শার্লি এবদো-কাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত ১৪

ইসলাম ধর্মের মহানবী (সা.) এর অপমানজনক কার্টুন ছাপায় বিতর্কিত ফরাসি ম্যাগাজিন শার্লি এবদোর দপ্তরে দুই বন্দুকধারী হামলা চালায় ২০১৫ সালে। এ সময় পার্শ্ববর্তী একটি সুপার মার্কেটেও গুলি চালানো হয়। ওই ঘটনায় মোট ১৪ জনকে দোষী সাব্যস্ত করেছে দেশটির একটি আদালত।

বিচারকাজের চিত্র

ডয়চে ভেলে জানায়, অভিযুক্তদের মধ্যে পলাতক ৩ জন ছাড়া বাকি সবাই গতকাল বুধবার রায় ঘোষণার সময় আদালতে হাজির ছিলেন। তাদের ভাগ্যে কী ঘটতে যাচ্ছে, সে বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি। এদিন আদালত চত্বরে সাংবাদিক ও উৎসুক মানুষের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো।

গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, মহানবী (সা.) এর অবমাননার প্রতিশোধ নিতে হামলা চালানো হয় বলে জানায় বন্দুকধারীরা। তারা ম্যাগাজিনটির দপ্তরে প্রবেশ করেই এলোপাথারি গুলি ছুঁড়তে থাকে। এতে সেখানে থাকা সাংবাদিক ও কার্টুনিস্টরা নিহত হন।

একই সময় পার্শ্ববর্তী একটি ইহুদি সুপার মার্কেটে ঢুকেও গুলি চালায় আরেক বন্দুকধারী। এতে এক পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হন। প্রথক দুই ঘটনায় হামলাকারী ৩ বন্দুকধারীই পুলিশের গুলিতে নিহত হন।

ফরাসি পুলিশের পাহারা

ঘটনাটি সারা বিশ্বে তুমুল আলোচনার জন্ম দেয়। ঘটনা তদন্তে নেমে ফরাসি কর্তৃপক্ষ, দায়ের করা হয় হত্যা মামলাও। পরবর্তীতে ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে একাধিক ব্যক্তিকে আটক করে দেশটির পুলিশ। বলা হয়, সব মিলে ১৪ জন ঘটনার সঙ্গে যুক্ত, যাদের দোষী করলো আদালত।

এর মধ্য দিয়ে বিচারকাজ শেষ হলেও অভিযুক্তরা আদালতকে জানান, হামলাকারীদের সঙ্গে আলাপ ছিল। তবে তাদের এত বড় অপরাধের বিষয়ে তারা কিছুই জানতেন না।

রয়টার্স জানায়, মামলার ৩ আসামি পালিয়ে সিরিয়ায় গিয়ে ইসলামিক স্টেট বা আইএসে যোগ দিয়েছে বলে আদালতে জানিয়েছে ফরাসি পুলিশ। এর মধ্যে ২ জন নিহত হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। বাকি ১১ জন পুলিশের কাছে রয়েছেন।

সাংবাদিক-জনতার ভিড়

এদের মধ্যে কারো বিরুদ্ধে হামলাকারীদের বন্দুক ও কার্তুজ সরবরাহ, কারো বিরুদ্ধে হামলার ব্লুপ্রিন্ট তৈরিতে সহায়তার অভিযোগ আনা হয়। কেউ গাড়ি দিয়ে আবার কেউ রাস্তা দেখিয়ে হামলায় সাহায্য করেছেন বলে উল্লেখ রয়েছে।

সম্প্রতি সময়ে ফ্রান্সে রাষ্ট্রীয় মদদে চলছে ইসলাম ধর্ম ও মহানবী (সা.) কে অবমাননার বিভিন্ন ধরনের কার্যকলাপ। এর মধ্যেই কিছু দিন আগে ফের হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর ব্যঙ্গাত্মক কার্টুন প্রকাশ করে শার্লি এবদো। এ ঘটনায় স্যামুয়েল প্যাটি নামে এক শিক্ষককে হত্যাকে কেন্দ্র করে বিষয়টি অনেক দূর পর্যন্ত গড়ায়।