কাবুল হামলা: সাবেক আফগান গোয়েন্দাদের গ্রেপ্তার করছে তালেবান

আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বাইরে জোড়া আত্মঘাতী বোমা হামলার একদিন পর দেশটির গোয়েন্দা সংস্থা জাতীয় নিরাপত্তা অধিদপ্তরের (এনডিএস) সাবেক কয়েকজন কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। নাশকতার অভিযোগে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে দাবি করেছে তালেবান। দ্য ট্রিবিউন।

তালেবানের হাতে আটক তিন গোয়েন্দাকর্মী

তালেবানের মুখপাত্র সুহাইল শাহিন শুক্রবার এক টুইটার বার্তায় বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, কাবুল শহরের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির সাথে জড়িত থাকায় এনডিএসের সাবেক কয়েকজন কর্মীকে হাতেনাতে আটক করা হয়েছে। তার টুইটে পোস্ট করা এক ভিডিওতে দেখা যায়, সেখানে তিন ব্যক্তিকে চোখ বেঁধে রাখা হয়েছে। উপস্থিত এক তালেবান কর্মকর্তা আরো দশ-বারো জনের আইডি কার্ড দেখিয়ে তাদের আটকের কথাও জানিয়েছেন।

গত বৃহস্পতিবার কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে ইসলামিক স্টেটের চালানো বোমা হামলায় ১৩ জন মার্কিন সেনাসদস্যসহ শতাধিক মানুষ নিহত হয়। আহত হয় আরো শতাধিক। হামলাকারী ওই গোষ্ঠীটি দাবি করে, তারা মার্কিন সেনাদের সাথে কাজ করা তাদের অনুবাদক ও সহযোগীদের লক্ষ্য করে এ হামলা চালিয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার কাবুল বিমানবন্দরে হামলায় আহত একজনকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিমানবন্দরের বাইরে দুটি বিস্ফোরণ এবং গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। ওই হামলায় বিমানবন্দরের বাইরে একটি বড় নালার মধ্যে কয়েক ডজন লাশ পড়ে থাকতে দেখা যায়।

এ হামলার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন হোয়াইট হাউস থেকে বলেন, এ হামলায় দায়ীদের খুঁজে বের করে শাস্তি দেয়া হবে। তবে এ হামলার কারণে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার কোনোভাবেই বাধাগ্রস্ত হবে না। পাশাপাশি তিনি এ-ও বলেন, এ হামলার সাথে তালেবান জড়িত আছে এমন কোনো প্রমাণ তারা পাননি।

ইউএস সেন্ট্রাল কমান্ডের প্রধান জেনারেল ফ্রাঙ্ক ম্যাকেঞ্জি বলেন, আগামী কয়েকদিনে কাবুল বিমানবন্দরে আবারো এ ধরনের হামলা চালাতে পারে আইএস। এমনকি রকেট বা গাড়ি বোমার মাধ্যমে বিমানবন্দরটিকেও টার্গেট করা হতে পারে। এ জাতীয় সব ধরনের হামলার ব্যাপারে মার্কিন কমান্ডাররা সতর্ক রয়েছে। তিনি এ সময় আরো বলেন, কিছু গোয়েন্দা তথ্য তালেবানের সাথে ভাগাভাগি করা হচ্ছে এবং তিনি বিশ্বাস করেন, তারা (তালেবান) কিছু আক্রমণ ব্যর্থ করে দিচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্র এখন আফগানিস্তান থেকে তাদের সেনাসদস্যদের সরিয়ে নিতে ব্যস্ত সময় পার করছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন নিজেই এর জন্য ৩১ আগস্ট শেষ সময়সীমা নির্ধারণ করেছিলেন। পরে তালেবান ওই সময়সীমার ওপর জোর দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রসহ সব দেশকে জানায়, এ তারিখের মধ্যেই আফগানিস্তান থেকে সব বিদেশি সেনা সরিয়ে নিতে হবে।

অনেক সমালোচনার পরও মার্কিন প্রেসিডেন্ট তার সেনাবাহিনীকে আফগানিস্তান থেকে সরিয়ে নেয়ার ব্যাপারে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র যে কারণে আফগানিস্তানে অভিযান চালিয়েছিল, তা অনেক আগেই পূর্ণ হয়েছে।

২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্র প্রধানত দুটি কারণে হামলা চালিয়েছিল, সেগুলো হচ্ছে- আল-কায়েদাকে নির্মূল করা এবং নাইন-ইলেভেনের পুনরাবৃত্তি রোধ করা। এ দুটি বিষয়েই যুক্তরাষ্ট্রের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রা অনেক আগে পূর্ণ হয়েছে বলে জানান বাইডেন।