ভোটের ফল অমীমাংসিত হলে যা যা ঘটবে

চলমান করোনা সংকটসহ নানা কারণে এবারের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অন্য যেকোনো নির্বাচনের বেশ আলাদা হিসেবে দেখা হচ্ছে। এর মধ্যে রেকর্ড সংখ্যক ডাকযোগে বা ‘মেল-ইন’ ভোট পড়া ছাড়াও অনেকগুলো ব্যতিক্রমী ঘটনা ঘটেছে। এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে ভোটের ফলাফল অমীমাংসিত বা ঝুলে যেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন কেউ কেউ। সত্যিই যদি এমনটি ঘটে, তাহলে কী ঘটতে পারে যুক্তরাষ্ট্রে?

ডেনাল্ড ট্রাম্প ও জো বাইডেন

এর জবাব খোঁজার চেষ্টা করা হয়েছে ডয়চে ভেলের এক প্রতিবেদনে। তাতে বলা হয়, এবারের নির্বাচনে রেকর্ড সংখ্যক অর্থাৎ প্রায় ৬ কোটি ভোট ডাকযোগে বা ‘মেল-ইন’এ পড়ায় ভোটগ্রহণের পর থেকেই ফলাফল স্পষ্ট হচ্ছে না, বেশ কিছু কারণে ফল ঘোষণাও পিছিয়ে যেতে পারে, আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের।

যেসব কারণে ফল ঘোষণা পেছাতে পারে, তার মধ্যে রয়েছে- নির্বাচন সংক্রান্ত রেকর্ড সংখ্যক মামলা, রেকর্ড সংখ্যক ডাকযোগে বা ‘মেল-ইন’ ভোট পড়া, ফল সর্বোচ্চ আদালতে গড়ানো ইত্যাদি।

এবার রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ডেমোক্রাট প্রার্থী জো বাইডেন যুগ্মভাবে বিজয়ী হতে পারেন বলেও বলছেন অনেক বিশেষজ্ঞ। তাদের মতে, নির্বাচন সংশ্লিষ্ট ৪০০’র বেশি মামলা রয়েছে, যা মার্কিন নির্বাচনের ইতিহাসে প্রথম ঘটনা। এসব মামলা ছাড়া ডাকযোগে ভোটের কারণেও যুগ্ম বিজয়ী ঘোষণা হতে পারে।

এছাড়া ২০০০ সালের মতো ঘটনাও ঘটতে পাবে এবার, সর্বোচ্চ আদালত তথা সুপ্রিম কোর্ট থেকে এসেছিল সেই ফল। তবে সেই সম্ভাবনা ততটা প্রবল নয় বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

মার্কিন ভোটগ্রহণ ব্যবস্থার একটি দৃশ্য

যে কারণেই হোক, যদি নির্বাচনী ফল অমীমাংসিত থেকে যায় কিংবা কে বিজয়ী হয়েছেন, তা স্পষ্ট না হয় তাহলে অনুসরণ করা হবে মার্কিন সংবিধান। তাতে বলা আছে, আগামী ৬ জানুয়ারির মধ্যে প্রেসিডেন্ট ঠিক করবেন নবনির্বাচিত হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভ এর সদস্যরা।

এটিও যদি কোনো কারণে আটকে যায় বা সর্বোচ্চ ২০ জানুয়ারির মধ্যে করা না যায়, সে ক্ষেত্রে মীমাংসা হচ্ছে- নির্বাচিত ভাইস প্রেসিডেন্ট বা স্পিকারকে প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করা হবে। অবশ্য এমন ঘটনা উনিশ শতকের পর আর ঘটেনি যুক্তরাষ্ট্রে।

এ তো গেলো কেতাবি কথা, সেই সঙ্গে এবার নতুন করে যুক্ত হয়েছে নির্বাচনে হেরে গেলেও বর্তমান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ক্ষমতা না ছাড়ার আশঙ্কা। গত সেপ্টেম্বরে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে জবাবে তিনি বলেছিলেন, ‘আমরা দেখব কী হয়।’

এ প্রসঙ্গে মার্কিন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক এডি গোল্ডেনবার্গ বলেন, নির্বাচনী ফলে কোনো ধরনের অস্পষ্টতা দেখা দিলে, জল অতদূর গড়াতে পারে। বিশেষ করে ডাকযোগে বা ‘মেল-ইন’ ভোট এবং একাধিক আইনি জটিলতা এতে ধাক্কা দিতে পারে। তবে জনগণের রায় মেনে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর হওয়ার সম্ভাবই প্রবল বলে মনে করেন তিনি।