আপনি পড়ছেন

গতকাল বিশ্বের মানুষ এই লকডাউন পরিস্থিতির মধ্যেও পালন করেছে মা দিবস। কিন্তু ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীর ও গাজা উপত্যকার মায়েরা তাদের মাতৃত্ব উপভোগ করতে পারেননি। কয়েক যুগ ধরেই এই অঞ্চলের মায়েদের মাতৃত্ব আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে আছে ইসরায়েলি সেনাদের অত্যাচার ও নির্যাতনের কারণে। কারো সন্তানকে তারা হত্যা করেছে, আবার কারো সন্তানকে করেছে বন্দি। 

a mother in gazaআটক সন্তানের মুক্তির দাবিতে গাজার রাস্তায় মা

গাজায় বসবাসরত মায়েদের সবচেয়ে বড় আতঙ্কের বিষয় হচ্ছে- ইসরায়েলি বাহিনী কর্তৃক নিজ সন্তানের হত্যা। হত্যা না করলেও আটক করে অনির্দিষ্টকালের জন্য কারাবন্দি করে রাখা হয়।

গতকাল মা দিবসেও গাজায় প্রতিদনকার মতো এক মা সকালে ঘুম থেকে উঠে ত্রাণের লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন। সেখান থেকে ত্রাণ নিয়ে গেলেন হাসপাতালে। ইসরায়েলি বাহিনীর গুলি ও বোমা হামলার শিকার তার সন্তান মৃত্যুশয্যায় আছে সেখানে। চিকিৎসকরা বলছেন, ওই নারীর সন্তান বেঁচে গেলেও চিরকাল তাকে পঙ্গু থাকতে হবে।

এক পরিসংখ্যান বলছে, ফিলিস্তিন ও গাজা উপত্যকায় প্রায় ৫০ হাজার পঙ্গু মানুষ আছেন- যারা বিভিন্ন সময়ে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলার শিকার হয়েছেন। এদের বেশিরভাগই ইসরায়েলি স্নাইপারদের নির্মমতার শিকার।

এতে আরো বলা হয়, ২০০০ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বরতায় ১১ হাজার ফিলিস্তিনি মারা গেছেন। এ সময় পাঁচ হাজার ৭০০ ফিলিস্তিনিকে আটক করে কারাবন্দি করা হয়েছে। এদের মধ্যে ২৫০ জন শিশু ও ৪৭ জন নারী আছে।

এই দুনিয়ায় সবচেয়ে বড় কষ্টের বিষয় হলো- একজন মায়ের সামনে প্রাপ্ত বয়স্ক এক সন্তানের মৃত্যু। কিংবা মায়ের সামনেই সন্তানকে টেনে-হিঁচড়ে এমন এক জায়াগায় নিয়ে যাওয়া যেখান থেকে তার ফিরে আসা কঠিন। কিন্তু গাজা উপত্যকায় এই দৃশ্য খুবই সাধারণ।

গত ২৩ ফেব্রুয়ারির ঘটনা, ২৭ বছরের যুবক মোহাম্মদ আল-নাইম, যাকে ইসরায়েলি সেনারা গুলি করে হত্যা করে। পরে তার মৃতদেহের ওপর চালায় অমানবিক নির্যাতন। আন্তর্জাতিক আইন, মানবাধিকার আইন কোনো কিছুরই তোয়াক্কা করেনি তারা। বুলডোজার দিয়ে ঝুলিয়ে রাখে আল-নাইমের মৃতদেহটি।

mothers gathering in gaza আটক সন্তানের মুক্তির দাবিতে গাজার রাস্তায় মায়েরা

তার মা বলেন, এর আগের দিন রাতেই সে আমাকে বলেছিল, আমরা একসাথে দুপুরের খাবার খাবো। সেই জন্য আমি মাংস রান্না করছিলাম তার জন্য। কিন্তু এক ভিডিওতে দেখলাম, তারা আমার সন্তানকে হত্যা করে তার মরদেহর ওপর অমানবিক কাজ করছে।

গাজার মায়েদের কষ্ট পরিমাপ করা আসলে দুঃসাধ্য। চিরজীবনের জন্য সন্তানকে হারানো বা ফিরে না পাওয়ার যন্ত্রণা এই দুনিয়ার সবচেয়ে বড় কষ্টের একটি। ১৯৬৭ সালের পর থেকে এই পরিণতিই দেখে আসছেন গাজা ও ফিলিস্তিনি মায়েরা।

গাজার বাসিন্দা ইয়াদ আল-জারজাউইর ইসরায়েলের গিল্বোয়া কারাগারে ২০১১ সাল থেকে বন্দি। তার ৯ বছরের জেল হয়েছিল। তার মা দীর্ঘদিন সন্তানকে বুকে জড়িয়ে ধরার আকুতি নিয়ে অপেক্ষা করেছেন। অথচ আল-জারজাউইর জেলখানা থেকে বের হয়ে আসার পর তার মা শুনলেন ছেলের মাথায় ক্যান্সারের একটি টিউমার আছে।

এ তথ্য শুনে তার মা জানান, তার সঙ্গে আমার কথা হয় না। কোনো যোগাযোগও নেই। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানতে পেরেছি, আমার ছেলের ক্যান্সার। সে কি অবস্থায় আছে আমি তাও জানতে পারছি না।

মিডল ইস্ট মনিটর বলছে, ফিলিস্তিন ও গাজা উপত্যকার অধিকাংশ মা ভুলে গেছেন মাতৃত্বের অনুভূতি। তারা ভুলে গেছেন রাতে কী করে নিশ্চিন্তে ঘুমাতে হয়।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.