করোনা ইস্যুতে বরখাস্ত ব্রাজিলের স্বাস্থ্যমন্ত্রী

মরণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব মোকাবেলায় ব্রাজিলিয়ান সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে প্রেসিডেন্ট জেইর বোলসোনারোর সঙ্গে মতবিরোধ তৈরি হয়েছে অনেকের। এর জেরেই গতকাল বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্যমন্ত্রী হেনরিক ম্যান্ডেটাকে বরখাস্ত করেন তিনি। পাশাপাশি দেশব্যাপী লকডাউন তুলে নেয়ার ঘোষণাও দিয়েছেন বোলসোনারো। খবর আল-জাজিরা।

ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জেইর বোলসোনারো

লকডাউন তুলে নেয়া প্রসঙ্গে এক ঘোষণায় ব্রাজিল প্রেসিডেন্ট বলেন, এর কারণে দেশের অর্থনীতির মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। তাই দেশব্যাপী মানুষকে বাড়িতে থাকার নির্দেশনা তুলে নিচ্ছি আমি। আপনারা যে যার কাজে ফিরে যান।

তিনি আরো বলেন, আমাদের অতি শিগগির সাধারণ জীবনে ফিরে যেতে হবে। সবার সে অবস্থায় ফিরে যেতে একটু সময় লাগবে। এক্ষেত্রে আমাদের কিছু করারও নেই। কারণ সরকার থেকে খুব বেশি সময় ধরে দরিদ্রদের জরুরি সহায়তা দেয়া সম্ভব হবে না।

ঘোষণায় ব্রাজিলিয়ান প্রেসিডেন্ট স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে বরখাস্ত নিয়ে কোনো মন্তব্য না করলেও চলমান পরিস্থিতি নিয়ে বলেন, মানব জীবন অমূল্য। কিন্তু অর্থনীতিকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরাতেই হবে। সেজন্য মানুষকে তাদের কাজে ফিরতেই হবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ব্রাজিলে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এখনো সর্বোচ্চ আকার ধারণ করেনি। এর আগেই হেনরিক ম্যান্ডেটার মতো যোগ্য একজন লোককে বরখাস্তের ঘটনা সত্যি দুঃখজনক।

ব্রাজিলের স্বাস্থ্যমন্ত্রী হেনরিক ম্যান্ডেটা

বরখাস্ত হওয়ার পর শেষ কার্যদিবসে ম্যান্ডেটা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমরা একটি যুদ্ধের শুরুতে দাঁড়িয়ে আছি। আপনাদের সর্বোচ্চ সতর্কতার সঙ্গে এর মোকাবেলা করে যেতে হবে।

আল-জাজিরা বলছে, ম্যান্ডেটার বরখাস্তকে কেন্দ্র করে দেশটির বিভিন্ন স্থানে সাধারণ মানুষ বিক্ষোভ করেছে। এক জরিপে দেখা যায়, ৭৬ শতাংশ ব্রাজিলিয়ান মনে করেন, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব মোকাবেলায় বোলসোনারোকে উপেক্ষা করে ম্যান্ডেটার নেয়া পদক্ষেপগুলো বেশ গুরুত্বপূর্ণ ও কার্যকর ছিলো। বাকি ৩৩ শতাংশ মনে করেন, প্রেসিডেন্ট যে পদক্ষেপ নিচ্ছেন তাই ঠিক। প্রেসিডেন্টকে অমান্য করে একজন মন্ত্রীর এমন কার্যক্রমই কাল হলো ম্যান্ডেটার।

ভয়ংকর এই ভাইরাসটি এখন পর্যন্ত ব্রাজিলের ৩০ হাজার ৮৯১ জন মানুষকে আক্রান্ত করেছে। কেড়ে নিয়েছে এক হাজার ৯৫২ জনের প্রাণ।