লুইস ঝড়েও সিরিজ দ. আফ্রিকার

এভিন লুইস, ক্রিস গেইল, কাইরেন পোলার্ড, আন্দ্রে রাসেল, ডোয়াইন ব্রাভো এবং নিকোলাস পুরান। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের বিজ্ঞাপন এরা। অথচ ঘরের মাঠে এমন শক্তিধর দল নিয়েও দক্ষিণ আফ্রিকার ছুড়ে দেওয়া ১৬৮ রানের উপযুক্ত জবাব দিতে পারল না ক্যারিবীরা। বরং পাঁচ ম্যাচের সিরিজ ৩-২ ব্যবধানে হেরে গেল স্বাগতিক শিবির।

শনিবার রাতে শেষ ম্যাচে বড় সংগ্রহের আভাস দিয়ে নির্ধারিত ২০ ওভারে চার উইকেটে ১৬৮ রান করে দক্ষিণ আফ্রিকা। জবাব দিতে নেমে লুইসের ঝোড়ো হাফসেঞ্চুরির পরও দেড় শ রান করতে পারেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ। নির্ধারিত কুড়ি ওভারে নয় উইকেটে ১৪৩ রান তুলতে সক্ষম হয়। শেষ ম্যাচে সফরকারী প্রোটিয়ারা জিতল ২৪ রানে।

টস জিতে আগে ব্যাট করতে নামা দক্ষিণ আফ্রিকার লড়াকু সংগ্রহের ভিত গড়ে দিয়েছেন দুজন। কুইন্টন ডি কক ও এইডেন মার্করামের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে দেড় শ ছাড়ায় প্রোটিয়ারা। সাজঘরে ফেরার আগে দুজনই পেয়েছেন শতকের দেখা। ৪২ বলে চারটি চার ও দুই ছক্কায় ৬০ রানে আউট হন ডি কক। ৪৮ বলে তিন চার ও চার ছক্কায় ৭০ রান করেন মার্করাম।

দক্ষিণ আফ্রিকার সংগ্রহ আরো বাড়তে পারতো। কিন্তু শেষ দিকে মন্থর গতির ব্যাটিং করেন ডেভিড মিলার ও উইয়ান মুলডার। প্রথমজন ১৬ বলে ১৮ এবং দ্বিতীয়জন নয় বলে নয় রানে অজেয় থাকেন। এরচেয়েও প্রস্তর যুগের ব্যাটিং করেছেন পোলার্ড, শিমরন হেটমায়ার, গেইল এবং পুরান। তাদের ব্যাটিং দেখে বোঝার উপায় ছিল না ম্যাচটা টি-টোয়েন্টি সংস্করণের!

গ্রেনাডায় অলিখিত ফাইনালে তারকাদের ব্যাটিং ভুগিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। যা ক্যারিবীয়দের ছিটকে দিয়েছে ম্যাচ এবং সিরিজ থেকে। হেটমায়ার ৩১ বলে ৩৩, পোলার্ড ১৫ বলে ১৩, গেইল ৯ বলে ১১ এবং পুরান ১৪ বলে ২০ রানে আউট হন। অথচ ম্যাচে সহজ জয়ের পথ তৈরি করে দিয়ে গিয়েছিলেন ওপেনার লুইস। বিফলে গেল তার দুর্দান্ত হাফসেঞ্চুরি।

লুইস ঝড়ে সাত ওভারে ৬৫ রান তুলেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। খোয়া গেছে বলতে গেইলের উইকেট। অষ্টম ওভারের প্রথম বলেই লাগে মড়ক। লুঙ্গি এনগিডির বলে মার্করামের হাতে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন লুইস। ফেরার আগে ৩৪ বলে পাঁচটি চার ও তিন ছক্কায় ৫২ রান করেছেন তিনি। এরপর পোলার্ডদের কাণ্ডজ্ঞানহীন ব্যাটিংয়ের মাসুল দিয়েছে ক্যারিবীয়রা।

১৩তম ও ১৮তম ওভারে দুটি করে ছক্কা মেরে লড়াইয়ে ফেরার আভাস দিয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সেটা আভাস পর্যন্তই থেকে গেছে। বরং আস্কিং রেটের চাপে নিয়মিত বিরতি দিয়ে উইকেট খুইয়েছে ক্যারিবীয়রা। একটা পর্যায়ে অল আউট হওয়ার আশঙ্কায় পরেছিল তারা। তাবরাইজ শামসি ও রাবাদাদের দারুণ নৈপুণ্যে কঠিন হয়ে যাওয়া ম্যাচটা সহজেই জিতে নেয় প্রোটিয়ারা।

ঘরের মাঠে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে পাত্তাই পায়নি ওয়েস্ট ইন্ডিজ। হোয়াইটওয়াশ হওয়ার পর টি-টোয়েন্টি সিরিজে ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দেয় ক্যারিবীয়রা। কিন্তু কুড়ি ওভারের ক্রিকেট সংস্করণের সিরিজটিতে দারুণ শুরুর পরও শেষটায় সুন্দর সমাপ্তি টানতে পারল না উইন্ডিজ। দুটো সিরিজেরই ট্রফি নিয়ে দেশে ফিরছে দক্ষিণ আফ্রিকা।