টার্গেট চীন, মার্কিন প্রতিরক্ষাব্যবস্থা পাচ্ছে তাইওয়ান

মূল ভূখণ্ডের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলে অবস্থিত তাইওয়ানকে নিজেদের অংশ মনে করে চীন। সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক তৎপরতা জোরদার হওয়ায় উপকূলীয় এলাকায় সম্প্রতি বিপুলসংখ্যক সেনা ও অত্যাধুনিক সমরাস্ত্র মোতায়েন করে বেইজিং। এমন প্রেক্ষাপটে তাইওয়ানকে উপকূলীয় প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ১০০ হারপুন দিচ্ছে ওয়াশিংটন।

মার্কিন ১০০ হারপুন ক্ষেপণাস্ত্র

গতকাল সোমবার মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতর পেন্টাগন জানায়, বোয়িং নির্মিত ২৩৭ কোটি ডলারের প্রতিরক্ষাব্যবস্থা তাইওয়ানের কাছে বিক্রির অনুমোদন দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। গত সপ্তাহে উভয় দেশের মধ্যে ১০০ কোটি ডলারের ক্ষেপণাস্ত্র বিক্রির চুক্তি সই হয়।

মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতির বরাত দিয়ে রয়টার্স ও এএফপির খবরে বলা হয়, হারপুন তাইওয়ানের নিরাপত্তাব্যবস্থার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এ পদক্ষেপ ওই অঞ্চলের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, সামরিক ভারসাম্য ও অর্থনৈতিক অগ্রগতির জন্য সহায়ক হবে।

এদিকে নিজেদের নাকের ডগায় থাকা তাইওয়ানে যুক্তরাষ্ট্রের এমন পদক্ষেপ বিক্ষুব্ধ করেছে চীনকে। গতকালই দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, তাইওয়ানের কাছে অস্ত্র বিক্রির দায়ে সংশ্লিষ্ট মার্কিন কোম্পানির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে। এর মধ্যে লকহিড মার্টিন, বোয়িং ডিফেন্স, রেইথিওনের মতো প্রতিষ্ঠানও থাকছে।

এরপরই মার্কিন ও বিদেশি কোম্পানির বিরুদ্ধে চীনের প্রতিশোধ নেয়ার চেষ্টার নিন্দা জানায় মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এ ক্ষেত্রে তাইওয়ানের প্রতিরক্ষাব্যবস্থার জন্য অপরিহার্য অস্ত্র দেয়া হচ্ছে বলেও উল্লেখ করা হয়।

চীনের অত্যাধুনিক ডিএফ- ১৭ হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র

এর দিন পনেরো আগে উপকূলীয় এলাকায় চীন বিপুলসংখ্যক সেনা মোতায়েন ও অত্যাধুনিক সমরাস্ত্র পাঠিয়েছে বলে দাবি করেছে সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টে সামরিক বিশেষজ্ঞরা। তাদের এক বিবৃতির বরাত দিয়ে টাইমস অব ইন্ডিয়া জানায়, তাইওয়ান উপকূলে পুরোনো ডিএফ-১১এস ও ডিএফ-১৫এস মিসাইল সরিয়ে অত্যাধুনিক ডিএফ-১৭ হাইপারসনিক মিসাইল বসিয়েছে চীন। এ মিসাইল অনেক দূরের লক্ষ্যবস্তুতে নিখুঁতভাবে আঘাত হানতে সক্ষম।

সম্প্রতি সেনাবাহিনীকে ‘যুদ্ধের জন্য মানসিক প্রস্তুতি’ নিতে বলেছিলেন চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। এর পরই তাইওয়ানকেন্দ্রিক চীনা সেনাদের তৎপরতা দৃশ্যত বেড়ে যায়। গত ১৮-১৯ সেপ্টেম্বর চীন-তাইওয়ান সীমান্তে প্রায় ৪০টি চীনা যুদ্ধবিমান উড়েছিল। এটিকে দেশের নিরাপত্তা বাহিনীর জন্য বিপদ সংকেত বলে বর্ণনা করেন তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই ইং ওয়েন।

উপগ্রহ চিত্রের বরাত দিয়ে কানাডার কানওয়া ডিফেন্স রিভিউ জানিয়েছে, হঠাৎ করেই চীন ফুজিয়ান-গুয়ানডংয়ে মেরিন কর্পস ও রকেট ফোর্সের পরিকাঠামো শক্তিশালী করেছে। সাম্প্রতিক সময়ে তাইওয়ানের পার্শ্ববর্তী এলাকায় সামরিক তৎপরতা বাড়িয়েছে চীন। এমনকি প্রয়োজনে সেখানে হামলার চালানো হতে পারে বলেও কিছু দিন আগে বলা হয়েছিল।

এসব ঘটনা তাইওয়ানে হামলার চীনা প্রস্তুতি হিসেবে দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। কেননা, ওই অঞ্চলটিকে নিজেদের অংশ বলে দাবি করে আসছে চীন। সেখানে ইদানিং মার্কিন তৎপরতা বেড়ে যাওয়ায় সেনা অভিযান চালিয়ে দখলে নেয়ার কথা ভাবছে বেইজিং।