৯/১১ হামলার নথি নিয়ে বিপাকে বাইডেন প্রশাসন!

২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর (৯/১১) নিউইয়র্কের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার ও পেন্টাগনে ভয়াবহ হামলার নথি প্রকাশ করার দাবি তুলেছেন ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা। তারা মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে নথি দেখতে চেয়েছে।

নিউইয়র্কের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে হামলা

তাদের দাবি, সৌদি আরব হামলায় সমর্থন দিয়েছিল এই প্রমাণের ব্যাপারে তারা নিশ্চিত হতে চায়। নথি যদি প্রকাশ করা না হয়, তাহলে নিহতদের স্মরণানুষ্ঠানে বাইডেনের অংশ নেওয়ার ব্যাপারে স্বজনরা ইচ্ছুক নয় বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। দ্য স্ট্রেইট টাইমস।

৯/১১ হামলার ২০ বছর পূর্তি উপলক্ষে নিহতদের স্বজন, প্রত্যক্ষদর্শী এবং যারা বেঁচে ফিরেছে তারা একটি স্মরণানুষ্ঠানে বাইডেনকে আমন্ত্রণ জানিয়ে চিঠি লেখেন গতকাল শুক্রবার। ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, ভয়াবহ ওই নারকীয় হামলার ঘটনায় কারা জড়িত এবং সৌদি আরবের মুসলমান নেতারা এ হামলায় আল কায়েদাকে সমর্থন দিয়েছিল কিনা, তা তারা জানতে চান।

এজন্য মার্কিন সরকারের কাছে হামলার ব্যাপারে যেসব নথি রয়েছে তা দেখতে চান তারা। তা না হলে ওই হামলায় নিহতদের স্মরণ সভায় বাইডেনকে অংশ নিতে দেওয়া হবে না।

চিঠিতে বলা হয়, ‘জাতীয় নিরাপত্তা’র দোহাই দিয়ে কোনো কারণ ছাড়াই ২০ বছর ধরে হামলার নথি কেন প্রকাশ করা হলো না, তা জানা জরুরি। কেন এসব তথ্য গোপন রাখা হয়েছে তার জবাবও চাওয়া হয়েছে চিঠিতে।

জো বাইডেন

চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, যদি প্রেসিডেন্ট বাইডেন তার অঙ্গীকার প্রত্যাখ্যান করেন এবং সৌদি সরকারের পক্ষ নেন তাহলে আমরা এই দাবি প্রকাশ্যে আনতে বাধ্য হব। হামলার ঘটনায় নিহতদের সম্পর্কে যে কোনো কর্মসূচি কিংবা স্মরণানুষ্ঠানে দাবিটি প্রকাশ্যে তোলা হবে।

ওয়াশিংটনের সৌদি দূতাবাস তাৎক্ষণিকভাবে এ ব্যাপারে কিছু জানায়নি। ওই চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন নাইন ইলেভেন হামলায় প্রত্যক্ষ ক্ষতিগ্রস্ত ১ হাজার ৭০০ মানুষ। নারকীয় ওই হামলায় অন্তত ৩ হাজার জন নিহত হন।

ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে বৈঠকও করেছেন হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জেন সাকি। এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট বাইডেন আগের প্রশাসনের সব গোপন ইস্যু সংরক্ষণ করার প্রতিশ্রতি দিয়েই ক্ষমতা গ্রহণ করেছেন।

রাষ্ট্রের এই গোপনীয়তা রক্ষা অগ্রাধিকারযোগ্য। তিনি বলেন, শোকাহত পরিবারগুলোর সঙ্গে অনেক বৈঠক হয়েছে। তাদেরকে গোপনীয়তা রক্ষার ব্যাপারে জানানো হয়েছে।

নাইন ইলেভেন ভুক্তভোগীরা দীর্ঘদিন ধরে নিউইয়র্ক ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার ও পেন্টাগনে হামলার কারণ খুঁজছে। তারা জানতে চায়- হামলাকারীরা কারা, কিংবা কীভাবে সৌদি সরকার এই হামলায় সহায়তা দিয়েছিল। বলা হয়ে থাকে, আল কায়েদার সঙ্গে সম্পর্কিত ১৯ ব্যক্তি এ হামলায় জড়িত। তারা কারা তা জানতে চান নিহতদের স্বজনরা।

এও বলা হয়ে থাকে, বিমান ছিনতাইকারীদের ১৯ জনের মধ্যে ১৫ জনই ছিল সৌদি নাগরিক। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রর সরকারের একটি কমিশন ওই হামলায় সৌদি সরকার অর্থ যুগিয়েছিল এর কোনো প্রমাণ পায়নি।

খবরে বলা হয়, ৯/১১ হামলায় নিহতদের ২ হাজার ৫০০ পরিবার এবং আহত ব্যক্তি, ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন বীমাকারীসহ মোট ২০ হাজার মানুষ। তারা সবাই মিলে সৌদি আরবের বিরুদ্ধে বিলিয়ন ডলারের মামলা করতে যাচ্ছে।