করোনার প্রভাব শেষ হওয়া নিয়ে যা বলছেন গবেষকরা

সারা বিশ্ব যেন করোনাভাইরাসের কারণে অচল হয়ে পড়েছে। বিশ্বের অনেক দেশে মানুষকে বাড়ি থেকে বের হতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। লকডাউন হয়েছে বিভিন্ন শহর। এর কারণে বিশ্ব অর্থনীতিও পড়েছে হুমকির মুখে। কথা হচ্ছে- এ দুর্যোগ কতদিন পর্যন্ত চলবে? এ নিয়ে শুক্রবার বিবিসি একটি বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

ঢাকার রাস্তায় মাস্ক কিনছেন ক্রেতারা

তারা বলছে, আগামী তিনি মাসের মধ্যে এ ভাইরাসের সংক্রমণ কমে যেতে পারে। তবে এর প্রাদুর্ভাব সম্পূর্ণ শেষ হতে সম্ভবত কয়েক বছর পর্যন্ত লাগতে পারে। বিশ্বের রাষ্ট্রগুলো নাগরিকদের ওপর নানা বিধি-নিষেধ আরোপের ফলে ভাইরাসের বিস্তার অনেকটা দমিয়ে রাখা সম্ভব হয়েছে। এসব বিধি-নিষেধ উঠে যাওয়ার পর সংক্রমণ আরো বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাছাড়া এভাবে বন্ধ অব্যাহত থাকলে সামাজিক এবং অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে মারাত্মক প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

এডিনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের সংক্রামক রোগ বিষয়ক অধ্যাপক মার্ক উলহাউজ বলেন, নিষেধাজ্ঞাগুলো উঠে গেলে মানুষকে সাধারণ জীবনে ফিরে আসার উপায় খুঁজতে হবে। যে অচলাবস্থা চলছে তা থেকে বের হয়ে আসতে তিনটি উপায় অবলম্বন করতে পারেন সাধারণ মানুষ। এর মধ্যে প্রথমটি হচ্ছে- টিকা দেয়া। দ্বিতীয়টি হচ্ছে- অতিরিক্ত মানুষ এ ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ায় মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে উঠবে। তৃতীয়টি হচ্ছে- সমাজে মানুষের আচার-আচরণে পরিবর্তন নিয়ে আসা।

শাহজালাল বিমানবন্দর টার্মিনাল দুইয়ের গেট দিয়ে বাংলাদেশে আসা যাত্রীরা বের হচ্ছেন

গবেষকরা বলছেন, করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক এখনো আবিষ্কার হয়নি। এর প্রতিষেধক আসতে ১২ থেকে ১৮ মাস সময় লাগবে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র এক ব্যক্তির দেহে পরীক্ষামূলকভাবে করোনাভাইরাসের টিকা দেওয়া হয়েছে। কার্যকর টিকা গ্রহণে ভাইরাসের সংস্পর্শে আসলেও মানুষ অসুস্থ হবে না। তাই কার্যকর টিকাই পারে এ ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে। তাছাড়া মোট জনসংখ্যার যদি ৬০ শতাংশকে টিকা দেওয়া হয় তাহলে ভাইরাসের সংক্রমণ থেমে যাবে।

প্রতিনিয়ত মানুষ এ ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হচ্ছে। বৈজ্ঞানিকভাবে মানুষ একবার কোনো রোগ থেকে সেরে উঠলে প্রাকৃতিকভাবেই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। তাই আশার বিষয় হচ্ছে- যিনি একবার করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন তার দ্বিতীয়বার আক্রান্ত হওয়ার সুযোগ কম।

করোনাভাইরাসের প্রতীকী ছবি

অধ্যাপক উলহাউজ বলেন, মানুষের আচার-আচরণে স্থায়ী পরিবর্তন নিয়ে আসতে হবে যাতে করে সংক্রমণের মাত্রা বেশি না হয়। করোনার প্রতিষেধক আবিষ্কার করা গেলে সঙ্কটের সমাধান হবে অনেকখানি। কিন্তু সবার ওপরে মানুষের আচার-ব্যবহার ও জীবন-যাপনে পরিবর্তন অবশ্যই আনতে হবে।