অবৈধভাবে মানব অঙ্গ সংগ্রহ: চীনে চিকিৎসকসহ জেলে ৬

দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করা ব্যক্তিদের দেহ থেকে অবৈধভাবে মানব অঙ্গ সংগহ করে বিক্রি করার অভিযোগে কয়েকজন চিকিৎসকসহ ছয়জনকে জেল দিয়েছে চীন, স্থানীয় মিডিয়ার বরাতে এমন একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বিবিসি।

এই গ্রুপটি মৃত ব্যক্তিদের পরিবারকে বোঝাতো যে মৃত ব্যক্তির অঙ্গ আনুষ্ঠানিকভাবে দান করা হচ্ছে। এরপর ২০১৭ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে অন্তত ১১ জনের কিডনি ও লিভার সংগ্রহ করে তারা। ঘটনাটি ঘটে আনহুই প্রদেশে।

বিবিসি জানিয়েছে, এই দলটিতে শীর্ষ পর্যায়ের চারজন চিকিৎসক আছেন, যারা মানব অঙ্গ সংগ্রহ ও সংরক্ষণ কাজে নিয়োগপ্রাপ্ত। এই দলটি বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করাদের লক্ষ্য বানাতো।

এই কাজে জড়িত ছিলেন একটি হাসপাতালের ইনটেনসিভ বিভাগের প্রধান ইয়াং সুক্সউন। তিনি মৃত ব্যক্তির পরিবারকে মৃত্য ব্যক্তির অঙ্গ দান করতে উদ্বুধ করতেন এবং পরিবার রাজি হলে একটি ফরমে পরিবারের সম্মতি নিতেন। কিন্তু এই ফরমটি থাকতো ভুয়া।

এরপর রাতের অন্ধকারে হাসপাতাল থেকে মৃত ব্যক্তির দেহ দূরে একটি অ্যাম্বুলেন্সে নেওয়া হতো। সেখানে ঘটনার সঙ্গে জড়িত চিকিৎসকরা অঙ্গচ্ছেদ করতেন। এরপর সংগ্রহ করা অঙ্গ বিভিন্ন হাসপাতালে বিক্রি করে দেওয়া হতো।

এই চক্রটি পুলিশের কাছে ধরা পড়ে যখন একজন মৃত ব্যক্তির সন্তান তাদের কার্যকলাপে সন্দেহ প্রকাশ করেন, এবং তার মায়ের অঙ্গ দান করার কাগজপত্র ঘেঁটে বুঝতে পারেন যে তাদের সাথে প্রতারণা করা হয়ে থাকতে পারে।

সন্দেহ হওয়ার পর প্রাদেশিক হাসপাতালে তার মায়ের অঙ্গ দানের কথাটি সংরক্ষিত আছে কি না, তিনি তা খুঁজতে যান এবং তিনি জানতে পারেন যে কোনো তথ্য সংরক্ষিত নেই। এরপর তিনি বেইজিংয়ে চায়না অরগ্যান ডোনেশন অ্যাডমিনিস্ট্রিটিভ সেন্টারে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন তার মায়ের অঙ্গ দানের কোনো তথ্য সংরক্ষিত নেই।

এরপর তিনি ডাক্তার ইয়াংয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং ওই চিকিৎসক তাকে “চুপ থাকার” শর্তে মোটা অংকের টাকা গ্রহণের প্রস্তাব করেন। ওই ব্যক্তি এই ঘটনা স্থানীয় একটি সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়ে দেন।

ওই ব্যক্তির নাম শি। তিনি বলেন, “কাগজপত্র দেখে বুঝতে পারি কিছু একটা ঝামেলা হয়েছে।” তিনি নিজ উদ্যোগে কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করেন।

ঘটনাটি গত জুলাই মাসের, এবং তখনই ছয়জনকে শাস্তি দেওয়া হয়। কিন্তু শি কিছুদিন আগে সংবাদ মাধ্যমের কাছে বিষয়টি প্রকাশ করেন এবং এ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়।