‘ইসলামি বীমা’ কি আসলেই ইসলামি?
- Details
- by নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলাদেশে প্রথম ইসলামি বীমার কার্যক্রম শুরু হয় ১৯৯৯ সালে। দেশে এখন পর্যন্ত মোট বীমা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৭৬টি। এর মধ্যে ইসলামি নামে রয়েছে ২৬টি। ২০১৮ সালে ইসলামি বীমা প্রতিষ্ঠানে প্রিমিয়াম সংগ্রহের পরিমাণ ছিলো ১ হাজার ৫২ কোটি ২ লাখ টাকা। ইন্স্যুরেন্স নিউজ বিডির সূত্র বলছে, ২০১৭ সালের মোট প্রিমিয়ামের চেয়ে ২০১৮ সালে ১১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে ইসলামি বীমা খাতে।
ইসলামি বীমা খাতে মানুষের আগ্রহ দিন দিন বাড়ার বিষয়টি অর্থনীতিবিদরা সম্ভাবনাময় দৃষ্টিতে দেখলেও শরিয়ার দৃষ্টিতে বিষয়টি মরাত্মক ক্ষতিকর বলছেন বিশ্লেষকরা। ইসলামি অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বাংলাদেশে নামে ইসলামি বীমা থাকলেও আসলে তা পুরোপুরি সুদি বীমা। প্রচলিত ইসলামি বীমার সঙ্গে ইসলামি অর্থনীতি যে ধরনের বীমার কথা বলছে, তার সঙ্গে সরাসরি সাংঘর্ষিক এমন অনেক বিষয় পাওয়া যায়।
তাছাড়া ইসলামি বীমা নাম দিয়ে সুদি বীমা চালানোর কারণে গ্রাহকরা নিশ্চিন্তে হালাল মনে করে সুদ খাচ্ছেন, এটিও ভয়াবহ রকম প্রতারণা বলে উল্লেখ করেছেন ইসলামি অর্থনীতি বিশ্লেষকরা।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউ অরলিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. এম কবির হাসান বলেন, ১৯৩৮ সালের বীমা আইন, ১৯৫৮ সালের বীমা বিধিমালা ও ১৯৭৩ সালের বীমা করপোরেশন আইনের আলোকে বাংলাদেশের বীমা ব্যবস্থা পরিচালিত হচ্ছে। কিন্তু এ তিনটির একটিও ইসলামি বীমার জন্য প্রণীত নয়। এসব আইনের কোথাও ইসলামি বীমা সম্পর্কে কিছুই বলা হয়নি।
ড. এম কবির বলেন, ২০১০ সালের ১৮ মার্চ একটি গেজেটের মাধ্যমে বাংলাদেশে ইসলামি বীমা পরিচালনার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে মাত্র। কিন্তু ইসলামি বীমা কীভাবে পরিচালিত হবে এ ব্যাপারে ওই গেজেটে কিছুই বলা হয়নি। ১৯৩৮ সালের বীমা আইনের আলোকেই ইসলামি বীমাগুলো চলছে। এ আইনের অনেক বিধির সঙ্গেই ইসলামি অর্থনীতির মৌলিক সংঘর্ষ রয়েছে।
জামেয়া শারইয়্যাহ মালিবাগ মাদরাসার মুফতি ও অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড অডিটিং অর্গানাইজেশন ফর ইসলামিক ফাইন্যান্সিয়াল ইন্সটিটিউশনের সদস্য মুফতি লোকমান হোসাইন বলেন, এ দেশে ইসলামি বীমা প্রতিষ্ঠার প্রায় দেড়যুগ পরও স্বতন্ত্র ইসলামি বীমা আইন তৈরি না হওয়াটা আমাদের জন্য দুঃখজনক। বাংলাদেশের অনেক পরে স্বাধীন হয়েছে এমন সব মুসলিম দেশেও স্বতন্ত্র তাকাফুল বা বীমা আইন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
মালশিয়ায় ১৯৮৩ সালে তাকাফুল অ্যাক্ট বা বীমা আইন পাস হয়। পাকিস্তানে ২০০৫ সালে তাকাফুল রুলস জারি হয়।
মুফতি লোকমান হোসাইন বলেন, শুধু বাংলাদেশের বীমা খাতের চিত্রই এমন নয়, বরং ইসলামি ব্যাংকিং খাতেরও একই অবস্থা। সবই চলে সুদি ও জেনারেল আইনে কিন্তু নাম দেওয়া হয়েছে ইসলামি। বাংলাদেশের মত সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম দেশের জন্য এটি বড়ই দুঃখজনক ব্যাপার।
বিদ্যমান ইসলামি বীমা সমস্যা সমাধানে করণীয় সম্পর্কে এ দুজন ইসলামি অর্থনীতি বিশ্লেষক বলেন, অতি দ্রুত ২৬টি ইসলামি বীমা প্রতিষ্ঠান একত্রিত হয়ে বাংলাদেশ সরকারের কাছে ইসলামি বীমা পরিচালনার শরয়ি নীতিমালা প্রণয়নের দাবি জানানো জরুরি। যেহেতু সরকার দেশে ইসলামি বীমাকে স্বীকৃতি দিয়েছে, তাই সরকারেরও উচিত অনতিবিলম্বে এ বীমাকে পুরোপুরি শরয়ি পদ্ধতিতে পরিচলানার উদ্যোগ নিয়ে দেশের ধর্মপ্রাণ মানুষকে ইসলামের নামে সুদ খাওয়া থেকে রক্ষা করা।
গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর
Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.
Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.