করোনা সন্দেহে মাকে জঙ্গলে রেখে গেল সন্তানরা!

টাঙ্গাইলে নভেল করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত সন্দেহে ৫০ বছর বয়সী এক নারীকে শাল-গজারির বনে ফেলে রেখে যান তার সন্তানরা। সোমবার সন্ধ্যার পর যেকোনো সময় জেলার সখীপুর উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের ইছাদিঘী গ্রামের বনে এ ঘটনা ঘটে। পরে দিবাগত রাত দেড়টার দিকে তাকে সেখান থেকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠায় স্থানীয় প্রশাসন।

টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের ইছাদিঘীর শাল-গজারির বন থেকে উদ্ধারের পর অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকার হাসপাতালে পাঠানো হয় ওই নারীকে। ছবি- সংগৃহীত

গজারিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য আবুল কালাম আজাদ জানান, রাত ৮টার দিকে শাল-গজারির বনের ভেতর থেকে এক নারীর কান্নার শব্দ ভেসে আসতে শোনেন স্থানীয়রা। পরে খবর পেয়ে ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল মান্না মিঞা ও এলাকাবাসীসহ বনে গিয়ে ওই নারীকে দেখতে পান। 

ওই নারীর বরাত দিয়ে তিনি আরো জানান, তার বাড়ি শেরপুেরের নালিতাবাড়ীতে। তার এক ছেলে, দুই মেয়ে এবং মেয়ের স্বামীরা গাজীপুরের সালনায় একটি তৈরি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন। তিনিসহ সবাই মিলে সেখানে একটি বাসায় ভাড়া থাকতেন। গত কয়েকদিন ধরে তার জ্বর, সর্দি, কাশি ও গলাব্যথা দেখা দিলে আশপাশের লোকজন তাদের ওই বাসা থেকে তাড়িয়ে দেন। পরে একটি পিকআপভ্যান ভাড়া করে গ্রামের বাড়ি নালিতাবাড়ী যাওয়ার পথে সন্তানরা তাকে ওই বনে ফেলে রেখে যায়।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সখীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আসমাউল হুসনা লিজা বলেন, খবর পাওয়ার পর রাত দেড়টার দিকে ওই নারীকে উদ্ধার করা হয় এবং করোনাভাইরাসের উপসর্গ থাকায় রাতেই অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকায় পাঠানো হয়। সন্তানরা নিজের মায়ের সঙ্গে কীভাবে এমন অমানবিক আচরণ করলো ভেবে পাচ্ছেন না তিনি।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা শাহীনুর আলম গণমাধ্যমকে বলেন, করোনাভাইরাসের উপসর্গ থাকায় প্রথমে ওই নারীকে রাজধানীর কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে পাঠানো হয়। কিন্তু সেখানে ভর্তির সুযোগ না হওয়ায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে সকাল ৭টার দিকে তাকে ঢামেক হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কি না জানতে নমুনা পরীক্ষা করা হবে।