নিরাপত্তা পরিষদে আফগানিস্তান বিষয়ে প্রস্তাব পাস

আফগান ও বিদেশি নাগরিকদেরকে নিরাপদে আফগানিস্তান ত্যাগের সুযোগ দিতে তালেবানদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠকে একটি প্রস্তাব পাস হয়েছে। সাধারণ আফগানদের কাছে মানবিক সাহায্য পাঠানোর সুযোগ করে দিতেও তালেবানদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে ওই প্রস্তাবে। জাতিসংঘের এই প্রস্তাবের পক্ষে ১৩টি দেশ ভোট দেয়। চীন ও রাশিয়া ভোট দেয়া থেকে বিরত থাকে।

প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয় ১৩টি দেশ

প্রস্তাবে বলা হয়েছে, যে আফগান বা বিদেশি নাগরিকরা কাবুল ছাড়তে চাইছেন, তাদের নিরাপদে আফগানিস্তান ছাড়ার ব্যবস্থা করতে হবে। নারী, শিশু ও সংখ্যালঘুদের মানবাধিকার রক্ষার ওপরও জোর দেয়া হয়েছে প্রস্তাব। যুক্তরাষ্ট্র বৈঠকে এ প্রস্তাব তুলে ধরে এবং ফ্রান্স ও ব্রিটেন এতে সমর্থন দেয়।

সংকট কবলিত আফগান পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা এবং সেখানে অবস্থিত সমস্ত বিদেশি সেনা পুরোপুরি সরিয়ে আনার ক্ষেত্র সৃষ্টির জন্যই নিরাপত্তা পরিষদে এ প্রস্তাব পাস করা হয়েছে। তবে সমস্যা হচ্ছে আফগানিস্তান ও তালেবানদের ব্যাপারে কী অবস্থান নেয়া হবে তা নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদেই দুই ধরনের দৃষ্টিভঙ্গি কাজ করছে।

এখনো অনেকে আফগানিস্তান ছেড়ে যেতে চায়

যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সের মতো পশ্চিমা দেশগুলো চায় তালেবানদের ওপর প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি করে তাদের প্রতিশ্রুতি পালনে বাধ্য করতে। অন্যদিকে, চীন ও রাশিয়া চায় তালেবানদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যেতে। এক্ষেত্রে যতদিন পর্যন্ত তারা নিজেদের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে অটল থাকবে ততদিন পর্যন্ত তাদের সঙ্গে সহযোগিতা বজায় রাখা হবে।

এক্ষেত্রে চীন ও রাশিয়া আফগানিস্তানের ওপর তালেবানের আধিপত্য প্রতিষ্ঠাকে অনিবার্য বাস্তবতা হিসেবে মেনে নিয়েছে এবং তালেবানের সঙ্গে বৈঠকে ওই দুই দেশ তাদের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের শর্তে তাদের শাসনকে মেনে নেয়ার তথা স্বীকৃতি দেয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে।

যদিও রাশিয়া এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে তালেবানকে স্বীকৃতি দেয়নি। চীন আফগানিস্তানে তাদের অর্থনৈতিক স্বার্থ ও ওই দেশটিতে তাদের উপস্থিতি ধরে রাখার জন্য তালেবানের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রেখেছে। অন্যদিকে তালেবানও আফগানিস্তান পুনর্গঠনের জন্য বেইজিংয়ের ভূমিকার ওপর গুরুত্বারোপ করেছে।

এদিকে চীন ও রাশিয়ার এ ধরনের নীতির বিপরীতে মার্কিন নেতৃত্বে পাশ্চাত্য বিশ্ব তালেবানের ব্যাপারে নেতিবাচক অবস্থান নিয়েছে। বর্তমানে তারা তালেবানদেরকে স্বীকৃতি না দেয়ার বিষয়ে অটল রয়েছে।

তারা আপাতত এ মুহূর্তে তারা আফগানিস্তান থেকে সব বিদেশি নাগরিকদেরকে এবং আফগান কর্মকর্তা ও তাদের পরিবারবর্গকে নিরাপদে বের করে আনার জন্য তালেবানের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করতে বাধ্য হচ্ছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক প্রধান জোসেফ বোরেলও এ কথাই বলেন।

সূত্র: এনডিটিভি