী দল পিএমএল-এন ও পিপিপিরও।

উল্লেখ্য, পাকিস্তানে সেনা অভ্যুত্থান মোটেও নতুন ঘটনা নয়। ১৯৫৮, ১৯৬৯, ১৯৭৭ ও ১৯৯৯ সালে মোট চারবার দেশটিতে সেনা অভ্যুত্থানের ঘটনা ঘটেছে।