সাধারণ ছুটি, নিশেষাজ্ঞা বা লকডাউন যা বলেন না কেন, এ কারণে ঘরবন্দি মানুষ। ইতোমধ্যে বেশ কিছুদিন হয়েছে, সামনে আরো কতদিন ঘরের ভেতর থাকতে হবে তাও নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। তবে ঘরে বসে অনেকেই অনেক প্ল্যান করছেন যে, নিষেধাজ্ঞা উঠে গেলে কোথায় কোথায় যাবেন, কার কার বাড়িতে যাবেন। কী কী করবেন অথবা খাবেন- এ রকম আরো কত কি!

mask wash sneezing phone clean

কিন্তু বাস্তবটা হলো লকডাউন বা বিধি-নিষেধ উঠে গেলেও সেইস চিরচেনা ছন্দময় জীবনে ফেরার সুযোগ এখনো হবে না। এর জন্য আরো অপেক্ষা করতে হবে। সেজন্য লকডাউন বা সীমাবদ্ধতা উঠে গেলেও বেশ কিছুদিন কয়েকটি কাজ করা যাবে না। সেসব বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।

১. লকডাউন উঠে গেলেই ভাবার কোনো সুযোগ নেই যে, করোনাভাইরাস নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। বরং বিগত দিনগুলোতে হাত ধোওয়ার যে অভ্যাস গড়ে উঠেছে তা বজায় রাখুন। তাছাড়া শুধু করোনাভাইরাসের বিষয় নয়, বরং বার বার হাত ধুলে অন্য অসুখ-বিসুখও কম ছড়ায়।

২. যারা পার্টিতে না গেলে থাকতে পারেন না, তারা লকডাউন উঠে গেলেই পার্টি করতে যাবেন না। বরং আগামী কয়েক মাস মানুষের ভিড় এড়িয়ে চলাই ভালো।

wear mask to save himselfনিষেধাজ্ঞা উঠে গেলেও মাস্ক পরা অব্যাহত রাখুন

৩. লকডাউন উঠে গেলেই গুরুত্বপূর্ণ ফেস মাস্কটা ছুড়ে ফেলবেন না। ভাইরাস নিমূর্লের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না আসা পর্যন্ত মাস্কটাকে নিজের সঙ্গী হিসেবে রাখুন।

৪. যেহেতু অনেকের ক্ষেত্রেই ভাইরাসটির কোনো উপসর্গ থাকছে না। তাই মুখ না ঢেকে বা রুমাল কিংবা টিস্যু ব্যবহার ছাড়া হাঁচি-কাশি দেবেন না। প্রকাশ্য স্থানে মুখ না ঢেকে হাঁচি-কাশি দেওয়া এমনিই একটি অস্বাস্থ্যকর অভ্যাস। সুতরাং এই অভ্যাস পরিহার করার সবার জন্যই মঙ্গলের। সার্জিকাল মাস্ক না থাকলে তিন লেয়ার-যুক্ত মাস্ক বাড়িতে বানিয়েই পরতে পারেন।

৫. মাস্ক পরেই কথাবার্তা বলুন। কারণ কথা বলার সময়ও অদৃশ্য ভাইরাস নাক-মুখের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করতে পারে।

৬. আপাতত বাড়িতে বানানো খাবারই অফিসে নিয়ে যেতে পারেন। সেইসঙ্গে নিজের খাবারই খান, আপাতত শেয়ার না করাই ভালো। পাশাপাশি গোটা ফল যেমন- কলা, আপেল, আঙুর এবং খোসাসহ সিদ্ধ ডিম ইত্যাদি নিয়ে যেতে পারেন।

mobile clean with sanitigerব্যবহৃত মোবাইলসহ অন্যান্য ডিভাইস জীবাণুমুক্ত করুন

৭. টাকা-পয়সা, মোবাইল, ঘড়ি বা এ জাতীয় ডিভাইসের মাধ্যমে করোনাভাইরাস বা যেকোনো জীবাণু ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি খুব বেশি। তাই এসব বিষয় ব্যবহারের ক্ষেত্রে যথেষ্ট সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

৮. এক্ষেত্রে অফিস বা বাইরে যাওয়ার সময় মোবাইল প্লাস্টিক দিয়ে পুরে নিতে পারেন। এ ছাড়া বাজারে বা বেচাকেনার টাকা আলাদা প্লাস্টিকে মুড়িয়ে রাখতে পারেন।

৯. বাইরে থেকে ঘরে ফিরে জুতা জীবাণুনাশক দিয়ে পরিষ্কার করতে পারেন। মোজা ও পরনের কাপড় সাবান দিয়ে পরিষ্কার করতে পারেন। মোবাইলের খাপ আলাদা করে ধুয়ে নিয়ে মোবাইলটি বন্ধ করে স্যানিটাইজার দিয়ে জীবাণুমুক্ত করে নিন।

১০. বাজার, অফিস বা অন্য কোনো কাজ শেষে ঘরে ফিরে সরাসরি বাথরুমে ঢুকে গোসল করে বের হন। এমনকি ঘরের বাইরে গেলে কাছে হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখতে পারেন এবং সন্দেহজনক কিছু ধরলে হাত জীবাণুমুক্ত করতে পারেন।

hand wash regularlyনিষেধাজ্ঞা উঠে গেলেও হাত ধোওয়ার অভ্যাস বজায় রাখুন

১১. চাইলে বা সন্দেহ হলে প্রতিদিন বাড়ি ফিরে ফেসমাস্কটা সাবান দিয়ে পরিষ্কার করতে নিতে পারেন।

১২. সংক্রমণ ছড়াতে পারে কম্পিউটার বা ল্যাপটপের কি বোর্ড থেকেও। সুতরাং অন্যের ব্যবহৃত কম্পিউটার বা ল্যাপটপ ব্যবহার না করাই ভালো। কিন্তু সে সুযোগ না থাকলে স্যানিটাইজার দিয়ে জীবাণুমুক্ত করে নিতে হবে।

সর্বপরি কথা হলো লকডাউন উঠে যাওয়া মানে আগের মতো যেমন খুশি তেমন চলো করা যাবে না। প্রতি মুহূর্তে এবং প্রতিটি ক্ষেত্রে শৃঙ্খলা বজায় রাখার পাশাপাশি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে হবে। করোনাভাইরাসের টিকা বা ওষুধ আবিষ্কারের আগ পর্যন্ত এসব নিয়ম-কানুন ছাড়া ঠিক হবে না। কারণ আমাদের অসতর্কতার কারণে ভাইরাসটির ব্যাপকভাবে পুনরুত্থান ঘটতে পারে, যেটা নিয়ে সতর্ক করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও গবেষকরা।

Get the latest news on lifestyle, health, food, and more from our team of expert writers. From fitness tips and nutrition advice to travel guides and entertainment news, we cover the topics that matter most to you. Whether you're looking to improve your health, broaden your horizons, or just stay up-to-date with the latest trends, you'll find everything you need here.