অবশেষে মুখ খুললেন উহানের সেই ল্যাবের পরিচালক

গত বছরের ডিসেম্বরের শেষ প্রান্তে মরণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঘটে চীনের উহান শহরে। পরে তা গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। মহামারিতে রূপ নেয়ার আগেই অনেকে অভিযোগ করেন, উহানের একটি ল্যাব থেকে ছড়িয়ে পড়েছে ভাইরাসটি। সেই তালিকার অন্যতম হলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এমনকি চীনকে হুমকিও দিয়েছেন তিনি। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনের কারণে চীনের ওপর বেশ চাপও তৈরি হয়েছে। এ অবস্থায় অবশেষে মুখ খুললেন উহানের সেই ল্যাবের পরিচালক ইউয়ান ঝিমিং। 

উহান ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলোজি ল্যাবে কাজ করছেন এক গবেষক

তিনি বলছেন, ল্যাব থেকে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়া একদম অসম্ভব।

গতকাল শনিবার চীনা গণমাধ্যমকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ইউয়ান ঝিমিং বলেন, উহান ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলোজি ল্যাব থেকে ভাইরাসটির সূত্রপাত একেবারেই অসম্ভব বিষয়। ল্যাবের কোনো কর্মীই এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়নি। আমরা বরাবরের মতোই যথেষ্ট সতর্কতা অবলম্বন করে কাজ করছি। ভাইরাস নিয়ে কীভাবে কাজ করতে হয়, তা আমরা ভালো করেই জানি। তাই ল্যাব থেকে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার যে অভিযোগ আসছে তা ভিত্তিহীন।

২০১৭ সালে চীন উহান প্রদেশে এই উচ্চ প্রযুক্তিসম্পন্ন ল্যাবটি তৈরি করে। সেখানে ইবোলা, সার্সের মতো বিশ্বের সবচেয়ে বিপদজ্জনক কিছু ভাইরাস নিয়ে কাজ করার কথা জানানো হয়।

উহান ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলোজি ল্যাব

ল্যাবরেটরিটি উহানে অবস্থিত হুনান সি-ফুড মার্কেট অর্থাৎ হুনানের সামুদ্রিক মাছের বাজার থেকে মাত্র ২০ মাইল দূরে অবস্থিত। ২০১৫ সালে ল্যাবটির নির্মাণ কার্যক্রম শুরু হয়েছিল। ২০১৭ সালে এর আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়। ল্যাবটি নির্মাণের উদ্দেশ্য ছিল বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর ও বিপদজ্জনক ভাইরাসগুলোর গবেষণা করে সেগুলোর প্রতিষেধক বের করা। মূলত ভাইরাস নির্মূলে বিশ্ব দরবারে চীন তাদের একটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে চেয়েছিল ল্যাবটি ব্যবহার করে। এটি চীনের সর্বপ্রথম বায়োসেফটি লেভেল-৪ (বিএসএল-৪) মানের ল্যাব। বিএসএল-৪ হলো সর্বোচ্চ বিপদজ্জনক ভাইরাস, এগুলো নিয়ে নিরাপদে কাজ করা যায় এমন ল্যাবকেই বিএসএল-৪ ল্যাব বলা হয়।

ইউয়ান ঝিমিং বলেন, ল্যাবটি নিয়ে কিছু গণমাধ্যম ইচ্ছাকৃতভাবে ভুল তথ্য ছড়িয়ে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে। বিশ্বের বিখ্যাত গণমাধ্যমের প্রতিবেদন দেখে আমি বেশ অবাক হয়েছি। তাদের ওইসব প্রতিবেদন সম্পূর্ণ অনুমান নির্ভর। এর কোনো সত্যতা নেই।