করোনাকালে একটি ওষুধের ‘তীব্র সংকট’

প্রাণঘাতী করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার আশঙ্কানজকভাবে বাড়ছে। সরকারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে এমন চিত্র দেখা যাচ্ছে। এমতাবস্থায় করোনা রোগীর চিকিৎসায় ব্যবহৃত একটি ওষুধের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।

করোনাভাইরাসের প্রতীকী ছবি

জানা গেছে, ‘অ্যাকটেমরা’ ও ‘রোঅ্যাকটেমরা’ নামে বিক্রি হওয়া ইনজেকশনটি হন্যে হয়ে খুঁজছেন রোগীদের স্বজনরা। ঢাকার বড় ওষুধের দোকানে না পাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন তারা।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ৪০০ মিলিগ্রাম (টোসিলিজুমাব) ইনজেকশনটি কোথাও না পাওয়ার কথা জানিয়ে পোস্ট দিচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা। এমনকি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের নির্দিষ্ট বিতরণ কেন্দ্রগুলোতেও মিলছে না এটি।

দেশে করোনা রোগীর সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়ে যাওয়ায় ওষুধটির চাহিদা এখন সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। এর বিপরীতে আমদানি নির্ভর হওয়ায় সরবরাহের ঘাটতি দেখা দিয়েছে।

এই সংটককে কাজে লাগিয়ে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী অতিরিক্ত মুনাফা লোটার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অননুমোদিত কিছু বিক্রেতা সামাজিকমাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিয়ে নির্ধারিত দামের অনেক বেশিতে বিক্রি করছে ওষুধটি।

রোঅ্যাকটেমরা, ফাইল ছবি

সংশ্লিষ্টরা জানান, ‘অ্যাকটেমরা’ ও ‘রোঅ্যাকটেমরা’ বাজারে পাওয়া যায় ৪০০ মিলিগ্রাম, ২০০ মিলিগ্রাম, ১৬২ মিলিগ্রাম ও ৮০ মিলিগ্রাম টোসিলিজুমাব। এর সর্বোচ্চ খুচরা দাম যথাক্রমে ৪৯ হাজার ২৪২ টাকা, ২৪ হাজার ৬২১ টাকা, ১৬ হাজার ৯২৩ টাকা ও ৯ হাজার ৮৪৮ টাকা।

এই দামের চেয়ে কিছুটা কম মূল্যে সংগ্রহ করা যায় আমদানিকারকের বিতরণ কেন্দ্রগুলো থেকে। সংকটের কারণে ওষুধটি অনেক বেশি দামে বিক্রি করার অভিযোগে পেয়েছে প্রশাসন।

গত ১২ এপ্রিল অভিযান চালিয়ে অবৈধ পথে আমদানি করা টোসিলিজুমাব বিক্রির অপরাধে ৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর ও জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা সূত্র জানায়, প্রতিভায়াল ইনজেকশন ১ লাখ ৬০ হাজার টাকায় বিক্রি করছিল তারা।

অভিযানে নেতৃত্ব দেয়া ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ডা. মোহাম্মদ আকিব হোসেন বলেন, চাহিদার কথা মাথায় রেখে বিতরণ কেন্দ্রে ওষুধের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করতে অভিযান চালানো হচ্ছে। সর্বোচ্চ খুচরা মূল্যে বিক্রির জন্য এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।

এর আগে গত বছরের ১৯ মার্চ দেয়া জাতীয় করোনা নির্দেশিকায় টোসিলিজুমাবসহ ৯টি ওষুধের সরবরার নিশ্চিত করার নির্দেশনা দেয়া হয়। চীনে করোনা রোগীদের চিকিৎসায় ব্যবহৃত এই টোসিলিজুমাব এ রোগের চিকিৎসায় কার্যকারিতা এখনো নিশ্চিত নয়।